এই সময়, বনগাঁ: প্রথমবার জিতে দু’বছর অপেক্ষা করতে হয়েছিল। ২০২১ সালে গিয়ে মন্ত্রী হয়েছিলেন। এ বার ভোটে জিতেই মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেলেন শান্তনু ঠাকুর। রবিবার সন্ধ্যায় রাইসিনা হিলসে যে ৭২ জন শপথ নিলেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন তিনিও। দিল্লিতে শান্তনু শপথ নেওয়ার পরেই বনগাঁয় দলের কর্মী-সমর্থকেরা রাস্তায় নেমে পড়েন। বাজি ফাটতে থাকে। শুরু হয় লাড্ডু বিলি।আবিরও উড়ল রবি-সন্ধ্যায় বনগাঁয়। যদিও তৃণমূলের বক্তব্য, এর আগে তিন বছর মন্ত্রী থেকেও কিছুই করেননি শান্তনু। তাই এত আনন্দের কিছু নেই। ২০১৯ সালে প্রথম রাজনীতির ময়দানে পা রেখেই বনগাঁর সাংসদ হয়েছিলেন শান্তনু। নাগরিকত্বের ইস্যুতে দু’হাত উপুড় করে বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন মতুয়ারা। কিন্তু আইন পাস হলেও সিএএ কার্যকর আর হচ্ছিল না। তা নিয়ে ক্ষোভ বাড়তে থাকে মতুয়াদের।

শান্তনু নিজেও বেসুরো হয়েছিলেন। বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে একাধিকবার দরবার করেছিলেন তিনি। বিজেপির দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে থাকেন মতুয়ারাও। মতুয়া ভোট ব্যাঙ্কে ফাটল আন্দাজ করেই ২০২১ সালে শান্তনু ঠাকুরকে কেন্দ্রের মন্ত্রী করেন মোদী-শাহ। জাহাজ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান শান্তনু।

এ বার ভোটের মুখে নাগরিকত্বের আইন কার্যকর করার বিজ্ঞপ্তি জারি করে কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বনগাঁ কেন্দ্রের ভোট শেষ হতেই দেখা যায় বেশ কয়েকজন মতুয়া নাগরিকত্বের শংসাপত্র পেয়েছেন। বনগাঁতে সিএএ-র পক্ষেই ভোট দিয়েছেন মতুয়ারা। ৭৩ হাজার ভোটে জয়ী হন শান্তনু ঠাকুর। মতুয়া ভোটের দিকে তাকিয়ে এ বারও যে শান্তনু ঠাকুরকে কেন্দ্রে মন্ত্রী করা হবে, এমন একটা ইঙ্গিত ছিলই।

এ দিন শপথ গ্রহণের পর বনগাঁর ট্যাংরা এলাকায় বিজেপি কর্মীরা আনন্দে মেতে ওঠেন। নিজেদের মধ্যে গেরুয়া আবির মেখে বিজয় উৎসবে সামিল হন তাঁরা। ঠাকুরনগর, গাইঘাটাতেও একই ছবি দেখা যায়। এ দিন সন্ধ্যায় বনগাঁর বাটার মোড়ে রাস্তার ধারে জায়ান্ট স্ক্রিন লাগানো হয়। তাতেই শান্তনু ঠাকুরের শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠান দেখেন বিজেপি কর্মীরা। শপথ নেওয়ার পর উৎসবে মেতে ওঠেন সকলে।

বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া পথচলতি মানুষজনকে ও টোটো-অটো চালকদের লাড্ডু বিলি করেন। মতুয়ারা ডঙ্কা, কাসি বাজিয়ে আনন্দ মেতে ওঠেন। বাগদার হেলেঞ্চাতেও আতস বাজি ফাটিয়ে, মিষ্টি মুখ করিয়ে উৎসবে মেতেছিলেন বিজেপি কর্মীরা।

বিজেপি প্রভাবিত মতুয়া গোঁসাই বিপ্লব গোঁসাই বলেন, ‘শান্তনু ঠাকুর দ্বিতীয় বার কেন্দ্রের মন্ত্রী হওয়ায় আমরা খুব আনন্দ পেয়েছি। ঠাকুর মশাই আমাদের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য অনেক কিছু করেছেন। আগামী দিনে তাঁর হাত ধরে আরও অনেকেই নাগরিকত্বের সার্টিফিকেট পাবেন।’ মতুয়া পাগল সুস্মিত বিশ্বাস বলেন, ‘মতুয়াদের উন্নয়নে অসমাপ্ত কাজ এবার শান্তনু ঠাকুর নিশ্চিত ভাবেই শেষ করবেন।’

মতুয়া গড়ে ব্যবধান কমলেও জয় বিজেপির, শান্তনুকে ফের মন্ত্রী করে পুরস্কার মোদীর

তৃণমূল প্রভাবিত মতুয়া কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, ‘শান্তনু ঠাকুর গত পাঁচ বছর সাংসদ ছিলেন। কেন্দ্রের মন্ত্রী ছিলেন প্রায় তিন বছর। কিন্তু এই সময়কালে মতুয়াদের সদস্য পদের জন্য কার্ড করানো ছাড়া কিছুই করেননি। ফলে কেন্দ্রের মন্ত্রী হয়েও উপকার হয়নি মতুয়াদের।’

জগদীশ গোঁসাই নামে আর একজন বলেন, ‘এর আগেও তিনি কেন্দ্রের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। এবারও হয়েছেন। কিন্তু প্রতিমন্ত্রীর কোনও স্বাধীন দায়িত্ব নেই। তাই শান্তনু ঠাকুর কেন্দ্রের মন্ত্রী হলেও মতুয়াদের লাভ কিছু হবে না।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version