এই সময়: রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগে রাজ্যপাল-আচার্যর একতরফা সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে প্রয়োজনে রাজভবনের বাইরে ধর্নায় বসার কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আপাতত তিনি ধর্না না-দিলেও আচার্য-রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে ১০-দফা দাবিতে রাজভবনের উত্তর গেটের উল্টোদিকে শুক্রবার নীরব অবস্থান ও প্রতিবাদে সামিল হলো ‘দ্য এডুকেশনিস্টস ফোরাম’। এই ফোরামের অধিকাংশ সদস্যই আবার রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রাক্তন উপাচার্য। পরে রাজভবনের উত্তর গেটে গিয়ে পুলিশের হাতে তাঁরা স্মারকলিপি তুলে দেন। রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতের আবহে বৃহস্পতিবার সকালে রাজ্যপালের ভিডিয়ো বার্তা এই দ্বন্দ্বে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

CV Ananda Bose : সংঘাত-বৃত্তে শিক্ষামহলও, ভিডিয়ো-বার্তায় প্রাক্তন ভিসিদের নিশানা বোসের
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এদিন আন্দোলনকারী শিক্ষাবিদদের সমর্থনে বলেন, ‘আগের উপাচার্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, রাজনৈতিক কাজকর্ম এবং ছাত্রী নিগ্রহের মতো গুরুতর অভিযোগ করা হয়েছে রাজ্যপালের ভিডিয়ো বার্তায়। কিন্তু সেই অভিযোগ সম্পর্কে উচ্চশিক্ষা দপ্তরকে আগে কি তিনি কিছু জানিয়েছিলেন? যে উপাচার্যদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ, তাঁদেরই বা কেন তিনি কিছু জানাননি? কেন তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি অথবা অন্য কোনও ব্যবস্থা নেননি?’ আচার্য-রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে ব্রাত্য জানান, শুধু বাংলা ভাষা ব্যবহার করে সংবিধান বিরোধী ভিডিয়ো বার্তা দিলেই হবে না। বাংলা ভাষা ব্যবহার করে রাজ্যপাল আসলে বাংলা কৃতী শিক্ষাবিদ, উপাচার্য, বাংলার বর্তমান মেধা ও পণ্ডিতদের অপমান করেছেন। বাঙালি শিক্ষাবিদদের পরিচিতি সারা দেশ ও পৃথিবীতে ছড়িয়ে আছে। কিছু মনগড়া অভিযোগ করে বাংলার শিক্ষা জগতকেই রাজ্যপাল অপমান করেছেন।

Governor of West Bengal: ‘রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সভার বিদূষককে রাজ্যপাল করে পাঠিয়েছে…’, সিভি আনন্দ বোসকে কটাক্ষ ব্রাত্যর
এদিন রাজভবনের বাইরে প্রতিবাদে সামিল কবি সুবোধ সরকার বলেন, ‘আমি উপাচার্য নই, উপাচার্য হবও না। তবুও রাস্তায় নামতে বাধ্য হলাম। কারণ, একজন অধ্যাপক হিসাবে মনে করি, রাজ্যপাল যা করছেন, তাতে ইউজিসি-র নিয়মই মানছেন না।’ তাঁর সংযোজন, ‘নিশুতিরাতে উনি এঁকে ওঁকে উপাচার্য করছেন। কাউকে ভিসি করার পর আবার তাড়িয়েও দিচ্ছেন। এটা বিচিত্র। স্বাধীনতার পর এরকম ঘটনা আমরা দেখিনি। এ রকম উদ্ভট কাণ্ড কোনও রাজ্যপাল করতে পারেন, ভাবতে পারি না।’ এদিনের কর্মসূচিতে ছিলেন শিবাজীপ্রতিম বসু, উদয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়, গৌতম পাল এবং অভীক মজুমদাররা।

Bikash Bhawan : কার হুমকিতে ইস্তফা? ভিসিদের থেকে জানতে চায় শিক্ষা দফতর
এদিনের কর্মসূচি নিয়ে ওমপ্রকাশ মিশ্র বলেন, ‘আমরা আগেই ঘোষণা করেছিলাম, রাজ্যের ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের যিনি আচার্য, তাঁকে খোলা চিঠি দেবো। বাংলার কৃতী শিক্ষাবিদরা এখানে এসেছেন। আমরা কোনও মাইক ব্যবহার করছি না। কোনও ধর্নাও নয়। আমাদের প্রতিবাদ, বিক্ষোভ, চিঠি এখানে তুলে ধরতে এসেছি।’ তিনি বলেন, ‘এতে অভিযোগ করা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালন প্রক্রিয়া নিয়ে সরাসরি মিথ্যা কথা বলেছেন রাজ্যপাল। অবিলম্বে রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় আইন মেনে অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ, স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের সার্চ কমিটিতে সই এবং সার্চ কমিটিতে অবিলম্বে আচার্যের প্রতিনিধি মনোনীত করতে হবে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version