জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: দ্য বোর্ড অফ কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (The Board of Control for Cricket in India) ওরফে বিসিসিআই (BCCI), এখন হন্যে হয়ে খুঁজছে সিনিয়ন নির্বাচক কমিটির (পুরুষ দল) চেয়ারম্যান। চেতন শর্মার (Chetan Sharma) পদত্যাগের পর ছয় মাস কেটে গিয়েছে। কিন্তু সেই পদ ফাঁকাই রয়েছে। আগামী ৫ অক্টোবর থেকে ভারতে শুরু পঞ্চাশ ওভারের বিশ্বকাপ (ICC Cricket World Cup 2023)। বোঝাই যাচ্ছে যে, বিসিসিআই-এর প্রধান নির্বাচকের আসন ভরাট করার জন্য তাড়া ঠিক কত’টা! চেতন শর্মা উত্তারঞ্চলের ছিলেন। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সংবিধান মেনে চেতনের জুতোয় যিনি পা গলাবেন, তাঁকেও হতে হবে সেই একই অঞ্চলের। প্রধান নির্বাচক হওয়ার জন্য এই মুহূর্তে হাওয়ায় প্রবল ভাবে ভাসছে একজনের নাম। তিনি বীরেন্দ্র শেহওয়াগ (Virender Sehwag)। বিশ্বকাপ জয়ী ভারতের প্রাক্তন ওপেনার ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে আলবিদা বলেছেন। তারপর থেকে ‘নজফগড়ের নবাব’কে কোনও প্রশাসনিক পদে দেখা যায়নি। সংবাদসংস্থা পিটিআই এক রিপোর্ট পেশ করেছে, সেখানে বলা হচ্ছে যে, বিসিসিআই যে, পারিশ্রমিকের প্রস্তাব দেবে শেহওয়াগকে। তা প্রাক্তন মহারথীর পছন্দ নাও হতে পারে!
গত ফেব্রুয়ারিতে এক স্টিং অপারেশনে ফেঁসে গিয়েছিলেন চেতন। প্রাক্তন নির্বাচক প্রধানকে দেখা গিয়েছিল যে, ভারতীয় ক্রিকেটার ও দল নির্বাচন সংক্রান্ত গোপন তথ্য নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করছিলেন। এরপরেই চেতন ইস্তফা দিয়ে বেরিয়ে আসেন বিসিসিআই থেকে।অনেকের মনে করেছিলেন যে, চেতন ইস্তফা না দিলে তাঁকে সরিয়েও দিতে পারত বোর্ড। ভারতীয় দলের অন্দরমহলের কথা এভাবে ফাঁস করে দেওয়ায়, বোর্ড মোটেই ভালো ভাবে নেয়নি। এরপর চেতনের জায়গায় এসেছিলেন প্রাক্তন ওপেনার শিব সুন্দর দাস। দেশের হয়ে ২৩ টেস্ট খেলা ক্রিকেটারের সঙ্গে তাঁর প্যানেলে রয়েছেন এস শরত (দক্ষিণাঞ্চল), সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় (মধ্যাঞ্চল), ও সলিল আঙ্কোলা (পশ্চিমাঞ্চল)।
সিনিয়ন নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান বিসিসিআই-এর থেকে বার্ষিক এক কোটি টাকা পেয়ে থাকেন। বাকি চার সদস্য পান ৯০ লক্ষ টাকা করে। অতীতে নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে বড় নামদেরই পাওয়া গিয়েছিল। দিলীপ বেঙ্গসরকার (২০০৬-২০০৮) ও কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত (২০০৮-২০১২) দায়িত্ব সামলেছেন। বেঙ্গসরকারে চাকরি ছিল সাম্মানিক। শ্রীকান্ত আসার পর থেকেই বিসিসিআই নির্বাচক প্রধানদের পারিশ্রমিক দিতে শুরু করে। মহিন্দর অমরনাথ ও সন্দীপ পাতিলের মতো নামও ছিল কমিটির মাথায়। অমরনাথের সঙ্গে তৎকালীন বিসিসিআই সভাপতি এন শ্রীনিবাসনের মনোমালিন্য হয়েছিল। অধিনায়ক হিসেবে এমএস ধোনির ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ায় ভরাডুবির পর।
আরও পড়ুন: Shane Warne Death: কোভিডের টিকার ওভারডোজে ওয়ার্নির মৃত্যু! বিস্ফোরক দাবি চিকিৎসকদের
এই মুহূর্তে প্রবল ভাবে শেহওয়াগের নাম উঠে আসছে নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে। পিটিআই এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে লিখেছে, ‘সিওএ-র সময়ে বীরুকে হেড কোচ পদের জন্য আবেদন করতে বলা হয়েছিল। তারপর প্রস্তাব যায় অনিল কুম্বলের কাছে। মনে হয় না যে, বীরু নিজে নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে আবেদন করবে। ওর মতো ভাবমূর্তির একজনের কাছে পে প্যাকেজ বড় কথা নয়। যদি আমরা উত্তরাঞ্চল নিয়ে কথা বলি, তাহলে ও ছাড়া আর কারোর নামই আসবে না। ওই মানের আর কেউ নেই। এরকম নয় যে, বিসিসিআই নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে কাউকে কম করে চার-পাঁচ কোটি টাকা দিতে পারবে না। আসলে স্বার্থের সংঘাতের কথা ভেবে বিশিষ্ট খেলোয়াড়রা নির্বাচক কমিটিতে আসতে চান না। দিলীপ ভাই যখন চেয়ারম্যান ছিলেন, তখন তাঁকে এস বদ্রিনাথ ও বিরাট কোহলির মধ্যে বেছে নিতে হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়াতে দিলীপ ভাই বদ্রিনাথ-বিরাটের কিছু ইন্ডিয়া এ গেমস দেখে বুঝে গিয়েছিলেন যে, কাকে সমর্থন করতে হবে। বাকিটা ইতিহাস। গ্রেগ চ্যাপেলের সামনেও দিলীপ ভাই নিজের অবস্থান জানিয়ে দিতে পারত।’ এখন দেখার বীরু শেষপর্যন্ত দায়িত্ব নেন কিনা!