সকলেরই চোখেমুখে আতঙ্ক। প্রাণ হাতে নিয়ে বাড়ি ফিরলেন তাঁরা। স্টেশনে স্বজনদের দেখতে পেয়ে কিছুটা স্বস্তির ছাপ ফুটে ওঠে তাঁদের চেহারায়। তবে অনেকেই বললেন, ‘এই শেষ, আর ট্রেনে উঠব না।’ মৃত্যু ভয় তাড়া করে বেরিয়েছে সকলকেই।তখন গভীর রাত। ঘড়ির কাঁটায় ১ টা ২৫ মিনিট আর। সেই সময় বর্ধমান স্টেশনের পাঁচ নম্বর প্লাটফর্মে ঢোকে অভিশপ্ত ডাউন শিয়ালদা কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। সোমবার দুপুরেই ক্ষতিগ্রস্ত কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেনটি রওনা দেয় শিয়ালদা উদ্দেশে। বর্ধমান এসে পৌঁছয় রাতে।

পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্মে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস থামতেই দেখা যায়, চোখে আতঙ্ক ও ক্লান্ত শরীর নিয়ে নামছেন একের পর এক যাত্রীরা। উৎকণ্ঠায় ছিলেন পরিবার পরিজন। জীবনে প্রথম এরকম ভয়ঙ্কর ঘটনার সাক্ষী হয়ে ফিরছেন তাঁরা। আর এই আতঙ্ক নিয়েই প্রশাসনের সহযোগিতায় যাচ্ছেন বাড়ি। নিজের বৌমা, নাতি সহ পরিবারকে নিয়ে কামাখ্যা মন্দিরে পুজো দিতে গিয়েছিলেন মৌসুমী ঘোষ। তিনি বলেন, ‘এই আমার শেষ। আর ট্রেনে উঠবো না। কী ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা। গোটা ট্রেন কেঁপে উঠল। এখনও মাথাটা ঘুরছে। বাড়ি পর্যন্ত না পৌঁছতে পারলে ভয়টা কাটছে না।’

Kanchanjungha Train Updates: কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে ধাক্কা মালগাড়ির, গ্রাউন্ড জিরোতে এইসময়

আরেক যাত্রী বলেন, ‘ আমি S4 কোচে ছিলাম। এটা তো আলাদা হয়ে গিয়েছিল। পরে জোড়া হল। ঝাঁকুনি দিতেই বুঝেছিলাম কিছু একটা হয়েছে। সামনে গিয়ে দেখি ডেডবডি পরে রয়েছে। ওটা দেখেই ভয় লেগে যায়। আবার নিজের জায়গা ফেরত চলে আসি। এখন স্টেশনে নামতে পেরে অনেকটাই স্বস্তি।’

ইদে বাড়ি ফেরা হল না, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল গৃহবধূর
এমনই ভয়ংকর অভিজ্ঞতা নিয়ে বাড়ি ফিরলেন অনেকেই। ট্রেন ঢোকার অনেক আগে থেকেই যাত্রীদের আত্মীয় পরিজন স্টেশনে অপেক্ষা করছিলেন। অপেক্ষায় ছিলেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরাও। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের যাত্রীদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্য ১৩ টি গাড়ির ব্যবস্থাও করা হয়। জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে রানীগঞ্জ, আসানসোল দুর্গাপুর, আরামবাগ কাটোয়া, হুগলি, গোঘাট পৌঁছে দেওয়া হয় মোট ৩৪ জন যাত্রীকে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version