শ্রীকান্ত ঠাকুর: আগে থেকেই অভিযোগ ছিল সঠিক সময়ে স্কুলে আসেন না শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তাই সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সরাসরি স্কুল খোলার সময়ে সেখানে পৌঁছে গেলেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান। পরিদর্শনে গিয়ে দেখলেন তাঁর কাছে যা অভিযোগ এসেছিল তা একেবারেই সত্যি। পাঁচজন শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্যে মাত্র একজন সেখানে উপস্থিত ছিলেন। বাধ্য হয়ে নিজেই ক্লাস নিতে শুরু করলেন দক্ষিণ দিনাজপুর প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান সন্তোষ হাঁসদা। 

আরও পড়ুন, Kajal Meets Anubrata: অবশেষে মুখোমুখি, ‘দাদা’ অনুব্রতর কথা তুলতেই কাজলের মুখে…

ঘটনার দিন নির্দিষ্ট সময়ের অনেক পরে স্কুলে ঢোকেন বাকি শিক্ষক-শিক্ষিকারা। শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানকে স্কুলে ক্লাস নিতে দেখে চক্ষু চরক গাছ তাঁদের। চেয়ারম্যানের প্রশ্নের মুখে পড়ে কেউ বললেন মিড ডে মিলের বাজার করতে গিয়েছিলাম, কেউ আবার বললেন অফিসের কাজ করতে গিয়ে দেরি হয়ে গিয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন চক্রের কমলপুর অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। 

১৯৭৯ সালের তৈরি এই স্কুলে শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। তাদের পঠন-পাঠনের জন্য পাঁচজন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন। স্কুলে মিড-ডে মিলের ব্যবস্থা আছে, স্কুলের নিজস্ব ভবন ও রয়েছে। কিন্তু শিক্ষাদান যাঁরা করবেন তারাই আসেন না সঠিক সময়ে, যার ফলে ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুলে এসেও এদিক ওদিক ঘুরে বেড়ায়। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান সন্তোষ হাঁসদা শনিবার সকালে বিশেষ পরিদর্শনে বের হন। ফুলবাড়ী পোস্ট অফিস এলাকার কমলপুর গ্রামের কমলপুর অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয় হঠাৎ করে পৌঁছে যান পরিদর্শনে। তিনি যখন স্কুলে যান তখন বাজে বেলা এগারোটা পাঁচ, অর্থাৎ নিয়ম অনুযায়ী তার আগেই স্কুলের প্রার্থনা করে দৈনন্দিন ক্লাস চালু হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু তখনও পর্যন্ত একমাত্র শিক্ষিকা ছাড়া আর কেউ এসে পৌঁছাননি। বাধ্য হয়ে চেয়ারম্যান নিজেই প্রার্থনার জন্য লাইন করান ছাত্রছাত্রীদের এবং নিজেই প্রার্থনার শেষে তৃতীয় শ্রেণীর ক্লাস নিতে শুরু করেন। উপস্থিত শিক্ষিকা আরেকটি ক্লাস নিতে শুরু করেন। ১১:১৮ নাগাদ একজন শিক্ষক স্কুলে আসেন তিনি বলেন মিড ডে মিলের বাজার করতে গিয়ে দেরি হয়েছে। ১১:২৮ এ আসেন দ্বিতীয় শিক্ষক তিনিও একই কথা বলেন। চতুর্থ ও পঞ্চম শিক্ষক এসে পৌঁছান বেলা বারোটার পর। এরপরই প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান বালুরঘাটে ফিরে আসেন এবং স্কুল পরিদর্শকের মাধ্যমে এই স্কুলে নির্দেশ পাঠান আগামী সোমবার সমস্ত কাগজপত্র ও খাতাপত্র নিয়ে সংসদ অফিসে দেখা করার জন্য। 

শিক্ষার সংসদের চেয়ারম্যান সন্তোষ হাঁসদা বলেন, ‘ওই স্কুলের বিরুদ্ধে মাঝামাঝেই অভিযোগ পেতাম তাই আজ পরিদর্শনে গিয়ে দেখি নির্দিষ্ট সময়ের পরেও শিক্ষক-শিক্ষিকারা এসে পৌঁছাননি। নিয়ম অনুযায়ী, বেলা এগারোটা দশ বেজে গেলেই সেই দিন আর কোনও শিক্ষক খাতায় সই করতে পারবেন না এবং তাঁর ক্যাজুয়াল লিভ গণনা হবে দিনটি। বাধ্য হয়ে আমাকে ক্লাস নিতে হয়েছে কারণ ছাত্র-ছাত্রীরা উপস্থিত হলেও শিক্ষকরা কেউ ছিলেন না। আমি সমস্ত স্কুল শিক্ষকদের নির্দেশ দিয়েছি আগামী সোমবার বিকেল চারটের পর সমস্ত কাগজপত্র ও খাতাপত্র নিয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের অফিসে এসে দেখা করতে। পুজোর পর শিক্ষক-শিক্ষিকাদের স্কুলে সঠিক সময় আসার বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হবে এবং আরো কড়া হাতে এই বিষয়টি দেখা হবে। নির্দিষ্ট সময়ের পর আর কোনও শিক্ষক-শিক্ষিকাকে স্কুলে আসার অনুমতি দেওয়া হবে না। সংসদ আইন অনুযায়ী যথাযোগ্য ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

আরও পড়ুন,   Bengal Weather Update: এখনও বর্ষাবিদায়ের অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বাংলায়! এখনও কি বৃষ্টিই চলবে, না অসহ্য গরম?

 

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version