অবাক লাগলেও বিষয়টিকে সত্যি করে দেখিয়েছে ছোট্ট মেয়েটি। মাত্র ৯ মাস বয়সেই তার মুখে ফোটে বুলি। আর তখন থেকেই কোনও কিছু দেখলে বা শুনলে মনে রাখার ক্ষমতা তৈরি হয় মেয়েটির। বিষয়টি লক্ষ্য করেই মা-বাবা সহ পরিবারের সকল সদস্য বিভিন্ন সময়ে শিশুটির সঙ্গে নানা ধরনের কথা বলার অভ্যাস তৈরি করেন। সময় যত এগোয় ততই ধীরে ধীরে মনে রাখার ক্ষমতা বা স্মৃতিশক্তি বাড়তে থাকে শিশুটির। অনর্গল বলতে থাকে বিভিন্ন দেশের পতাকার নাম। ফল বা সবজির নাম। এমনকী মুখস্থ বলতে থাকে ছড়াও। বলতে শুরু করে ‘এ’ থেকে ‘জেড’ পর্যন্তও।বারাসাত শেঠপুকুর এলাকার বাসিন্দা সন্দীপন দে রায় ও শুভেচ্ছা কুণ্ডুর মেয়ের নাম শ্রীনিধি দে রায়। মাত্র ৯ মাস বয়স থেকে কথা বলা শুরু তার। এরপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে কথা বলা। সবচেয়ে বড় কথা, একরত্তি মেয়েটা যা দেখে বা শোনে তাই মনে রাখে হুবহু। শ্রীনিধির এমন বিরল প্রতিভা নজরে আসার পরেই, সেগুলি একের পর এক ভিডিয়ো রেকর্ড করতে শুরু করেন পরিবারের সদস্যরা। এরই মাঝে একদিন ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসের প্ল্যাটফর্মটির বিষয়ে জানতে পারেন শ্রীনিধির মা শুভেচ্ছা। তারপরেই তিনি যোগাযোগ করেন ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। তাদের তরফে শ্রীনিধির ভিডিয়ো চেয়ে পাঠান হয়। আর সেই সমস্ত ভিডিয়ো খতিয়ে দেখার পরেই, শ্রীনিধিকে এই শিরোপার জন্য বেছে নেয় ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস।
এই বিষয়ে শ্রীনিধির মা শুভেচ্ছা কুণ্ডু বলেন, ‘ও (শ্রীনিধি) খুব কম বয়স থেকেই কথা বলতে পারে। ১ বছর বয়সে যখন বিভিন্ন ফ্ল্যাশ কার্ড বা বই দেখাতাম, পরের দিনও ওর মনে থাকত। দেড় বছর বয়সেই ৫০ রকমের ফল, পশুপাখির নাম মনে রাখতে পারত। বিভিন্ন দেশের ফ্ল্যাগও বলতে পারত। যখন যা বলত, ভিডিয়ো করে ফেসবুকে দিতাম। অনেকেই ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে আবেদন করতে বলেন। আমি সেখানে মেল করি। ওরা বিভিন্ন ভিডিয়ো চেয়ে পাঠায়। সেই মতো পাঠিয়েছিলাম। সেখান থেকেই ওরা নির্বাচন করে।’
ইতিমধ্যেই বাড়িতে এসে পৌঁছেছে শ্রীনিধির পুরস্কার। তবে ছোট্ট শিশুটির অবশ্য সেইসব দিকে খেয়াল নেই। যে আপন মনে খেলে বেড়াচ্ছে। আর আধো আধো কথা বলে চলেছে। তবে শ্রীনিধির এই সাফল্যে আনন্দে মেতেছে গোটা পরিবার। সঙ্গে মেয়ে যেন মানুষের মতো মানুষ হয়, সেটাই প্রার্থনা তাদের।