দৈনন্দিন জীবনে বাঙালির পাতে যে মাছগুলি দেখা যায়, তার মধ্যে অন্যতম তেলাপিয়া মাছ। সম্প্রতি, খবরে উঠে আসে এই মাছ খেলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে, এমনকি ক্যানসারের সম্ভাবনা থাকে। তবে, এরকম আদৌ কোনও বিষয় আছে কি? কারা এই ধরনের খবর রটিয়েছে, সে ব্যাপারে খোঁজ নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। তেলাপিয়া মাছ খেলে ক্যানসারের কোনও সম্ভাবনা নেই বলেই মঙ্গলবার একটি বৈঠক থেকে জানিয়ে দেন তিনি।কৃষিপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিক, মন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই উঠে আসে বাঙালির অতি প্রিয় এই মাছের প্রসঙ্গ। সভায় মৎস্য দফতরের আধিকারিকদের উদ্দেশে মমতা প্রশ্ন করেন, ‘আমেরিকান কই কি ক্ষতি কিছু হচ্ছে? আমার কাছে কিছু খবর আছে। ইস ইট ফ্যাক্ট? আমেরিকান কই, যেটাকে বলে তেলাপিয়া। ওটা মানুষ বেশি খায়। তেলাপিয়ার শরীরের দিক থেকে কোনও নেগেটিভ ইমপ্যাক্ট আছে কি?’

সভায় উপস্থিত আধিকারিক জানান, এরকম দাবির কোনও ভিত্তি নেই। মাছটিকে নিয়ে পরীক্ষা করে সেরকম কোনও সম্ভাবনা উঠে আসেনি। এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এটা কেউ রটাচ্ছে।’ তাঁর কথায় সায় দিয়ে আধিকারিকও বলেন, ‘এটা কেউ রটাচ্ছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে।’ কারা এরকম রটাচ্ছে, সে ব্যাপারে কেন খোঁজ নেওয়া হয়নি, একথা জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী।

সভায় এটাও জানানো হয়, তেলাপিয়া মাছ যেখানে চাষ করা হয়, সেখানে অন্য মাছ চাষ করতে অসুবিধা হয়। বিষয়টি শুনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তেলাপিয়া মাছটা বড় হয়, মানুষের খেয়ে পেট ভরে। তেলাপিয়া মাছে যদি ক্ষতিকর প্রভাব না হয়, তাহলে কারা রটাল যে তেলাপিয়া মাছ খেলে ক্যানসার হয়? এমনকি আমিও তো তাই জানি। তাহলে আমিও ভুল জানি। যারা রটিয়েছে চালাকি করে, এর মধ্যে নিশ্চয় একটা দুষ্ট চক্র আছে।’ এরপরেই তাঁর সংযোজন, ‘তাহলে এখন আমরা মিটিংয়ে বলে দিচ্ছি, তেলাপিয়া মাছ খেলে এসব কিছু হবে না। কোনও নেগেটিভ কিছু নেই। তোমরা এটা অলরেডি টেস্ট করেছ।’

Ilish Mach : বর্ষার শুরুতেই ডায়মন্ড হারবারে রূপসী ইলিশ

বিষয়টি নিয়ে সেন্ট্রাল ইনল্যান্ড ফিশারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (ICAR-CIFRI) ডিরেক্টর ডঃ বি কে দাস বলেন, ‘ তেলাপিয়া মাছ নিয়ে আশঙ্কার কিছু নেই। কিছু আর্সেনিক প্রভাবিত এলাকায় এই মাছ চাষ করা হলে বা মাছটি সতেজ রাখার জন্য পরিবহণের সময় ফরম্যালিন ব্যবহার করলে সেখানে কিছু ক্ষতি হতে পারে। তবে, এখন যে সমস্ত ফিশারিজ-এ এই মাছ চাষ হচ্ছে, সেখানে মাছের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। এরকম ক্ষতির কোনও বিষয় ওই মাছ থেকে নেই।’

‘১০ দিনের মধ্যে দাম কমাতে হবে’, বাজারে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ মমতার
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ‘রাজ্যে জল ধরো, জল ভরো’ প্রকল্প চালু করা হয়েছিল। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় কয়েক লাখ পুকুর বা জলাশয় তৈরি করা হয়েছে। মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য এগুলিকে কাজে লাগানোর ব্যাপারে নির্দেশ দেন তিনি। ডিম উৎপাদন বাড়ার কারণে রাজ্যে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠেছে, সেই প্রক্রিয়া ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই সম্পন্ন হবে। মাছের ক্ষেত্রেও উৎপাদন বৃদ্ধির ব্যাপারে জোর দেন মুখ্যমন্ত্রী।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version