প্রদ্যুত্ দাস: ২০২৬-এ সারপ্রাইজ থাকছে।’ তবে রাজনীতির ময়দানে তাঁর পা রাখার ব্যাপারে যে কথাবার্তা শুরু হয়ে গিয়েছে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন এশিয়াডে সোনাজয়ী স্বপ্না বর্মন। উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন নিয়ে সরব হলেন স্বপ্না। জি ২৪ ঘন্টার মুখোমুখি হয়ে ক্ষোভও উগড়ে দিলেন।
আরও পড়ুন, RG Kar Doctor Death: আরজি কর হাসপাতালের চিকিৎসকের ‘রহস্যমৃত্যু’! মৃত্যুর কারণ, শরীরে বিষক্রিয়া?
খেলার মাঠ ছেড়ে এবার রাজনীতির আঙিনায় পা দিতে চলেছেন এশিয়াডে সোনাজয়ী স্বপ্না বর্মন! ২০২৬-এর বিধানসভা ভোটে প্রার্থীও হতে পারেন তিনি। নিজেই ইঙ্গিত দিয়েছেন এমনটা। তবে কোন দলে যোগ দিতে চলেছেন অর্জুন পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অ্যাথলিট, তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। স্বপ্না নিজেও এ ব্যাপারে এখনই সবটা ভাঙতে নারাজ।
জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন কালিয়াগঞ্জ সংলগ্ন ঢিংপাড়ায় নিজের গ্রামের বাড়িতে বসে তিনি বলেন, ‘সময় হলেই সবটা জানতে পারবেন। এতটুকু বলতে পারি, ২০২৬-এ সারপ্রাইজ থাকছে।’ তবে রাজনীতির ময়দানে তাঁর পা রাখার ব্যাপারে যে কথাবার্তা শুরু হয়ে গিয়েছে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন স্বপ্না।
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ মহল থেকে আমার কাছে অফার আছে। তবে আমি কিছু শর্ত রেখেছি। যারা সেই শর্ত মানবে, তাদের হয়েই রাজনীতির ময়দানে নামব। প্রার্থী হতেও আপত্তি নেই।’ রাজনীতির মঞ্চে শামিল হতে ঠিক কী শর্ত রেখেছেন ‘সোনার মেয়ে’?
স্বপ্না বলেন, ‘আমি উত্তরবঙ্গের মেয়ে। ফলে উত্তরের উন্নয়ন আমার ‘পাখির চোখ’। সবার প্রথমে ক্রীড়াক্ষেত্রে উন্নয়ন চাই। উত্তরবঙ্গে একটিও সিন্থেটিক ট্র্যাক নেই। কেন নেই? মাঠ, ট্র্যাক না থাকলে আরও স্বপ্না বর্মন তৈরি হবে কীভাবে? দ্বিতীয়ত, উত্তরবঙ্গে এইমস চাই। তৃতীয়ত, উত্তরে কর্মসংস্থান চাই। শিল্প চাই। যে দল এগুলি করার ব্যাপারে অঙ্গীকারবদ্ধ হবে, সেই দলে নাম লেখাতে আমার কোনও আপত্তি নেই।’
নিজের বাড়িতে যাওয়ার ভাঙা রাস্তা নিয়েও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন স্বপ্না। রেলের চাকরিতে বর্তমানে আলিপুরদুয়ারে কর্মরত স্বপ্না। ছুটিতে জলপাইগুড়ির গ্রামের বাড়িতে এসে বাবা-মায়ের সঙ্গে নিজেদের জমিতে এখন ধান কাটার কাজে ব্যস্ত তিনি।
এদিনও সকালে ধান কাটতে যান জমিতে। বললেন, ‘আমার বাবা একসময় ভ্যান চালাতেন। মা চা বাগানে কাজ করতেন। পড়াশোনার পাশাপাশি আমিও দৈনিক মাত্র ৬০ টাকা হাজিরায় কাজ করেছি। কোন পরিস্থিতি থেকে আমি উঠে এসেছি, তা কারও অজানা নয়। তাই সেলিব্রিটি হয়ে নয়, মাটির মেয়ে হিসেবে থাকতে চাই। সেকারণে বাবা-মায়ের সঙ্গে ধান কাটছি।’
এশিয়ান গেমসে আগামী দিনে কি দেখা যাবে স্বপ্নাকে? প্রশ্ন শুনে তাঁর গলায় কিছুটা আক্ষেপের সুর। বলেন, ‘আগামী বছর এশিয়ান গেমসে অংশ নেওয়ার প্রবল ইচ্ছে। কিন্তু কোচ পাচ্ছি না। প্র্যাকটিস করব কীভাবে?’
এশিয়াডে সোনাজয়ীর কোচ মিলছে না? স্বপ্না বলেন, ‘না মিলছে না।’ তাঁর কথায়, ‘প্রথম থেকে আমি কোচ সুভাষ সরকারের তত্ত্বাবধানে প্র্যাকটিস করে এসেছি। তিনি সাই থেকে অবসর নিয়েছেন। এখন ওড়িশা সরকার তাঁকে বেতন দিয়ে রেখে দিয়েছেন। ফলে সেখানকার ছেলেমেয়েদের অনুশীলন করাচ্ছেন তিনি। জানিয়ে দিয়েছেন, আমাকে প্র্যাকটিস করাতে পারবেন না। তাছাড়া এশিয়ান গেমসের খুব বেশি দেরি নেই। এখন নতুন কোচের তত্ত্বাবধানে প্র্যাকটিস করলে বোঝাপড়ার অভাব হতে পারে। ফলে গোটা বিষয়টি নিয়ে আমি কনফিউজড।’
আগামী দিনে কি স্বপ্নাকে ক্রীড়াক্ষেত্রে অন্য কোনও ভূমিকায় দেখা যাবে? সোনার মেয়ে বলেন, ‘যেতেই পারে। কোচিং করানোর জন্য যেসব সার্টিফিকেট প্রয়োজন, তা পরীক্ষা দিয়ে অর্জন করেছি। নিজের অ্যাকাডেমি তৈরিরও ইচ্ছে রয়েছে। অবশ্যই তা উত্তরবঙ্গে। তবে আমার পক্ষে জমি কিনে অ্যাকাডেমি করা সম্ভব নয়। কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার এগিয়ে এলে হয়তো অ্যাকাডেমির স্বপ্ন পূরণ হবে।’ স্বপ্নাকে নিয়ে তৈরি হতে চলেছে বায়োপিক। কথায় কথায় তারও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন, Beach Horror: সমুদ্র সৈকতের পাশে পড়ে হাত-পা বাঁধা নাবালিকার নিথর দেহ! তীব্র রহস্য… ২ দিন আগেই…
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)