শুভপম সাহা: কথা রাখলেন অস্কার ব্রুজো, কথা রাখলেন হোসে মোলিনাও| বড় ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে লাল-হলুদ কোচ বলেছিলেন, ‘বদলে যাওয়া ইস্টবেঙ্গলকে হারানো কঠিন হবে’! ওদিকে মোহনবাগানের হেডস্যর বলেছিলেন, ‘সেরা মোহনবাগানকে দেখবেন না ডার্বিতে!’ তাঁদের বিচক্ষণতাই ডার্বিতে মিলল অক্ষরে অক্ষরে! ইস্টবেঙ্গল অসাধারণ ফুটবল খেলে মোহনবাগানের ছুটি করে দিল ডুরান্ড থেকে| জোড়া গোলে ডার্বির নায়ক দিমিত্রিওস দিয়ামানটাকোস|
আরও পড়ুন: Durand Cup: অভিষেকেই ডুরান্ড কাপের সেমিফাইনালে ডায়মন্ড হারবার এফসি!
প্রথমার্ধ
প্রথমার্ধেই মোহনবাগান নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল যুবভারতীতে! শুধুই নিজেদের ছায়া হয়ে মাঠে বিচরণ করছিল সবুজ-মেরুন! মোলিনার টিমে উইং প্লে বলে যেমন কিছু ছিল না, তেমনই ছন্নছাড়া মাঝমাঠ! আক্রমণ এবং রক্ষণ নিয়েও শব্দ খরচ করার জায়গা নেই| সঙ্গে জুড়েছিল মিস পাসের বন্যা| মোহনবাগানের খেলা দেখে কে বলবে এই দলটাই কিছুদিন আগেও আইএসএলে দ্বিমুকুটজয়ীর তকমাধারী! এদিন মোহনবাগানের অন্ধ সমর্থকও বলবেন যে, এই মোহনবাগান একেবারেই সম্পূর্ণ অচেনা!আর অন্যদিকে ইস্টবেঙ্গল ছিল একেবারে বৈপরিত্যে| খেলার তিন মিনিটেই মিগুয়েলের পাস থেকে এডমন্ডের কোনাকুনি জোরাল শট বিশাল কাইথ ঝাঁপিয়ে সেভ না করলে, গোল হয়ে যেতেই পারত| ১৮ মিনিটে ইস্টবেঙ্গল আচমকাই বড় ধাক্কা খেয়ে যায়! মরক্কোর ফরোয়ার্ড হামিদ আহদাদ চোট পেয়ে ছিটকে যান| ‘ফোর্সড রিপ্লেসমেন্ট’ হয়ে নামেন দিমিত্রিওস দিয়ামানটাকোস| এরপর ২৭ মিনিটে মিগুয়েলের ফ্রি-কিক বারের উপর দিয়ে চলে যায়| ৩৩ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলের ফের গোলের সুযোগ নষ্ট হয়| দিমির গোল অফসাইড হয়ে যায়| ৩৬ মিনিটে আশিস রাই বক্সের মধ্যে বিপিন সিংকে ফাউল করায় ইস্টবেঙ্গলকে পেনাল্টি দিতে ভুল করেননি রেফারি ভেঙ্কটেশ| পেনাল্টিতে গোল করে ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে দেন দিমি|
দ্বিতীয়ার্ধ
এদিন প্রথমার্ধে ইস্টবেঙ্গল ঠিক যেখানে শেষ করেছিল, দ্বিতীয়ার্ধে সেখান থেকেই শুরু করে| একই দল নেমেছিল| তবে পাসাং দোর্জে তামাংকে তুলে জেসন কামিন্সকে নামায়| তবে ৫২ মিনিটে আবার দিমি ম্যাজিকে ইস্টবেঙ্গল স্কোরলাইন ২-০ করে ফেলে| মহেশের আলতো চিপ থেকে হাফ টার্নে গোল করে দেন গ্রিস গোলমেশিন| দু’গোলে পিছিয়ে থাকা মোহনবাগান গোলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল| ওদিকে কোলাসোরও সেই চেনা দৌড়ও দেখা যাচ্ছিল না| ইস্টবেঙ্গল এদিন কোলাসোকে পুরোপুরি বোতলবন্দি করে ফেলেছিল| তবে ৬৮ মিনিটে সেই কোলাসোর কর্নার থেকেই বক্সের বাইরে থেকে অনিরুদ্ধ থাপার কার্লিং শট ইস্টবেঙ্গলের নেট খুঁজে নেয়| এই গোলের পরেই যেন মোহনবাগান একটু নড়েচড়ে ওঠে, খেলায় গতি আসে, পালে হাওয়া লাগে গঙ্গাপারের শতাব্দী প্রাচীন ক্লাবের| এদিন নির্ধারিত সময়ের পরে আরও অতিরিক্ত ছ’মিনিট যোগ করেছিলেন রেফারি| তবে বাগানে আর ফুল ফোটেনি| শেষ চারে ইস্টবেঙ্গল খেলবে ডায়মন্ড হারবার এফসি-র বিরুদ্ধে| যারা আজ জামশেদপুরকে হারিয়ে শেষ চারের টিকিট কেটেছে.।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)