মেডিক্যাল কনফারেন্সে যোগ দিতে আপাতত ওই ফুসফুস রোগ বিশেষজ্ঞ ইংল্যান্ডে রয়েছেন। সেখানেই বৃহস্পতিবার সকালে খারাপ খবরটা পেয়েছেন। ম্যাঞ্চেস্টারে বসে স্মৃতিচারণায় তিনি ‘এই সময়’কে বলছিলেন, ‘বুদ্ধবাবু ছিলেন একজন বামপন্থী মানুষ, যুক্তিবাদী মনের ছোঁয়া ছিল তাঁর। চিন্তাভাবনাও একেবারে স্বচ্ছ। সময় নিয়ে ওঁকে ঠিকঠাক বুঝিয়ে বলতে পারলে, উনি গোঁ ধরে থাকতেন না, মেনে নিতেন। যখন ওঁকে প্রথম ইনহেলার দিয়েছিলাম, তখনই বুঝিয়ে বলি, কেন চিকিৎসার নিট ফল শূন্য হবে যদি সিগারেট আর ইনহেলার, দুটোই উনি চালিয়ে যান। সেটা মেনে নিয়েছিলেন।’
আলোকগোপালের মতোই বুদ্ধে মুগ্ধ আর এক ফুসফুস রোগ বিশেষজ্ঞ পার্থসারথি ভট্টাচার্য। বুদ্ধবাবু যখন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন, সে সময়ে তাঁর চিকিৎসা করতেন পার্থসারথি।
বিশিষ্ট সেই চিকিৎসকের কথায়, ‘এমন ভাবমূর্তির রাজনীতিক বিরল। ওঁর যে ব্যাপারটা আমার সবচেয়ে ভালো লাগতো, সেটা হলো, ওঁর লড়াকু মানসিকতা আর জেদ। সে জন্যই ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিজ়িজ় বা সিওপিডি-র মতো বেয়াড়া অসুখের সঙ্গে দু’ দশক ধরে লড়াইটা চালিয়ে যেতে পেরেছেন তিনি।’
কিন্তু শেষ পর্যন্ত সংক্রমণের কবলে পড়ে ফুসফুসের সঙ্গে হৃদযন্ত্রও আর সঙ্গত করতে পারলো না বলে জানাচ্ছেন ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ সৌতিক পাণ্ডা। দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা বুদ্ধবাবুর চিকিৎসা করতেন গত বছর দুয়েক।
সেই দলের অন্যতম সৌতিক বলছেন, ‘বর্ষার এই স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায় সিওপিডি-টা একটু বেড়েছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। তার সঙ্গেই ফুসফুসে সম্ভবত দানা বেঁধেছিল ভাইরাল অথবা ব্যাকটেরিয়াল সেকেন্ডারি ইনফেকশন। জ্বর থাকলেও তিনি আর হাসপাতালে আসতে চাননি। ভোররাত থেকে অবস্থার চূড়ান্ত অবনতি ঘটে। অক্সিজেন স্যাচুরেশন খুব কমে যায়। আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি তাঁর শরীর।’