এই সময়: রাজ্যের রাজনীতিতে এখন সবচেয়ে বড় ইস্যু শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতি। স্কুলে নিয়োগ-দুর্নীতির অভিযোগে আপাতত জেলবন্দি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ বেশ ক’জন শিক্ষাকর্তা। এ বার সেই দুর্নীতিকে হাতিয়ার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠল রাজ্যপাল-আচার্য সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে।

গত বুধবার উত্তরবঙ্গে তাঁরই নিযুক্ত উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বোস। সেখানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতি দমন কমিটি তৈরির জন্য উপাচার্যদের কার্যত নির্দেশ দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক সংস্থাগুলিকে এড়িয়ে আচার্য একক ভাবে এমন নির্দেশ এ দিতে পারেন কি না, তা নিয়ে অবশ্য অনেকেই সন্দিহান।

Kolkata High Court : হাইকোর্টে বড় ধাক্কা রাজ্যের! ‘রাজ্যপালের উপাচার্য নিয়োগের সিদ্ধান্ত বৈধ’
একটি রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য জানান, বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে একাধিক কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যপাল। তার মধ্যে রয়েছে ‘অ্যান্টি করাপশন কমিটি’-ও। উপাচার্যদের তিনি জানান, দুর্নীতির ক্ষেত্রে জ়িরো টলারেন্স নীতি নিতে হবে। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক উপাচার্য এতে সহমত হন। বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও কিছু কমিটি তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

CV Ananda Bose : দিশাহীন বিশ্ববিদ্যালয়, আজ উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠকে বোস
এই পরিস্থিতিতে শিক্ষক সংগঠন আবুটা-র তরফে অধ্যাপক তরুণ নস্করের বক্তব্য, ‘রাজ্যপালের কোনও এগজিকিউটিভ পাওয়ার নেই। তিনি এ ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়কে কমিটি তৈরির নির্দেশ দিতে পারেন না।’ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়ের বক্তব্য, ‘এই কমিটিতে কারা থাকবেন, কী ভাবে তাঁরা কাজ করবেন, এ সব ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে না পারলে প্রতিক্রিয়া দেওয়া মুশকিল। তবে সাধারণ ভাবে দুর্নীতি ঠেকাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা কমিটি, নীতি নির্ধারক সংস্থা যেমন ইসি, কোর্টে রাজ্যপালের কোনও প্রতিনিধি নেই। রাজ্য সরকারও মূলত অনুগামীদের বসিয়ে রেখেছে। সংস্থাগুলি যথাযথ ভাবে গঠিত হলে সমস্যা অনেকখানি মিটে যায়।’

CV Ananda Bose : উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপালকে কালো পতাকা! ব্যাপক বিক্ষোভ TMCP-র
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সম্পাদক সনাতন চট্টোপাধ্যায়ের মতে, ‘দুর্নীতি ঠেকাতে যে কোনও উদ্যোগই স্বাগত। তবে দেখতে হবে, এই কমিটি যেন নখদন্তহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার হাতিয়ার না হয়ে দাঁড়ায়।’ শাসকদলের অধ্যাপক সংগঠনের সদস্য তথা যাদবপুরের অধ্যাপক মনোজিৎ মণ্ডল রাজ্যপালের এই উদ্যোগকে ‘হাস্যকর’ বলেছেন। তাঁর অভিযোগ, ‘অন্তত পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্থির করতে গিয়ে ইউজিসি-র আইনের তোয়াক্কা করেননি রাজ্যপাল। দুর্নীতির উৎসাহ তো রাজভবন থেকে আসছে। এই কমিটি করার আগে আচার্য কি সে কথা মাথায় রাখবেন?’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version