সন্দীপ ঘোষ চৌধুরী: পূর্ব বর্ধমানের আধ্যাত্মিক জনপদ কাটোয়া। চৈতন্যভূমি হিসেবে পরিচিত এই শহরের বুকে আজও শক্তির উপাসনা হয়। গঙ্গার ঘাট থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে গৌরাঙ্গপাড়া যেখানে একসময় চৈতন্যদেব কেশবভারতীর কাছে দীক্ষা নিয়েছিলেন, তারই কাছে ক্ষ্যাপা কালিতলায় আজও ধ্বনিত হয় “জয় ক্ষেপীমা”।

Add Zee News as a Preferred Source

আরও পড়ুন, Kali Puja 2025: এ কালী হিংসুটে! এই মন্দির ছাড়া কোনও বাড়িতে করা হয় না পুজো… এমনকী কারও ফোনে নেই অন্য কালীর ছবি…

এই বৈষ্ণবভাবাপন্ন অঞ্চলে শতাব্দী কয়েক পরে জন্ম নেন নরেন ক্ষ্যাপা। আর তাঁরই আরাধ্য দেবী “ক্ষেপীমা”। ক্ষ্যাপা নরেন ছিলেন ভক্তিপ্রবণ এক সাধক, যিনি বৈষ্ণব ভুবনে শক্তির সাধনা শুরু করে এক নতুন ধারার জন্ম দেন। তাঁর কালী ছিলেন অন্যরকম মাতৃসুলভ, রুদ্র নয়, বরং করুণাময়ী। সেই কালীই আজ সর্বজনপ্রিয় ক্ষেপীমা।

ভক্তের পরিচয়ে দেবী। যেমন ভক্তের নামে পরিচিত ফিরিঙ্গি কালী, ডাকাত কালী, বা সেরিনা কালী, তেমনি কাটোয়ার ক্ষেপীমাও ভক্তের নামেই খ্যাত। ক্ষ্যাপা নরেনের ভক্তি, মাতৃসাধনা এবং জনমানসের বিশ্বাস আজ ক্ষেপীমাকে করে তুলেছে দেবীভাবনার এক অনন্য প্রতীক। ভক্তদের দৃঢ় বিশ্বাস ক্ষেপীমার কাছে কিছু চাওয়া মানেই পূর্ণতা। কেউ খালি হাতে ফেরেন না।

এই অবিচল বিশ্বাসের প্রতীক হিসেবেই আজ ক্ষেপীমাকে সাজানো হয়  তিন থেকে চার কেজি সোনা ও রুপোর অলঙ্কারে। মায়ের অলঙ্কার পড়ানো হয় আগের দিন রাত থেকেই, কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে। মন্দির প্রাঙ্গণে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা, থাকে পুলিসের নজরদারি।

ক্ষেপীমার কালীপুজো শুরু হয় ভোর চারটেয়, মঙ্গল আরতির মাধ্যমে। তখনও আকাশে অন্ধকার, কিন্তু মন্দির প্রাঙ্গণে আলোয় ভরে ওঠে চারদিক ঢাকের শব্দে, শঙ্খধ্বনিতে, ধূপের গন্ধে মিশে যায় ভক্তির ছোঁয়া।
ভোরবেলায় চলে দণ্ডী কাটা, এরপর সকাল থেকেই শুরু হয় ভক্তদের ভিড়। দিনভর চলতে থাকে চণ্ডীপাঠ পূজা আরতি,ও ভোগ নিবেদন।

ভক্তরা বলেন, মা যেমন ক্ষ্যাপা দেবী ছিলেন, তেমনই আমাদের মায়ের রূপে আজও বেঁচে আছেন। মা ক্ষেপীর কাছে মানত করলে ভক্তের মনস্কামনা পূর্ণ হয় ,খালি হাতে ফেরান না।” পুলিসি নিরাপত্তায় সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় পুজো, তবে মায়ের দর্শনের জন্য লাইন থাকে দীর্ঘ। মন্দির চত্বরে চলে  ঢাকের বাদ্য, ও চিরচেনা সেই মন্ত্রোচ্চারণ “জয় ক্ষেপীমা, জয় মা কালী!”  ক্ষ্যাপা নরেনের কালী আজ কেবল এক মূর্তি নন, তিনি এক বিশ্বাস, আশ্রয় ও ভক্তির অনন্ত প্রতীক।

আরও পড়ুন, kalipuja 2025: বেড়া বেঁধে দিতে এসেছিলেন মা কালী স্বয়ং! তারপর থেকে সাধক রামপ্রসাদের পুণ্যপুজোর বিভায় উদ্ভাসিত হালিশহর…

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version