পিয়ালি মিত্র: সিট গঠন করেই ব্রেক থ্রু। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আরজিকর কাণ্ডের কিনারা। চিকিত্সক-পড়ুয়াকে খুনের ঘটনায় গ্রেফতার এক। ধৃতের নাম সঞ্জয় রায়। পুলিস সূত্রে আরও জানা গিয়েছে যে, ধৃত সঞ্জয় রায় হাসপাতালের কোনও কর্মী নয়। কিন্তু নিয়মিত বিভিন্ন কাজের জন্য হাসপাতালের ভিতরে অবাধ যাতায়াত ছিল ধৃতের। চেস্ট ডিপার্টমেন্টের থাকা একটি সিসিটিভির সূত্রে গ্রেফতার অভিযুক্ত। কিন্তু কী কারণে কেন সে ওই মহিলা চিকিত্সক-পড়ুয়াকে খুন করল, সেই কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। খুনের মোটিভ জানতে ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিস।
প্রসঙ্গত, গতকাল দেহ উদ্ধারের পরই পুলিসের তরফে হাসপাতালে নাইটি ডিউটিতে থাকা হাসপাতালের সমস্ত কর্মী ও নার্সদের তালিকা সংগ্রহের পাশাপাশি চেস্ট ডিপার্টমেন্টে আর কাদের কাদের আসা-যাওয়া ছিল, সেই তথ্য সংগ্রহ করা হয়। তখনই সন্দেহভাজন হিসেবে উঠে আসে সঞ্জয় রায়ের নাম। দেখা যায়, হাসপাতালের কর্মী না হলেও, তার নিয়মিত হাসপাতালে আসা-যাওয়া রয়েছে। সেই সূত্র ধরেই তাকে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জেরাতেই এই ঘটনার সঙ্গে তার জড়িত থাকার প্রমাণ মেলে। তারপরই মহিলা চিকিত্সক-পড়ুয়াকে খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করে পুলিস। অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার বলে খবর।
ইতিমধ্যেই আরজিকর কাণ্ডে জোরালো হয়েছে ধর্ষণ করে খুনের তত্ত্ব। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে যৌন নির্যাতনের প্রমাণ মিলেছে। তদন্তে উঠে এসেছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। ধস্তাধস্তির প্রমাণ মিলেছে। গোটা শরীরে আঘাত। সূত্রের খবর, ডাক্তারি পড়ুয়ার দুই চোখ দিয়ে রক্তক্ষরণ হয়। মুখে রক্তের দাগ মিলেছে। আঘাতের চিহ্ন মিলেছে মুখে। শরীরের একাধিক জায়গায় নখের আঁচড়ের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। যৌনাঙ্গ থেকে রক্তক্ষরণ হয়। যৌনাঙ্গের কাছে মিলেছে চুলের ক্লিপ। পেটে মিলেছে আঘাতের চিহ্ন। ডান হাতে এবং আঙুলেও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। গলাতে মিলেছে আঘাতের চিহ্ন। গলার হাড় ভাঙা অবস্থায় পাওয়া যায় ময়নাতদন্তে। ঠোঁটেও আঘাতের চিহ্ন। ম্যাটরেসে মিলেছে শুকনো রক্তের দাগ। সেমিনার হল থেকে অর্ধনগ্ন অবস্থায় দেহ উদ্ধার হয়। দেহের পাশ থেকে পাওয়া যায় পোশাক, ল্যাপটপ ও ব্যাগ। দেহের পাশে মেলে ভাঙা চশমাও।
মহিলা চিকিত্সক-পড়ুয়ার দেহ উদ্ধারের পর থেকেই আরজিকর কাণ্ডে তোলপাড় সব মহল। ডাক্তার পড়ুয়া খুনের প্রতিবাদে কর্মবিরতিতে চিকিত্সরা। ফলে ভোগান্তি চরমে। জরুরি পরিষেবা ছাড়া সমস্ত বিভাগে কাজে নারাজ জুনিয়র চিকিত্সকরা।ঘটনার কথা জানতে পেরেই হস্তক্ষেপ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। ফোন করে কথা বলেন মৃতার বাবা-মায়ের সঙ্গে। দোষীদের দ্রুত ধরা হবে বলে আশ্বাস দেন। কথা বলেন সিপির সঙ্গেও। এরপর গতকালই আরজিকর কাণ্ডের তদন্তে ভারপ্রাপ্ত জয়েন্ট সিপি ক্রাইম মুরলীধর শর্মার নেতৃত্বে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম বা সিট গঠন করে কলকাতা পুলিস। খুনের মামলা রুজু করে তদন্তে নামে পুলিস। ওদিকে ১১ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে আরজিকর হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষও। স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে মহিলা কমিশনও। ১৪ দিনের মধ্যে রিপোর্ট তলব করেছে কমিশন।
আরও পড়ুন, R G Kar Incident: ‘প্রায় নগ্ন, চশমা ভাঙা, মেয়ে খুন হয়েছে,’ ফুঁসছেন মা! বাবাকে ফোন মুখ্যমন্ত্রীর…
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)