প্রসেনজিত্ মালাকার: অনুব্রত মণ্ডল জেলে। তাঁর জায়গায় এবার বীরভূমে পঞ্চায়েত ভোটের হাওয়া গরম করছেন তৃণমূল নেতা কাজল শেখ। রবিবার নানুনের দাসকলে গিয়ে বিরোধীদের উদ্দেশ্য বলেছিলেন, ভোটের দিন আনাচে কানাচে দাঁড়িয়ে থাকবে হাজার হাজার কাজল শেখ। বাড়ি থেকে বের হতে পারবেন তো? মঙ্গলবার রামপুরহাটে ভোটের প্রচারে গিয়ে অনুব্রতর কায়দায় বললেন খেলা হবে।

আরও পড়ুন-‘তৃণমূল পার্টি  থেকে বলেছে তাই ভোট দিতে এসেছি’, কারচুপি পোস্টাল ব্যালটে!

রামপুরহাটের শেরপুর গ্রামে দলীয় প্রচারে এসে সংবাদমাধ্য়মের মুখোমুখি হন কাজল শেখ। সেখানেই তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন বাড়িবাড়ি পৌঁছে গিয়েছে। বিরোধীরা হুমকি দিয়ে ভোট করাতে এলে খেলা হবে। দিনের শেষ সব হিসেব বুঝে নেব। কেউ যদি ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করতে চান তাহলে খেলা হবে। রাতের অন্ধকারে কেউ যদি ভোট কিনতে চান তাহলে খেলা হবে। বছরের তিনশো পঁয়ষট্টি দিন মানুষের পাশে থাকবেন না আর আমার খেতমদুর ভাইবোনদের, আদিবাসী ভাইবোনদের বিপথে চালিত করবেন? সেটা আমরা মেনে নেব? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেসব উন্নয়ন চালু করেছেন তা স্তব্ধ করার চেষ্টা করবেন, সেটা মেনে নেব? আমরা সব ধরনের খেলা খেলতে জানি। হা ডু ডু, ফুটবল, ক্রিকেট সব খেলাই খেলতে জানি। যে খেলা খেলতে চাইবেন সেটাই খেলব। 

কাজল শেখের ওই মন্তব্য নিয়ে রাজ্য বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, বাংলার দুর্ভাগ্য এরা কারা আজ রাজনীতি করছে! একটা সময়ে ছিল যখন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা অনুকরণীয় ছিলেন। একজন বিধায়ক, সাংসদ বা জেলা পরিষদের নেতাকে দেখলে মানুষের সম্ভ্রম হতো। কিন্তু এখন দুর্ভাগ্যবশত তৃণমূল কংগ্রেস সেইসব মানুষকেই সামনে এনেছে তাদের ভাষাটা রাজনীতির ভাষা নয়। এই ধরনের কুরুচিকর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিতেও সম্মানে লাগে। এই আস্ফালন এখন চলবে। তবে নিশ্চিত থাকুন মানুষই এদের সঙ্গে খেলা করবে। মানুষ নতুন একটা সরকার পাবে।

অনুব্রতর অবর্তমানে বীরভূমে তৃণমূলের কোর কমিটিতে এসেছেন জেলার একসময়ে ডাকাবুকো নেতা কাজল শেখ। রবিবার নানুরে দলের সভায় কাজল বলেন, খেতমজুর, মধ্যবিত্ত ভাইদের সংঘবদ্ধ করে ওদের খেদিয়েছিলাম। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে নানুরে জোড়া ফুল ফুটিয়েছিলাম। সেই সময়ের অত্যাচারের কাহিনী কারও অজানা নয়। খুন, সন্ত্রাস, রাহাজানির শিকার আমিও। আমরা দুই দাদা ও বাবাকে হারিয়েছি। ওইসব লাল নিশানকে ভয় পাই না। এখনওপর্যন্ত উপরওয়ালা ছাড়া আর কাউকে ভয় পাই না। যেখানে অন্যায় হয়েছে সেখানেই রুখে দাঁড়িয়েছি। নানুরের ইতিহাস ওল্টালে দেখবেন।

বামপ্রার্থীর উদ্দেশ্যে এদিন কাজল শেখ বলেন, এই শাসপুরে যে ভাইটি বামফ্রন্টের প্রার্থী তিনি হয়তো ভাবছেন জয়ী হবেন। আসলে তিনি মুর্খের স্বর্গে বাস করছেন। আমরা এখনও বেঁচে আছি। নানুরে আমরা একা নই। আমার মতো হাজার হাজার কাজল সেখ তৈরি হয়ে গিয়েছে। তারা বাড়িতে বাড়িতে আনাচে কানাচে বসে থাকবে। ভোটের দিন দেখে নেবেন আপনারা কোন রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন। বামফ্রন্টের একটা অংশ ভেঙে গিয়েছে। সেই কুখ্যাত হার্মাদদের একাংশ আর নেই। তারা এখন বিজেপির ছত্রছায়ায় গিয়েছে। সিপিএমের হার্মাদের বলে যেতে চাই, ১৫টি অঞ্চলে আপনাদের ভোট নেই। ১৭টি অঞ্চলের মধ্যে ২টিতে ভোট আছে। আমার মতো হাজার হাজার কাজল সেখ দাঁড়িয়ে থাকবে। বাড়ি থেকে বের হতে পারবেন তো? ভোটকেন্দ্রে পৌঁছাতে পারবেন তো? মিলিয়ে নেবেন কথাটা। থাকব যখন বলে যাচ্ছি, থাকব আমি। হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে দ্বন্দ্ব লাগাতে দেব না। কোনও মায়ের কোল খালি হতে দেব না। আমি যেমন আমার ভাইকে হারিয়েছি তেমনি আর কারও ভাইকে হারাতে দেব না। যারা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করবে, যারা রক্ত নিয়ে খেলবে তাদের জন্য দাঁড়িয়ে থাকব। বিজেপি বন্ধুদের বলুন, তোমরা তো ১৮ জনকে দিল্লিতে পাঠিয়েছো। দিল্লি থেকে কী এনেছো বাংলার জন্য? তোমরা বাংলার জন্য অবজ্ঞা এনেছো।

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version