শহর কলকাতা তথা গোটা রাজ্যের বুকেই এই ঘরনের ঘটনা বারেবারেই তৈরি করেছে চাঞ্চল্য। তবে প্রথমবার মৃতদেহ দীর্ঘ সময় ধরে আগলে রাখার যে ঘটনা তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল গোটা শহরজুড়ে তা ঘটেছিল রবিনসন স্ট্রিটে। ২০১৫ সালের ১০ জুন, রবিনসন স্ট্রিটের একটা বাড়ির শৌচালয় থেকে উদ্ধার হয় সছর ৭৭-এর এক বৃদ্ধের অগ্নিদগ্ধ দেহ। তবে পুলিশ সেই বাড়িতে যেতেই ঘটবার মোড়া ঘুরে যায়। জানা যায়, সেই বাড়ির ছেলে পার্থ দে তাঁর দিদি দেবযানী দে-এর কঙ্কালের সঙ্গে মাসের পর মাস বাস করছেন। এমনকী দিদির কঙ্কালকে খেতেও দিতেন পার্থবাবু।
দেবযানীকে প্রতিবেশীরা কোনওদিন দেখেননি
প্রতিবেশীরা জানান, প্রায় ১৫ বছর এলাকায় থাকলেও দে পরিবারের কেউই সেভাবে পাড়ায় মিশতেন না। পার্থবাবু ও তাঁর বাবাকে মাঝেমধ্যে পাড়ায় যাতায়াতের পথে দেখা গেলেও দেবযানীকে কেউই কখনও দেখেননি। প্রাথমিত তদন্তে জানা যায় মানসিক রোগে আক্রান্ত পার্থবাবু। যার জেরে পাভলভে রেখে চিকিৎসা শুরু হয় তাঁর। সেখানেও প্রথমদিকে নিজের জগতেই বুঁদ হয়ে থাকতেন তিনি। পরে অবশ্য সুস্থ হয়ে দীর্ঘ ৮ মাস পর একবার গিয়েছিলেন নিজের বাড়িতে। সেখানে পা রেখেই আবেগপ্রবণও পয়ে পড়েন পার্থ। পাভলভ থেকে বেরিয়ে মিশনারিজ অব চ্যারিটি-র একটি হোমেও ছিলেন পার্থ। এরপর খিদিরপুর এলাকার একটি ফ্ল্যাটে থাকতে শুরু করেন তিনি।
অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু পার্থর
কিন্তু ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে খিদিরপুরের ওই আবাসনেই অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার হয় পার্থ দে-এর দেহ। পাথ থেকে উদ্ধার হয় পেট্রোলের বোতল ও দেশলাই। সবচেয়ে বড় কথা নগর দায়রা আদালতে কঙ্কালকাণ্ডের চার্জ গঠনের ঠিক দুদিন আগেই মৃত্যু হয় পার্থর দে-র। যার ফলে শুনানি শুরুর আগেই শেষ হয়ে যায় বহু আলোচিত সেই মামলা। তবে পার্থ দে-এর ঘটনাই শেষ নয়, তারপর থেকেও বারেবারেই শহর কলকাতার বুকে উঠে এসেছে এমন ঘটনা।