এদিন নিয়ম মতো নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের মামলার শুনানিতে হাজিরা দিতে এসে গাড়ি থেকে নামতে নামতেই প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর মুখে শোনা যায় ক্ষোভের সুর। বলেন, ‘কোনও বিচারই হচ্ছে না।’ বন্দিদের মুক্তি নিয়ে যারা কাজ করেন তাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আমি এক বছরের উপর বিনা বিচারে জেলে আটকে আছি, তাদের এব্যাপারে কোনও হুঁশ নেই। এদিকে আন্দোলন করে বেড়ায়।’
এখানেই শেষ নয়, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ক্ষোভ প্রকাশ করলে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, ‘এর মধ্যে বড়সড় কোনও ষড়যন্ত্র রয়েছে কিনা?’ উত্তরে তিনি বলেন, কে কী বলল, আমার যায় আসে না। আমি শুধু এটুকু বুঝে গিয়েছি, আমাকে জোর করে আটকে রাখা হয়েছে।’ এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে আলিপুর স্পেশাল সিবিআই আদালতের ১২ নম্বর এজলাসে তোলা হয়।
এক বছর জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এখন যেকোনও শর্তে জামিন পেতে মরিয়া বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক। এবার তাঁর হয়ে মামলা লড়তে চলেছেন দিল্লির আইনজীবী আর সামসুদ্দিন। তিনি এর আগে কেন্দ্রীয় এজেন্সির ইডি-র হয়ে মামলা লড়েছেন। তবে এবার তাঁর লড়াই কেন্দ্রীয় এজেন্সির বিরুদ্ধেই।
গত বছর ২১ জুলাইয়ের সভার পরের দিনই প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী ও প্রাক্তন তৃণমূল মহাসচিবের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। রাতভর তল্লাশির পর বিভিন্ন নথির ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীকে। গ্রেফতার হন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ও। অর্পিতার দুটি ফ্ল্যাট থেকে মেলে নগদ কোটি কোটি টাকা। কলকাতার দক্ষিণ ও উত্তরের দুটি ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে মোট ৫০ কোটির উপর নগদ টাকা উদ্ধার হয়। এছাড়া প্রচুর গয়না, মূল্যবান রত্ন, বিদেশি মুদ্রা সহ আরও প্রায় ৫০ লাখ টাকার জিনিস উদ্ধার হয়।
উল্লেখ্য, পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের যৌথ মালিকানায় একাধিক সম্পত্তির সঙ্গে শান্তিনিকেতনে একটি বাড়িরও উল্লেখ করা হয়। বাড়িটির নাম ‘অপা’। পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা জেলবন্দি হওয়ার পর বন্ধ ওই বাড়ির কর্মচারীদের বেতন। বিদ্যুৎ বিল বকে থাকায় কেটে দেওয়া হয়েছে লাইন।