পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোননয়ন পর্বে অবাক করা ঘটনা ঘটেছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার মিনাখাঁয়। সৌদি আরবে বসে তৃণমূলের হয়ে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিলেন মইনুদ্দিন গাজি। এই ঘটনায় জল গড়ায় কলকাতা হাইকোর্ট অবধি। চাপের মুখে তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।

সেই মামলাতেই এবার গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাইকোর্টের। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল। সওয়াল জবাবের পর বিচারপতি সিনহা বলেন, ‘যে ব্যক্তি এই মনোনয়ন পত্র গ্রহণ করেছেন, তিনি খুব দায়সাড়া কাজ করছেন। এমনকী সঠিকভাবে স্ক্রুটিনির কাজও করা হয়নি। পঞ্চায়েত রিটার্নিং অফিসারের এই কাজ খুবই সন্দেহজনক।’

WB Panchayat Election Nomination: সুদূর সৌদি থেকে মিনাখাঁয় জমা মনোনয়ন! জালিয়াতির অভিযোগে বাতিল প্রার্থীপদ তৃণমূল নেতার
আদালত আরও জানায়, ‘হাইকোর্টের মনে হচ্ছে সব ঘটনাতেই তদন্ত করার প্রয়োজনিয়তা রয়েছে। সেই কারণে নির্বাচন ও মনোনয়ন সংক্রান্ত যাবতীয় নথিপত্র সংরক্ষণ করার প্রয়োজনিয়তা রয়েছে। তবে কোন তদন্তকারী সংস্থা এই তদন্ত করবে, তা পরবর্তীকালে আদালত সিদ্ধান্ত নেবে। পঞ্চায়েতের রিটার্নিং অফিসার এই মনোনয়ন গ্রহণকারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।’

এই ঘটনায় আগেই আদালতের তরফে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে রিপোর্ট পেশ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। আদালতের নির্দেশ মতো সেই রিপোর্ট এদিন পেশ করে নির্বাচন কমিশন। কলকাতা হাইকোর্টকে নির্বাচন কমিশনের তরফে বলা হয়, ‘আমরা তদন্ত করে ইতিমধ্যেই ওই প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করেছি।’

Calcutta High Court : BDO-কে নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে সরানোর দাবি, মামলা দায়েরের অনুমতি বিচারপতি সিনহার
উল্লেখ, জুন মাসের ৮ জুন পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণা করেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা। ওই মাসের ৪ তারিখ হজের জন্য সৌদি আরবে হয় করতে গিয়েছিলেন মিনাখাঁর তৃণমূল নেতা মইনুদ্দিন গাজি। মইনুদ্দিন কুমারজোল গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা। বিরোধীদের দাবি, মইনুদ্দিন নিজে মনোনয়ন পত্র জমা দেননি। তাঁর এক এজেন্ট মনোনয়ন জমা দিয়েছে বলে দাবি করে বিরোধীরা।

Panchayat Election 2023 : মনোনয়ন পর্বে অভিযুক্ত বিডিওদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নির্বাচন কমিশনের
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকে শোরগোল পড়ে যায় গোটা রাজ্য। মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় একাধিক ফর্মে সই করতে হয় প্রার্থী। তাঁর হয়ে সেই ফর্ম কে সই করল, সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন বিরোধী। এমনকী মিনাখাঁর প্রশাসনিক আধিকারিকরদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কারণ কীভাবে কোনও ব্যক্তির অনু্পস্থিতি ছাড়া মনোনয়ন জমা দেওয়া সম্ভব হল, সেই নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। আগামী দিনে আদালত এই মামলায় কোনও কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে তদন্তভার দেয় কি না, সেটাই এখন দেখার।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version