আরজি কর হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতি মামলায় ইতিমধ্যেই সিবিআই-এর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন সেখানকার প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। আর্থিক দুর্নীতি সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্তে সিবিআই-এর সঙ্গে কোমর বেঁধে ময়দানে নেমেছে ইডিও। শুক্রবারও সন্দীপের বাড়িতে তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খাওয়ার পরে এবার আরও বিপাকে সন্দীপ। কেন তাঁর ডাক্তারির রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হবে না? এই প্রশ্ন তুলে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল শো-কজ করেছে তাঁকে।একই সঙ্গে চিকিৎসক অভীক দে এবং বিরূপাক্ষ বিশ্বাসকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল। রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার মানস চক্রবর্তী বলেন, ‘যতদিন না পর্যন্ত বিরূপাক্ষ বিশ্বাস এবং অভীক দে ক্লিন চিট পাবেন ততদিন পর্যন্ত কাউন্সিলের সমস্ত কর্মপ্রক্রিয়া থেকে তাঁদের বিরত থাকতে হবে।’ পাশাপাশি কাউন্সিলের ‘এথিক্স কমিটি’ থেকে নাম বাদ দেওয়া হয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র চিকিৎসক মুস্তাফিজুর রহমান মল্লিককের।

সন্দীপ ঘোষ প্রসঙ্গে মানস চক্রবর্তী জানান, কোনও চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন স্বতঃপ্রণোদিতভাবে কাউন্সিল দুটি ক্ষেত্রে বাতিল করতে পারে। প্রথমত, কেউ যদি অপরাধমূলক ঘটনায় দোষী প্রমাণিত হয়। দ্বিতীয়ত, ভয়ঙ্কর অপরাধমূলক কোনও ঘটনার সঙ্গে নাম জড়ানোর কারণে যদি কোনও চিকিৎসক মারাত্মক বদনাম হন।

কিন্তু এই দুটি ক্ষেত্রেই রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার আগে শো-কজ করা বাধ্যতামূলক। সন্দীপ ঘোষকে শো-কজ করার পর ৭২ ঘণ্টা অপেক্ষা করা হবে। তিনি যদি উত্তর না দেন বা সন্তোষজনক জবাব না দেন সেক্ষেত্রে তাঁর রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হবে ততদিনের জন্য যতদিন না পর্যন্ত আরজি কর দুর্নীতি মামলায় সন্দীপ ক্লিনচিট পান।

আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি অনেক আগেই সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন। ওই হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা সামনে আসার পর নতুন করে এ নিয়ে সরব হয়েছিলেন তিনি। চিকিৎসা বর্জ্য থেকে শুরু করে টেন্ডার দুর্নীতি, সন্দীপের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তোলেন তিনি। আরজি করে দুর্নীতির ঘটনায় ইডিকে দিয়ে তদন্ত চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন আখতার আলি। আরজি কর হাসপাতালের একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সিবিআই-কে তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। প্রাথমিক তদন্তের পরে সিবিআই গ্রেপ্তার করে সন্দীপ ঘোষকে।

অন্যদিকে, আরজি কর কাণ্ডের পর থেকেই বিতর্কে জড়িয়েছেন চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাস ও অভীক দে। বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে প্রভাব খাটানো নিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। তাঁদের সাসপেন্ডও করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর। অভীকের পিজিটি-তে সুযোগ পাওয়া নিয়েও উঠেছিল একাধিক প্রশ্ন। শুধু তাই নয়, তাঁরা দু’জনেই সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ, এমনও অভিযোগ ওঠে। এই আবহেই এ বার সন্দীপকে শোক-কজ করল রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল।

Sandip Ghosh RG Kar: আর্থিক দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার, কোন কোন ধারায় অভিযুক্ত সন্দীপ?

গত ৯ অগস্ট আরজি করে এক তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। ধর্ষণ করে খুন করা হয় তাঁকে, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে এমনটাই। এই ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক কঠোর শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছে গোটা রাজ্য। এক পক্ষ কালের বেশি সময় ধরে তার প্রতিবাদে রাজ্যে বিভিন্ন জায়গায় চলছে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version