‘২১ দিনে পয়সা ডবল’। বিখ্যাত ফির হেরা ফেরি সিনেমার ডায়লগ মনে আছে সকলেরই। সেরকমই টাকা ডবল করে দেওয়ার একটি চক্র শুরু হয়েছিল বর্ধমানে। কিন্তু, টাকা ডবল হয় কী করে? হাতসাফাইয়ে কার্যত ওস্তাদ ছিল ওই চক্র। জাল টাকা তৈরি করার কাজ শুরু করেছিল ওই চক্র। অবশেষে বর্ধমান পুলিশের জালে চক্রের দুই পাণ্ডা।শনিবার বর্ধমান থানার পুলিশের জালে ধরা পড়ে প্রতারণা চক্রের দুই পান্ডা। ধৃতদের মধ্যে একজনের নাম গোপাল সিং, তার বাড়ি মাধবডিহি থানা এলাকায়। অন্য জনের নাম সীতারাম পোরেল,তার বাড়ি রায়না থানা এলাকায়। শনিবার গোপন সূত্রে খবরের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বর্ধমান শহরের অনিতা সিনেমা গলির ভিতরে একটি হোটেলের তিনতলার একটি ঘর থেকে প্রতারণা চক্রের দুই পান্ডাকে গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হোটেলের ঘরে প্রতারকদের কাছ থেকে বেশ কয়েকটি আয়োডিন ও হাইপো কেমিক্যালের শিশি, পাঁচশো টাকার নোটের সাইজের কালো কাগজের বান্ডিল, প্রচুর সাদা কাগজ, ইনজেকশনের সিরিঞ্জ সহ আরো বেশি কিছু সামগ্রী পাওয়া গেছে। উল্লেখ্য। ধৃত গোপাল সিং ২০২২ সালে শহরের খাগড়াগড়, মাঠপাড়া এলাকা থেকে টাকা নকল করার অপরাধে আগেও গ্রেফতার হয়েছিল। সেইসময় তার কাছ থেকে বিদেশি মুদ্রা টাকা নকল করার কিছু সামগ্রীও বাজেয়াপ্ত করেছিল পুলিশ।

তবে কী ভাবে চলছিল প্রতারণা? পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রথমে প্রতারকরা খদ্দেরদের বোঝাতো তারা টাকা দিলে দ্বিগুণ করে ফেরত দেবে। বিশ্বাস অর্জনের জন্য একটি বিশেষ কৌশল ফেঁদে (হাত সাফাই) ওই খদ্দেরের সামনেই দু ধরনের তরল কেমিক্যাল ( আয়োডিন ও হাইপো ) ব্যবহার করে একটি পাঁচশো টাকার নোটকে দুটো করে দেখিয়ে দিতো। এর জন্য প্রতারকরা পাঁচশ টাকার নোটের সাইজের প্রচুর সাদা কাগজ কেটে রেখেছিল।

ব্যাঙ্কে নেই কোনও অ্যাকাউন্ট, বাড়িতে এল এটিএম কার্ড!

সেই কাগজের টুকরোটিকে একটি আসল ৫০০ টাকার নোটের সঙ্গে একসঙ্গে কেমিক্যালের তরলে (আয়োডিন ) ডোবানোর পর বড় সাদা কাগজে মুড়িয়ে সুতো দিয়ে বেঁধে দিতো। পরে একটি কাগজে আগুন জ্বালিয়ে সেই মোড়ানো কাগজের টুকরোকে সেঁকে নিয়ে হাইপো কেমিক্যালে ধুয়ে নিত। এই প্রক্রিয়া চলার সময় হাতসাফাই করে সাদা কাগজের বদলে আসল নোট ঢুকিয়ে দিয়ে খদ্দেরকে বোকা বানিয়ে দুটো পাঁচশো টাকা নোট ফেরত দেওয়া হত। মোটা অঙ্কের টাকা প্রতারণা করার উদ্দ্যেশে প্রথমদিকে নিজেদের কাছ থেকে টাকা দিয়ে দ্বিগুণ করত প্রতারকরা।

পাওয়ার ব্যাঙ্ক দু’ ভাগ হয়ে এ কী বেরিয়ে এল? কেনার আগেই থমকে গেলেন ব্যক্তি
খদ্দেরদের বিশ্বাস অর্জন করত, তারপরেই প্রতারকদের ফাঁদে পড়ে একসঙ্গে অনেক টাকা দিলে প্রতারকরা টাকা হাতিয়ে সেখান থেকে চম্পট দিতে। একাধিক অভিযোগ পেয়ে তাদেরকে ধরতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। ধৃতদের রবিবার বর্ধমান আদালতে পেশ করা হবে। এই চক্রের সঙ্গে আর কারা কারা জড়িত আছে, তার খোঁজে তদন্ত শুরু করেছে বর্ধমান থানার পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘এদের আমরা অনেকদিন ধরেই টার্গেট করে রেখেছিলাম। এরপর গোপন খবরের ভিত্তিতেই এদের আজ গ্রেফতার করেছি। রবিবার আদালতে তোলা হবে। তবে এদের সঙ্গে আর কারা কারা এই চক্রে জড়িত আছে। তদন্তের স্বার্থে এদের পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হবে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version