কিরণ মান্না: ধর্ষণ করে খুন নাকি অন্য কিছু? পূর্ব মেদিনীপুরের জুনপুটের গোপালপুর সমুদ্র উপকূলে ঝাউগাছের ভিতর থেকে উদ্ধার অজ্ঞাতপরিচয় তরুণীর দেহ। এই ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। তদন্তকারীদের দাবি, খুনের কথা স্বীকার করেছে অভিযুক্ত। অজ্ঞাত পরিচয় কিশোরীর দেহ উদ্ধারের পর তাঁর নাম পরিচয় প্রকাশ্যে আসে। এরপর চাঞ্চল্যকর অভিযোগ মৃতার পরিবারের। অপহরণ করে ধর্ষণ করে মর্মান্তিকভাবে খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে কিশোরীর প্রেমিক যুবকের বিরুদ্ধে। যুবকের নাম দেব কুমার দাস। কাঁথির জুনপুট কোস্টাল থানা এলাকার ঝাওয়া জগন্নাথপুরে বাড়ি। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পর এটি গণধর্ষণ কিনা সেটা জানা যাবে বলে পুলিস সূত্রে জানা গেছে। তবে কী কারণে খুন বা কীভাবে খুন, সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। রবিবার বিকেলের এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পর্যটন এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
মেয়েটির ১৬ বছর বয়স। দশম শ্রেণীর ছাত্রী। কাঁথি থানা এলাকার দূরমুঠে বাড়ি। গত পরশুদিন থেকে টিউশন পড়তে বেরিয়ে নিখোঁজ ছিল। স্থানীয় এক যুবকের সাথে প্রেমালাপ ছিল। ওই যুবকের বাড়ি ঝাওয়া-জগন্নাথপুর পাশাপাশি গ্রাম। ওই যুবক কিডন্যাপ করেছিল বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে এই কিশোরী প্রেমে প্রত্যাখ্যান করেছিল। যে কারণে তুলে নিয়ে গিয়ে এমন পরিণতি করে । সঙ্গে আরও কয়েকজনের যোগ থাকতে পারে বলে আশঙ্কা পুলিসের। ইতিমধ্যে শুভেন্দু অধিকারীর খোদ তালুকে এমন ধর্ষণ ও খুনে ফের চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
রবিবার বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ স্থানীয় কয়েকজন মহিলা ঝাউবনের দিকে গিয়েছিলেন। সেই সময় ওই তরুণীর দেহ পড়ে থাকতে থাকেন। তাঁর হাত-পা বাঁধা ছিল। গলায় ওড়নার ফাঁস। খবর দেওয়া হয় জুনপুট থানায়। পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে তরুণীর দেহ উদ্ধার করে। কী ভাবে মৃত্যু হল ওই তরুণীর, তা জানতে দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। তদন্ত নেমে পুলিস একজনকে গ্রেফতার করে। মহকুমা পুলিস আধিকারিক জানান, ‘অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। খুনের কারণ জানতে বিস্তারিত তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পরই পরিষ্কার হবে কীভাবে খুন করা হয়েছে ওই তরুণীকে।’
পুলিস সূত্রে খবর, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে খুনের কথা স্বীকার করেছে ধৃত। সে জানায়, ব্যক্তিগত আক্রোশে ওই তরুণীকে খুন করে ঝাউগাছের ভিতর ফেলে রেখে পালিয়ে গিয়েছিল। ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণ খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই জুনপুট থানার পুলিসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। পর্যটন এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, গত শুক্রবারও এলাকায় মারধর এবং অশান্তির ঘটনা ঘটেছিল। তার দু’দিন পরই এমন নৃশংস খুনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা উপকূল অঞ্চলে। এদিকে, গোপালপুর ও জুনপুটের পর্যটন অঞ্চলে বেড়াতে আসা মানুষদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে। স্থানীয়রা দ্রুত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের দাবি তুলেছেন।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)