এই সময়, দত্তপুকুর: বছরের পর বছর ধরে কার্যত জতুগৃহ ছিল দত্তপুকুর থানার মোচপোল গ্রাম। গত রবিবারের বিস্ফোরণে ৯ জনের প্রাণের বিনিময়ে অবশেষে টনক নড়েছে পুলিশ প্রশাসনের। টানা তিনদিনের তল্লাশিতে ৬০ টনেরও বেশি নিষিদ্ধ শব্দবাজি উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার উদ্ধার হওয়া বাজি বারাসতের ময়নায় ডিএসপি ট্র্যাফিক অফিসে ডাঁই করা হয়েছে। সেখানেই এ দিন বম্ব স্কোয়াড ও পুলিশের উপস্থিতিতে দমকলের কর্মীরা জল দিয়ে সেই বিপুল পরিমাণ বাজি নিষ্ক্রিয় করেন। পরে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট কর্পোরেশনের সহযোগিতায় এগুলিকে বোল্ডার হিসেবে তৈরি করা হবেও বলে জানা গেছে। বারাসত পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিশ্বচাঁদ ঠাকুর বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত ৬০ টনের বেশি বাজি উদ্ধার করা হয়েছে।’

Duttapukur Blast : ফের সেই দত্তপুকুর! বিস্ফোরণস্থলের অদূরেই বিপুল শব্দবাজি উদ্ধার
রবিবারের বিস্ফোরণের পর এখনও স্বাভাবিক হয়নি মোচপোল গ্রাম। বিভিন্ন জায়গায় মজুত রয়েছে নিষিদ্ধ শব্দবাজি। ঘটনাস্থলের কিছুটা দূরেই রয়েছে দু’টি লোহার শাটার দেওয়া গোডাউন। আর তার ভেতরে রয়েছে বস্তা বস্তা বাজি। ভিন রাজ্যে পাঠানো চাল, ডালের বস্তায় যেমন লেখা থাকে, ঠিক সে ভাবে বস্তার গায়ে লিখে রাখা হয়েছে। দত্তপুকুরে একটি আধুনিক ল্যাবরেটরির হদিস মিলেছিল বিস্ফোরণের দিনই। এ বার তার থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে রাসায়নিক সামগ্রীর একটি গোডাউনের খোঁজ মিলল বুধবার। সেখানেও ডাঁই করে রাখা শতাধিক ড্রাম বোঝাই তরল রাসায়নিক।

Duttapukur Blast : পলাতক মোহিতই সাম্রাজ্যের বাজিকর, দত্তপুকুরের বাজির ব্যবসার মাস্টারমাইন্ড!
উঁচু পাঁচিল ঘেরা বাড়ির সামনের গেটটাও লোহার। বাড়ির মালিক বিষ্ণুপদ দাস। বাড়ির ভিতরেই গোডাউনে মজুত বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক। বিস্ফোরণের পর রাসায়নিক বোঝাই এই গোডাউন নিয়ে ক্ষোভও রয়েছে স্থানীয়দের। গোডাউনের মালিক বিষ্ণুপদ বলেন, এই সমস্ত সামগ্রীর মালিক অন্য কেউ। তিনি মাসিক সাত হাজার টাকার বিনিময়ে জায়গা ভাড়া দিয়েছেন। তবে গুদামের লাইসেন্স বা ফায়ার লাইসেন্স কিছুই নেই বলে স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি।

Duttapukur Blast News : ‘বাজি বিস্ফোরণ নয়, যা হয়েছে গ্যাস সিলিন্ডার…!’ দত্তপুকুরকাণ্ডে ‘আজব’ দাবি কেরামতের স্ত্রীর
এ দিকে বাজি বিস্ফোরণে মৃত কেরামত আলির প্রথম পক্ষের স্ত্রী রুবি বিবি বলেন, ‘আমার সঙ্গে দীর্ঘদিন সম্পর্ক ছিল না স্বামীর। দ্বিতীয় বিয়ে করার পর শুধু ছেলের সঙ্গে কথাবার্তা হতো।’ কেরামতের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী জুমেলা বিবিও বলেন, ‘আমাকে সব গোপন রেখেই এই কাজ করত ও। স্বামীর বাজি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আব্দুল মোহিত।’ তবে বিস্ফোরণের চার দিন পরেও সরকার কোনও সহায়তা ঘোষণা না করায় ক্ষোভ বাড়ছে স্থানীয়দের মধ্যে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version