খোকা ইলিশ ধরা আইনত নিষেধ। খাতায় কলমে তো বটেই! তারপরেও প্রত্যেক বছরের মতো এ বছরও ডায়মন্ড হারবার থেকে দিঘা নানান জায়গায় সেই ছোট ইলিশ ধরার ঘটনা ঘটেছে। কয়েক সপ্তাহ আগেই রাজ্যের একাধিক বাজারে দেখা মিলেছে, ১০০ থেকে ২৫০ গ্রামের খোকা ইলিশ। কিন্তু, এই মাছ ধরা বন্ধ করা নিয়ে আইন আছে। পাশ্ববর্তী বাংলাদেশে এহেন অপরাধে হাজতবাসও হয়। তবে অভিযোগ, এ রাজ্যে এই নিয়ে খুব বেশি হেলদোল লক্ষ্য করা যায় না। দফতরের কর্তারা মানছেন, আইন সংশোধন প্রয়োজন। কড়া শাস্তি প্রয়োজন। কিন্তু, রাজ্যের মন্ত্রী ভরসা রাখছেন, সচেতনতার উপরেই!

Hilsa in Digha Mohana : বিপুল ইলিশ এল বাজারে, চমক দামেও!

ইলিশ মাছ নিয়ে কী কী নিষেধাজ্ঞা রয়েছে?

১. ২৩ সেন্টিমিটার কম মাপের ইলিশ শিকার, নিজের কাছে রাখা, বাজারজাত ও পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা।

২. ৯০ মিলিমিটারের কম মাপের কোন প্রকারের ফাঁসজল ব্যবহার করে ইলিশ ধরা যাবে না।

৩. প্রতিবছর ফ্রেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত সময়ে ইলিশের পরিযায়ী পথের উপর জাল বা ছোট মাপের ফাঁস জাল ব্যবহার করা যাবে না।

ইলিশ সংক্রান্ত নির্দেশিকা
প্রজনন ও বংশবৃদ্ধির সহায়তার জন্য প্রতিবছর ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২৪ অক্টেবর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে পূর্ণিমার ৫ দিন আগে ও ৫ দিন পরে ইলিশ ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

Hilsa Fish : ইলিশের বন্যা নামখানায়! রবিবারেই নামল ২ হাজার কেজি, দাম কমবে কবে?
জেলা মৎস দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘সরকারি বিধি হল, ৩৫০ গ্রামের নীচে ইলিশ মাছ ধরা ও বিক্রি নিষিদ্ধ। ছোট মাছ যদি ধরা পড়ে তা হলে তা বিক্রি করলে যত দাম হবে, তার অর্ধেক টাকা ট্রেজারিতে জরিমানা দিতে হবে। তা হলে আর সমস্যা নেই।’

Hilsa Fish: বৃষ্টি পড়তেই বাজারে মিলছে ইলিশ! দাম শুনে কিনবেন নাকি?
এক সময় ট্রলার থেকে বন্দরে মাছ নামানোর পর ক্রেটে ভরা হতো। এখন মাছ ধরার পর, মাঝ নদীতেই ক্রেটে ভরে বরফ চাপা দেওয়া হয়। এরপর বন্দরে ট্রলার ঢুকতেই লরিগুলিতে তুলে পাঠানো হচ্ছে বাজারে। কিন্তু চালাকি করে স্থানীয় আড়তে খোকা ইলিশ নামানোই হচ্ছে না। তা চলে যাচ্ছে কলকাতা এবং তাঁর সংলগ্ন নানা বাজারে। সম্প্রতি দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এমন বেশ কয়েক টন ছোট ইলিশ ধরা হয়। যার গড় ওজন ৫০ থেকে ১০০ গ্রাম।

জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ

মাছ ধরার মরশুম শুরু হওয়ার আগেই প্রশাসন ও মৎস্যজীবী সংগঠনগুলি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছিল, ছোট ইলিশ ধরা যাবে না। অভিযোগ, সেই কথা শোনা হয়নি। অন্যদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য় মৎস্য বিভাগের বেশিরভাগ কর্মী ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ভোটের কাজে। ফলে নজরদারিরও অভাব ঘটছে।

কী বলছে প্রশাসন?

দক্ষিণ ২৪ পরগনার এডিএফ (মেরিন) পিয়াল সর্দার এই সময় ডিজিটালকে বলেন, ‘ আমরা সচেতনতা বাড়ানোর জন্য যা যা করার করেছি। মৎসজীবীরা সচেতন না হলে, মানুষ সেই মাছ কিনলে আমরা কী করতে পারি! সব চেষ্টাই বৃথা হয়।’ মৎস দফতরের কর্তারা বলছেন, এ রাজ্যে এই সংক্রান্ত আইন দুর্বল। তার ফাঁক গলে সবাই পার পেয়ে যায়। বাংলাদেশে এই ধরনের ক্ষেত্রে ব্যাপক ধরপাকড় চলে। রাজ্যের মৎস মন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী দাবি করেছেন, ‘ধড়পাকড়ে অনেক সমস্যা আছে। আমরা সচেতনতার উপর জোর দিয়েছি। ভালো ফলও পাচ্ছি।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version