এই সময়: নিয়োগ দুর্নীতিতে প্রাপ্তি-যোগের রহস্য কাটাতে একদিকে দীর্ঘক্ষণ মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করা হলো কুন্তল ঘোষ ও তাপস মণ্ডলকে। অন্যদিকে, দুর্নীতিতে টাকা গিয়েছে কার কাছে, তার সূত্র সন্ধানে কুন্তলের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া ডায়েরির পাশাপাশি ED-র নজর কয়েকটি খাতা ও তিনটি পেনড্রাইভে।

Kuntal Ghosh : দুর্নীতির ৯০ ভাগ টাকা ঢুকেছে কাদের পকেটে?
ইডির হাতে ধৃত কুন্তলের সঙ্গে মঙ্গলবার সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে মুখোমুখি বসানো হয় শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলির সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং অ্যাচিভার্স অ্যাসোসিয়েশনের কর্তা তাপসকে। গত ক’দিনে তাপস ও কুন্তল টাকা নেওয়ার ব্যাপারে একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। কুন্তলের যে ফ্ল্যাটে গত সপ্তাহে ED দীর্ঘক্ষণ তল্লাশি চালিয়েছে, সেখানে তাপসের যাতায়াত ছিল কি না, তা নিয়েও দু’জনের বক্তব্যে তদন্তকারীরা ধন্দে। সেই জট কাটাতেই এ দিন টানা জেরা করা হয় দু’জনকে।

এ দিনও সকালে সিজিও কমপ্লেক্সে ঢোকার সময়ে তাপস সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “হ্যাঁ টাকা চেয়েছিলাম। ওঁকে (কুন্তল) টাকা দেওয়া হয়েছে, তো চাইব না? যে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন, তাঁদের টাকাই চেয়েছি।” কুন্তল এখন ED হেফাজতে। তদন্তকারীদের কাছে তাঁর দাবি, তাপস তাঁকে ED-CBI-র নামে ফোন করে টাকা চেয়ে হুমকিও দেন। সেই কথোপকথনের রেকর্ড ED-CBI-কে দিয়েছেন তিনি। ED সূত্রে খবর, ওই কল রেকর্ড নিয়েও এ দিন তাপসের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে।

Kuntal Ghosh : জট কাটাতে মুখোমুখি জেরায় তাপস-কুন্তল ?
কুন্তলের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে একটি ডায়েরি, কয়েকটি খাতা এবং তিনটি পেনড্রাইভ মিলেছিল। যা থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গিয়েছে। বেশ ক’টি নামও জেনেছেন তদন্তকারীরা। এ দিন সে বিষয়েও দু’জনকে জিজ্ঞাসা করা হয়। সাঙ্কেতিক ভাষায় যাঁদের নাম ডায়েরি বা খাতায় উল্লিখিত, তাঁদের ব্যাপারে দু’জনের কাছে জানতে চান তদন্তকারীরা। পাশাপাশি উদ্ধার হওয়া পেন ড্রাইভ এবং অন্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসের তথ্য পেতে সাইবার বিশেজ্ঞদেরও সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।

ED-র একটি সূত্রে খবর, এ দিন প্রথম দফায় তাপস এবং কুন্তলকে আলাদা করে প্রশ্ন করা হয়। ঘণ্টাখানেক দু’জনকে মুখোমুখি বসিয়ে উদ্ধার হওয়া নথিপত্র সামনে রেখে টানা জেরা করা হয় দ্বিতীয় দফায়। তাঁদের দেওয়া তথ্য লিপিবদ্ধ করেন তদন্তকারীরা।

Kuntal Ghosh Tapas Mondal : ‘কেন চাইব না…’, দুর্নীতিকাণ্ডে কুন্তলের থেকে টাকা নেওয়ার কথা মানলেন তাপস!
অভিযোগ উঠেছে, কুন্তলের ফ্ল্যাটে মাঝেমধ্যেই যেতেন তাপস। সেখানে নাকি থাকতেনও! এ দিন সাংবাদিকরা তাপসকে প্রশ্ন করেন – আপনার ব্যবহৃত ইনসুলিন পাওয়া গিয়েছে ওই ফ্ল্যাটে? আপনি কি কুন্তলের ফ্ল্যাটে থাকতেন? তাঁর উত্তর, “না না, কোনও দিন থাকিনি। সেটা প্রমাণ হোক।” এরপর জানতে চাওয়া হয়, নীলাদ্রি ঘোষকে তিনি চিনতেন কি না। তাপস বলেন, “হ্যাঁ চিনি। পরিচিত ব্যক্তি। আমার কাছে আসতেন।” কুন্তল দাবি করেছিলেন, তাপস মণ্ডল, গোপাল দলপতি এবং নীলাদ্রি ঘোষ চক্রান্ত করে তাঁকে ফাঁসিয়েছেন। তাঁরাই টাকা দাবি করছিলেন কুন্তলের কাছে। এ দিন তাপস ও কুন্তলকে মুখোমুখি জেরা করে ইডি জানতে চেয়েছে, কেনই বা কুন্তলকে ফাঁসাতে যাবেন ওই তিনজন? এই চতুর্ভুজের রহস্য ভাঙতে পারলে দুর্নীতির প্যান্ডোরার বাক্স খুলতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version