এই সময়: আলু ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট উঠল। বুধবার বিকালে হুগলির হরিপালে রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্নার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে বৈঠকের পরই ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়৷ আজ বৃহস্পতিবার থেকে রাজ্যের খোলা বাজারে আলুর সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে মন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন। কমবে দামও।মন্ত্রী জানিয়েছেন, খোলা বাজারে আলুর দাম প্রতি কিলো ৩০ টাকার নীচে হবে। যদিও আলু ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃত্ব সেই আশ্বাস দিতে পারেননি। তাঁদের বক্তব্য, খোলা বাজারে ৩০ টাকার কমে আলু বিক্রি করা সম্ভব হবে না। তবে হিমঘর থেকে ২৬ টাকা কিলো দরে আলু বিক্রির যে প্রস্তাব রাজ্য সরকার দিয়েছে তা কার্যকর হবে।

কিন্তু কেন ৩০ টাকার কমে আলু মিলবে না?
প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘হিমঘরের সামনে থেকে ২৬ টাকা কিলো দরে পাইকারি বিক্রেতাদের আলু বিক্রি করা হবে। তাঁরা খুচরো বিক্রেতাদের কত দামে বিক্রি করবেন আর সাধারণ মানুষ কত দামে আলু বাজার থেকে কিনবেন তা বলা যায় না। তবে যত কম দামেই খোলা বাজারে বিক্রি হোক না কেন সেই দাম ৩০ টাকার নীচে যাবে না।’

তবে ধর্মঘট প্রত্যাহার হওয়ায় আলুর ঊর্ধ্বমুখী দাম নিয়ে মধ্যবিত্তের যে নাভিশ্বাস উঠেছিল, তার থেকে এ বার রেহাই মিলবে। মঙ্গলবারই আলুর মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া বার্তা দেন। সঙ্কট কাটাতে কৃষি বিপণন মন্ত্রীকে দায়িত্ব দেন তিনি। তার পরই এদিনের বৈঠক। কৃষি বিপণন মন্ত্রী বৈঠকের পর বলেন, ‘আলোচনা সদর্থক। আমাদের দিক থেকে যা যা সাহায্য করা যায়, সেটা বলেছি। সরকার পক্ষ সাড়া দিয়েছে। তাই ব্যবসায়ীরাও কর্মবিরতি তুলে নিচ্ছেন।’

তিনি জানান, এ বার হিমঘর থেকে ২৬ টাকা কেজি দরে আলু পাঠানো হবে বিভিন্ন বাজারে। বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ৪৯৩টি সুফল বাংলা কাউন্টার খোলা রয়েছে। মন্ত্রীর সংযোজন, ‘আলু ব্যবসায়ীরা যদি কথা রাখেন, তা হলে আমরা ৩০ টাকার নীচে আলু খাওয়াতে পারব রাজ্যবাসীকে।’

আলু ব্যবসায়ীদের তরফে লালু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘রাজ্য থেকে যে আলু বাইরে যায়, সেই রপ্তানির বিষয়টিও যেন সরকার খেয়াল রাখে।’
এদিকে, বুধবার পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে আলুর বাজারদর ও মজুত আলুর পরিমাণ যাচাই করলেন কাটোয়ার মহকুমাশাসক-সহ প্রশাসনের কর্তারা। হিমঘর থেকে শুরু করে বিভিন্ন বড় আড়তগুলিতে এ দিন যান মহকুমাশাসক অর্চনা পি ওয়াংখেড়ে।

হিমঘরের আলু বের করে বেচবে সরকার, সঙ্কটে কড়া ব্যবস্থা মুখ্যমন্ত্রীর

তিনি বলেন, ‘আমরা হিমঘর থেকে শুরু করে ছোট-বড় বিভিন্ন আলুর আড়তগুলিতে ঘুরেছি। আলুর মজুত কাটোয়ায় কম নেই। দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য একাধিক পদক্ষেপ করা হচ্ছে। আমরা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির মাধ্যমে বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় এবং সরকারি সুফল বাংলা স্টল থেকে ন্যায্য মূল্যে আলু বিক্রি করব।’

এ দিন আলু বিক্রি নিয়ে পুরুলিয়ার মানবাজারেও বিশেষ অভিযান চালান সরকারি আধিকারিকরা। বাঁকুড়া শহরে সুফল বাংলা স্টলে আলুর ক্রাইসিস দেখা দিয়েছে। বুধবার সকালে সেখানে লাইন দিয়েও অনেককে ফিরতে হয় খালি হাতে। এ দিন বাঁকুড়ার কোতুলপুরে স্বনির্ভর গোষ্ঠী ২৭ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করেছে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version