জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বাংলা বললেই ‘বাংলাদেশি’! এমনই অভিযোগ তুলে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি থেকে বাংলায় ফেরত পাঠানো হচ্ছে বাঙালিদের। কোথাও বাঙালিদের পুশব্যক করা হচ্ছে বাংলাদেশে। এবার বংলা ভাষার অত্বিত্বই মুছে ফেলার চেষ্টা দিল্লি পুলিসের এক চিঠিতে। সেখানে বাংলা ভাষার কোনও অস্তিত্বই নেই বরং বাংলা ভাষা হল ‘বাংলাদেশিদের ভাষা’। এনিয়ে গর্জে উঠলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়। দিল্লি পুলিসের আধিকারিকের সাসপেনশনের দাবি করলেন অভিষেক। অন্যদিকে, রবীন্দ্রনাথের ভাষাকে বাংলাদেশি ভাষা বলায় তীব্র প্রতিবাদ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

উল্লেখ্য, দিল্লি পুলিসের একটি চিঠিতে বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আট বাংলাভাষি মানুষকে গ্রেফতার সম্পর্কিত একটি চিঠিতে দিল্লি পুলিসের তরফে লেখা হয়েছে, ওই ৮ বাংলাদেশিকে উপযুক্ত পাসপোর্ট ও ভিসা না থাকার কারণে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের পরিচয়পত্র যে ‘বাংলাদেশি’ ভাষায় লেখা রয়েছে তা হিন্দি ও ইংরেজিতে অনুবাদ করা প্রয়োজন। দিল্লি পুলিসের ওই ভাষা নিয়ে সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার এক সোশ্যাল মিডিয়ার পেস্টে লিখেছেন, বাংলা আমাদের মাতৃভাষা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও স্বামী বিবেকানন্দের ভাষা, যে ভাষায় আমাদের জাতীয় সংগীত এবং জাতীয় গান। কোটি কোটি ভারতীয় যে ভাষায় কথা বলেন ও লেখেন, ভারতের সংবিধান দ্বারা স্বীকৃত ও পবিত্র এই ভাষাকে এখন ‘বাংলাদেশি’ ভাষা হিসেবে বর্ণনা করা হচ্ছে! এটি কলঙ্কজনক, অপমানজনক, দেশবিরোধী ও অসাংবিধানিক! এটা ভারতের সমস্ত বাংলাভাষী মানুষের অপমান। আমাদের সবাইকে অপমান করে ও ছোট করে এমন ভাষা তারা ব্যবহার করতে পারে না। আমরা ভারত সরকারের এই বাংলা-বিরোধী আচরণের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তারা ভারতের বাংলাভাষী মানুষকে অপমান ও হেয় প্রতিপন্ন করতে এমন অসাংবিধানিক ভাষা ব্যবহার করছে, এর বিরুদ্ধে সকলের পক্ষ থেকে অবিলম্বে তীব্রতম প্রতিবাদের আহ্বান জানাচ্ছি। 

আরও পড়ুন-লড়াই শেষ, AIIMS-এ যুদ্ধে হেরে গেলেন পুরীর ‘দগ্ধ নির্যাতিতা’! পুলিস বলল, নিজেই মরেছে…বাবাও…

আরও পড়ুন-প্রেমিককে ছাড়তে নারাজ স্ত্রী, ২ সন্তানকে বি*ষ খাইয়ে চরম পদক্ষেপ শিক্ষকের

অন্যদিকে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, গত কয়েক মাস ধরে বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলাভাষী মানুষকে লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে, হেনস্থা করা হচ্ছে এবং আটক করা হচ্ছে। এবার, এক চরম ধৃষ্টতা। দিল্লি পুলিস একটি সরকারি চিঠিতে বাংলাকে “বাংলাদেশি ভাষা” বলে উল্লেখ করেছে। এটি কোনো সাধারণ ভুল নয়, এটি বিজেপির এক সুপরিকল্পিত অপচেষ্টা। বাংলার বদনাম করার, আমাদের সাংস্কৃতিক পরিচয়কে খাটো করার এবং সংকীর্ণ রাজনৈতিক প্রচারণার জন্য পশ্চিমবঙ্গকে বাংলাদেশের সঙ্গে এক করে দেখার চেষ্টা এটি। এই প্রচেষ্টা সংবিধানের ৩৪৩ ধারা এবং অষ্টম তফসিলের সরাসরি লঙ্ঘন। ‘বাংলাদেশি’ বলে কোনো ভাষা নেই। বাংলাকে বিদেশি ভাষা বলা শুধু অপমান নয় – এটা আমাদের পরিচয়, সংস্কৃতি এবং অস্তিত্বের উপর সরাসরি আঘাত। এই কারণেই আমরা বিজেপিকে ‘বাংলা বিরোধী’ এবং ‘জমিদার’ বলি। এরা ভারতের বৈচিত্র্যকে সম্মান করে না। তারা বিভাজনের রাজনীতি করে। আমরা অবিলম্বে দিল্লি পুলিসের অফিসার অমিত দত্তের সাসপেনশন এবং দিল্লি পুলিস, বিজেপি ও অমিত শাহ-এর নেতৃত্বাধীন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে একটি আনুষ্ঠানিক ও প্রকাশ্য ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version