বিশ্বজিত্ মিত্র: হাঁসখালির নাবালিকাকে ধর্ষণ ও মৃতদেহ জোর করে দাহ করে দেওয়ার মামলায় ৯ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল রানাঘাট এডিজে আদালত। মঙ্গলবার ২০০২ সালের সেই মামলায় ৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করল আদালত। পাশাপাশি ২ নাবালককে খালাস করা হয়েছে। বাকীদের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল আদালত। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ প্রাপ্তের মধ্যে রয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতা সমরেন্দ্র গয়ালির ছেলে। অভিযোগ ছিল প্রভাব খাটিয়ে জোর করে মৃতদেহ দাহ করে দেন সমরেন্দ্রে। সেই অভিযোগ তৃণমূল নেতার ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত করছিল সিবিআই।
বন্ধু জন্মদিনের পার্টিতে গিয়েছিল ওই নাবালিকা। হাঁসখালি থানার বগুলায় ‘বন্ধু’ সোহেল গয়ালির জন্মদিনের পার্টিতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হয় ওই নাবালিকা। পার্টিতেই নাবালিকাকে বেহুঁশ করে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে৷ অভিযোগ, ধর্ষণের পর রক্তাক্ত অবস্থায় নাবালিকাকে ফেলে রাখা হয় রাস্তায়। ঘটনার পরদিন অর্থাত্ ৫ এপ্রিল ভোরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জেরে মৃত্যু হয় কিশোরীর। তড়িঘড়ি সেই দেহ ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়াই জোর করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ঘটনায় তোলপাড় পড়ে যায় রাজ্যে। এরপর ৯ এপ্রিল এই ঘটনায় হাঁসখালি থানায় অভিযোগ দায়ের করে কিশোরীর পরিবার। প্রথমেই গ্রেফতার করা হয় মূল অভিযুক্ত সোহেল গয়ালিকে৷ ১০ এপ্রিল সোহেলকে গ্রেফতার করে পুলিস৷
আদালতের রায় নিয়ে আইনজীবী বলেন, এই মামলায় ব্রজ গয়ালি, রঞ্জিত মল্লিক এবং প্রভাকর পোদ্দারকে ৩৭৬ডি ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি জরিমানাও করা হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত সমর গয়ালি, দীপ্ত গয়ালি এবং পীযূষ ভক্তকে ৫০৬ ধারায় ৫ বছর, ২০১ ধারায় ৩ বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুরজিত রায় ও আকাশ বাড়ুইকে ৫০ হাজার টাকা বন্ডে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এইসময়র মধ্যে তারা প্রবেশনার অফিসারের সঙ্গে দেখা করবে। এক বছরের মধ্য়ে তারা যদি কোনও অপরাধ করে তাহলে তাদের ছাড় বাতিল হবে। অংশুমান বাগচিকে ৩ বছরের জন্য় কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন-চাপ সৃষ্টির চেষ্টা বজ্জাত ইউনূসের! দিল্লির ভিসা কেন্দ্র বন্ধ করল বাংলাদেশ
আরও পড়ুন- বারুদের স্তূপ বাংলাদেশে NCP-ছাত্রদল ভয়ংকর সংঘর্ষ! ককটেল বিস্ফোরণ! ৮ জন…
ওই রায় নিয়ে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, এই মামলায় মুখ্যমন্ত্রী তদন্তের অভিমুখ ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি বলে দিয়েছিলেন, ওদের মধ্যে প্রেম ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল। প্রেম ভালোবাসা থাকলে ধর্ষণ করে খুন করা যায়! সিবিআই তদন্ত হয়েছে, তাই দোষীরা ধরা পড়েছে। তৃণমূলের নেতার ছেলে সহ বাকীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় হয়ছে। মুখ্যমন্ত্রীর আওতায় .তদন্ত হলে এর ফল কোন দিকে যেত তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ধর্ষণকারীদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন।
অন্যদিকে, তৃণণূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার হাঁসাখালি মামলার রায় নিয়ে বলেন, আগেও আমরা দেখেছি ধর্ষণ ও ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় পুলিস দ্রুত তদন্ত করে চার্জশিট দিয়েছে। প্রমাণিত হল, এরাজ্যে কোনও নারকীয় ঘটনা হলে কেউ রেহাই পায় না। সিবিআই পরবর্তীকালে তদন্তের ভার নেয়। এরাজ্যে বারবার প্রমাণিত হয়েছে রাজ্য পুলিস তাদের যোগ্য়তার সঙ্গে কাজ করেছে। অন্য রাজ্যে এমনটা হয় না।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)
