জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ফেডারেশনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে সিনে দুনিয়ায় কোণঠাসা অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য (Anirban Bhattacharya)। অভিনেতা সেটে এসে কোনও টেকনিশিয়ান আসবেন না তাই অভিনয় ও পরিচালনা থেকে খানিক দূরত্ব তৈরি হয়েছে অনির্বাণের। এরই মাঝে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল তিনি। সৌজন্যে তাঁর গানের দল ‘হুলি গান ইজম’(Hooliganism)। কিছুদিন আগেই তাঁদের মেলার গান ছড়িয়েছিল ঝড়ের গতিতে। এবার এক কনসার্ট থেকে ভাইরাল অনির্বাণের গান। যে গানে তাঁর কটাক্ষের নিশানায় দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh), কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) থেকে শতরূপ ঘোষ (Satarup Ghosh)।
ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োতে দেখা যায়, অনির্বাণ গাইছেন, “এসব গান-বাজনা ছাড়, চল প্রোমোটারি করি, বড় গাড়ি চড়ি / ইলেকশানের মেজাজ বুঝে দলটা বদল করি/ এই আমাদের দোষ/ গানবাজনা করতে এসে এসব কথা বললে/ রেগে যাবে কুণাল ঘোষ”। তবে শুধু কুণাল ঘোষই নয়, এরপরে নাম না করে হুলি গান ইজমের কটাক্ষ ছিল দিলীপ ঘোষের দিকে। গানের কথায়, “আরেক ঘোষও আছে/ দাদা খুবই রোমান্টিক/ ঘোষ দিয়ে যায় চেনা/ গয়না দোকান সব তুলে দাও, গোরুর দুধে সোনা।” অবশেষে আসে সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষের নাম। অনির্বাণ গেয়ে ওঠেন, “আরেক ঘোষও আছে, ওই বিপ্লবীদের পার্টি/ টিভি চ্যানেলপার্টি অফিস বড্ড হাঁটাহাঁটি/তাই কিনেছে গাড়ি/দামটা বেশি খুব/ ফেসবুকেতেই রাজা মোদের দাদা শতরূপ”।
আর এরপরই সিপিএমের তরুণ তুর্কী শতরূপের সমর্থনে, ব্যাট ধরেন তাঁর সহযোদ্ধারা। পাল্টা গান বেঁধে অনির্বাণ ভট্টাচার্যকে বিদ্রূপ করেন। আর তার সমালোচনা করেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। উল্লেখ্য সারা শহর অনির্বাণের যে ভাইরাল গানের জ্বরে এখন ভুগছে, সেই গানের আরেক চরিত্র কুণাল ঘোষ নিজেও। কুণাল এইদিন শতরূপের এই পাল্টা গান বাধার উত্তুঙ্গ সমালোচলা করে বলেন- ”অনির্বাণ ভট্টাচার্যর গানটা বড্ড আঁতে লেগেছে সিপিএমের শতরূপ ঘোষের (shatarup ghosh)। আঁতে লেগেছে বললে ভুল হবে ‘প্রাণের ভিতর দিয়ে মরমে পশিল গো/ আকুল করিল মোর প্রাণ’… ভিতরটা জ্বলিয়ে দিয়েছে। তাই নিজে না নেমে চামচাদের নামিয়ে দিয়েছেন কমব্যাট করার জন্য। কিন্তু পাল্টাটা এতটাই নিম্নমানের এবং রুচিসম্মতহীন যে পরিস্কার বোঝা গিয়েছে সিপিএম দলটা কোথায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। কেন তারা শূন্য তা আর ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন নেই’।
শতরূপকে নিয়ে দুকলি গান গেয়েছেন অনির্বাণ। শুধু তো শতরূপ নয়, কুণাল ঘোষ, দিলীপ ঘোষকে নিয়েও দু’-চার লাইন গেয়েছেন। দিলীপ টুঁ শব্দটি করেননি। কুণাল ঘোষ ভিডিয়ো পোস্ট করে স্বাগত জানিয়েছেন এই শ্লেষের।
কী রয়েছে সেই গানে? পঙ্কজ কুমার ভাদুড়ি নামে একজনের পোস্টে দেখা যাচ্ছে গিটার বাজিয়ে গান গাইছেন শতরূপ আর তার এক সঙ্গী। ওদের দুজনের গান গাওয়ার দৃশ্য দেখানো হয়েছে, কিন্তু ব্যাক গ্রাউন্ডে গাইছেন অন্য কেউ। কী সেই গান? শতরূপ আর তার দলবল যে কথাগুলি বলছিলেন, সেই কথাই গানের কলিতে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চাকরি, আরজি করের ছাত্রী মৃত্যু সহ তাদের মনমতো ইস্যুগুলো কেন নেই সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছে। গানের মাঝে আবার অনির্বাণকে নকল করে ‘ভাই ভাই’ও বলা হয়েছে। কালীঘাটকে সমঝে চলছে বলেও বক্রোক্তি করা হয়েছে।
কুণাল ঘোষের প্রশ্ন-
এক, ভাই শতরূপ, প্রতিবাদ করলে প্রকাশ্যে করতে পারতেন। অন্য লোককে নামাতে হল কেন? নাচতে নেমে ঘোমটা কেন? এটুকু সৎসাহস আশা করা কি অন্যায়?
দুই, গানটি অতীব জঘন্য। অন্যকে নকল করে যেটি পরিবেশন করা হয়েছে, সেটা একটা চতুর্থ শ্রেণির গান। অর্ধেক কথা বোঝা যায় না, ধরে নিতে হয়। এই অখাদ্য বিষয়টি পরিবেশন করে নিজেদের হাস্যস্পদ করা কি একান্তই প্রয়োজন ছিল?
তিন, একজন গায়ক কোনও একটি বিষয় নিয়ে গান লিখবেন এবং গাইবেন, সেটা একান্তই তার বিষয়। শতরূপ বলে দেবেন আর সেই ভাষায় গাইবেন, এটা আবার কোন দেশের ফরমান। আসলে এটা শতরূপের দোষ নয়, দোষ ওর দলের। ৩৪ বছর ক্ষমতায় থাকার সময় এভাবেই ওরা শিল্পীদের নিয়ন্ত্রণ করতে চেয়েছে। এইভাবেই বাম জমানায় ঊষা উত্থুপ, আঁধারের গান, মহীনে ঘোড়াগুলির গানগুলির কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করেছে। এখন খোলা হাওয়া, তাই বড্ড গায়ে লাগছে। অভ্যাস নেই তো!
ভাই শতরূপ, আপনারা আসলে টিভির বিপ্লবী। চ্যানেল আর পোর্টালগুলো না থাকলে আপনাদের কে চিনত? কিন্তু অনির্বাণকে কমব্যাট করতে গিয়ে যে ফসলটি ফলিয়েছেন, সেটা আসলে অক্ষমের বাতিল অস্ত্র। কারওর পিছনে লাগতে গেলেও একটা স্ট্যান্ডার্ড বা মানের প্রয়োজন হয়। চামচা নামিয়ে নিজেদের এতো বিলো স্ট্যান্ডার্ড বানানোর কি একান্তই প্রয়োজন ছিল?
ভাই শতরূপ!!!
এর কিছুক্ষণ পরেই এই গানের ভিডিয়ো ডিলিট করা হয়েছে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)