পার্থ চৌধুরী: ছেলেকে কাজ দেওয়ার নাম করে তামিলনাড়ুতে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর এবং টাকা আদায়ের হুমকি। থানা অভিযোগ না নেওয়ায় শেষ পর্যন্ত পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিস সুপারের দ্বারস্থ হলেন অসহায় মা। শারমিনা মোল্লা যে অভিযোগ করেছেন তা এককথায় চাঞ্চল্যকর। তাঁর বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের মেমারি থানার অন্তর্ভুক্ত মির্জাপুর গ্রামে।
তাঁর ছেলে সোহেল মোল্লা ওরফে রাজ রাজ্যের বাইরে সোনার কাজ করে। গত চার বছর ধরে সে তামিলনাড়ুতে মালিকের কাছে কাজ করত। গত ডিসেম্বরের শেষে সে বাড়ি আসে। ঈদ শেষ হলে তার কাজে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার মালিক সাদ্দাম শেখ তাকে দ্রুত তামিলনাড়ু যেতে বলে। মালিকের বাড়িও মির্জাপুর গ্রামে। তাকে বলা হয়, জরুরি কাজ এসে যাওয়ায় যেতে হবে। সেই কথামতো সোহেল তামিলনাড়ু যায়।মালিকও সেখানে পৌঁছয় শুক্রবার।
পরিবারের অভিযোগ, এরপর মালিকের লোকজনেরা সোহলকে তামিলনাড়ুর আর. এস. পুরম থানার অধীনে অজ্ঞাত জায়গায় তুলে নিয়ে যায়। ছেলের ফোনে তাঁরা জানতে পারেন, তাঁকে ধারাবাহিকভাবে প্রচন্ড মারধর করা হচ্ছে। একইসঙ্গে ২০ লক্ষ টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। তাদের দাবি, ওই টাকা সোহেল চুরি করেছে। তারা জানিয়েছে, যতক্ষণ টাকা না পাওয়া যাবে, ততক্ষণ মারধর চলবে। টাকা না পেলে তাকে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়েছে।
অসহায় পরিবার এরপর সাতগেছিয়া ফাঁড়ি এবং মেমারি থানায় অভিযোগ জানাতে যায়। কিন্তু অভিযোগ, পুলিস তাদের অভিযোগ না নিয়ে ঘোরাতে থাকে। থানা থেকে ফাঁড়িতে আর ফাঁড়ি থেকে থানায় যেতে বলা হয়। শেষে বলা হয়, এটা তামিলনাড়ুর কেস। সেখানে অভিযোগ করতে হবে। পরিবারের দাবি, মালিক সাদ্দামের ভাই আলমগীর তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতির ঘনিষ্ঠ। সে বুথ সভাপতি। তাই পুলিস অভিযোগ নিচ্ছে না।
মা শারমিনা মোল্লা জানান, ছেলের ফোন কেড়ে নিয়েছে। বারবার আমাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমরা খুব আতঙ্কে আছি। বাধ্য হয়ে আজ পুলিস সুপারের কাছে অভিযোগ দায়ের করে পরিবার। মা জানান, তাঁরা ছেলেকে সুস্থ অবস্থায় ফিরে পেতে চান। একইসঙ্গে এটাও চান, পুলিস তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দিক।
Zee ২৪ ঘণ্টার সব খবরের আপডেটে চোখ রাখুন। ফলো করুন Google News
অন্যদিকে মির্জাপুর গ্রামের ১৭৮ নম্বর বুথ সভাপতি ও অভিযুক্ত মালিক শেখ সাদ্দামের ভাই আলমগীর শেখ ফোনে জানান, তারা সোহেলের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা চুরি করার প্রমাণ পেয়েছেন। টাকা পেলেই তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। ওদিকে অভিযুক্ত মালিক শেখ সাদ্দাম ফোনে জানান, কাউকে আটকে রাখা হয়নি। যদিও তিনি স্বীকার করেন, ‘ বড়ভাই ‘ হিসেবে এক থাপ্পড় মেরেছেন। তবে তাকে দোকানেই রাখা হয়েছে। কোথাও আটকে রাখা হয়নি।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)