কিরণ মান্না: দীঘায় নতুন আকর্ষণ? এই প্রশ্ন উঠছে কারণ, এবার দিঘায় বেড়াতে আসা পর্যটকদের কাছে দর্শনীয় স্থান হিসেবে জুড়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুরের নাচিন্দা শীতলা মায়ের মন্দির। প্রশাসন ইতিমধ্যে উদ্যোগ নিয়েছে এই বিষয়ে।

Zee ২৪ ঘণ্টার সব খবরের আপডেটে চোখ রাখতে ফলো করুন Google News

স্থানীয়দের দাবি, খুবই ‘জাগ্রত’ মা নাচিন্দা। এই মায়ের টানে বহু দূর দূরান্ত থেকে ভক্তরা এসে ভিড় জমান এই মন্দিরে। এবার এর সঙ্গে যদি দীঘার আকর্ষণীয় স্থানগুলিও তাঁদের কাছে দর্শনীয় করে তোলা হয়, তবে সেটা দারুণ হয়। জানা গিয়েছে, এমনটাই চাইছেন মন্দির কমিটির লোকজন। 
প্রসঙ্গত, অক্ষয় তৃতীয়ার দিন দীঘার জগন্নাথ ধামের উদ্বোধন। বসবে মেলাও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসছেন দীঘার জগন্নাথ ধামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। ওইদিন নাচিন্দা মায়ের মন্দিরেও তাঁকে আসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন মন্দির কমিটির কর্মকর্তারা।

মা নাচিন্দা মা শীতলা। মহামায়ার একটি রূপ। জগৎবাসীর পীড়া হরণ করতে আদি শক্তি ভগবতী মা শীতলার রূপ ধারণ করেন। মা নাচিন্দা শীতলা চণ্ডীদেবী রূপে খ্যাত। এই মন্দিরের গর্ভগৃহে বাস করেন মা শীতলা, মা চণ্ডী, মা কালী ও মা রক্তবতী। পাশের মন্দিরে থাকেন রাধাকৃষ্ণ।

এই দেবীর মহিমা ঘিরে নানা জনশ্রুতি রয়েছে। রয়েছে অনেক অলৌকিক কাহিনি। অনেকেরই বিশ্বাস, এখানে মা খুবই জাগ্রত। গ্রামগঞ্জশহর থেকে দেশ-বিদেশের বহু মানুষ মায়ের কাছে ভিড় জমান। মানসিক করেন, মনস্কামনা পূরণও হয়। ভক্তেরা মন্দিরে ঘণ্টা বাঁধেন। মন্দিরে লাল শালুতে ইট বাঁধেন। মনস্কামনা পূরণ হলে মাছের বিভিন্ন পদের অন্নভোগ, ক্ষীরভোগ, শাড়ি-সহ পুজোর দেন। মায়ের কাছে বহু দূর থেকে মানুষ ছুটে আসেন তাঁদের নতুন গাড়ি বা বাইক পুজো দিতে। তাঁদের বিশ্বাস, এখানে পুজো দিলে গাড়ির দুর্ঘটনা হয় না।

কথিত আছে, আগে এই গ্রামে থাকতেন এক বৃদ্ধা। তিনি প্রায়ই নানা রোগে ভুগতেন। একদিন তিনি দেবী শীতলা চণ্ডীর স্বপ্নাদেশ পান। মা তাঁকে আদেশ দেন, তিনি যাতে ভয় না পেয়ে পুকুরে ডুব দিয়ে এক ঘটি জল নিয়ে সেই জল তাঁর স্বপ্নাদেশ পাওয়া গাছের তলায় স্থাপন করেন। তার পরই তাঁর সব রোগ নিরাময় হয়ে যাবে। সেইমতো তিনি সেটাই করেন আর তার পরেই সুস্থ হয়ে ওঠেন।

অন্য একটি ঘটনাও আছে। এক কিশোর নারকেল পাড়তে নারকেল গাছে উঠেছিল। হাত ফস্কে গাছ থেকে নীচে পড়ে যাচ্ছিল সে। পড়ে যাওয়ার সময়ে সে মা নাচিন্দাকে স্মরণ করেছিল মা রক্ষা করো বলে। আর তার পরই ম্যাজিক। মাটিতে পড়ার সময় সে যেন অনুভব করল, সে যেন কোনও এক তুলোর বিছানায় এসে পড়ল। তার কিছুই হয়নি।

আরও পড়ুন: Cutting Private Part: বাড়ির পাশের ভুট্টাক্ষেতে নিয়ে গিয়ে দেওরের পুরুষাঙ্গ কেটে নিলেন বউদি! সামনে আসছে ভিতরের রহস্য…

আরও পড়ুন: Father Kills Son: ভয়ংকর! বাঁশবাগানে নিয়ে গিয়ে নিজের ছেলেকেই আছাড় দিয়ে মেরে ফেলল বাবা?

আরও একবার কলকাতার সুবিখ্যাত এক যাত্রাপার্টি এই পথ দিয়ে যাত্রা করতে যাওয়ার সময়ে মন্দিরে নেমে প্রণাম করে মাকে বলেছিল যাত্রা যেন ভালো করতে পারে তারা।  সেটা হলে তারা মন্দিরের সামনে বিনে পয়সায় যাত্রাপালা গান করবে। কিন্তু তাদের যাত্রা ভালো হলেও ফেরার সময়ে মায়ের মন্দিরে তারা বিনা পয়সায় পালাগান করেনি। শোনা যায়, যাত্রাওয়ালাদের বাস দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এরপর মা তাঁদের স্বপ্নাদেশে যাত্রা করার নিদান দেন। সেই থেকেই কলকাতার যাত্রাপাড়ার বহু নামীদামি কলাকুশলী শিল্পী মায়ের কাছে এসে সিজনের প্রথম যাত্রা করে যেতেন।

মায়ের বিশেষ তিথিপুজো ছাড়াও শনিবার ও মঙ্গলবার দিনগুলিতে মায়ের বিশেষ পুজো হয়। এছাড়াও পাশে রাধাকৃষ্ণের মন্দির থাকায় রাসমেলা এবং অক্ষয় তৃতীয়ার মেলাও বসে এখানে। লক্ষাধিক মানুষের ভিড় জমে। দীঘার জগন্নাথ মন্দিরে যেহেতু অক্ষয় তৃতীয়ার দিন উদ্বোধন হতে চলেছে, তাই মা নাচিন্দার অক্ষয় তৃতীয়ার মেলা দেখা ও মায়ের দর্শনের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে মা নাচিন্দা পুজো কমিটি।

১১৬ বি নন্দকুমার দীঘা জাতীয় সড়কের উপর দিয়ে গেলে জাতীয় সড়কের পাশে পড়বে মা নাচিন্দা দেবীর মন্দির। দীঘায় বেড়াতে এলে এই মন্দিরের পাশ দিয়ে যেতে হয়। দীঘা থেকে প্রায় ৪২ কিলোমিটার দূরে এই মন্দির। মেরিন ড্রাইভ দিয়েও যাওয়া-আসা করা যায়। ট্রেনে এলে কাঁথি রেল স্টেশনে নেমে টোটো বা অটোতে করে দশ কিলোমিটার আসতে হবে। প্রায় ১০ বিঘে জমির উপর এই মন্দির।

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version