এই সময়: নতুন ফ্ল্যাট তৈরির জন্য খোঁড়া হয়েছে ছোট ছোট গর্ত। কিন্তু তারপর কাজ বন্ধ। বৃষ্টির জল জমে সেই গর্তে বংশবিস্তার করছে মশা। অথচ, কারও কোনও নজর নেই। ছবিটা সুভাষনগরের। হনুমান মন্দিরের উল্টোদিকে বাগজোলা খালের পাড় বরাবর পড়ে রয়েছে বাতিল হয়ে যাওয়া বোতল থেকে শুরু করে ঘট, প্লাস্টিকের বোতল, কন্টেনার। সেগুলিও এখন মশার লার্ভার আদর্শ ধাত্রীভূমি।

উপরের দু’টি এলাকা দক্ষিণ দমদম পুরসভার আওতাধীন। পরিসংখ্যান বলছে, গত তিন মাসে ২৭৮টি নতুন ফ্ল্যাটের অনুমোদন দিয়েছে পুরসভা। সুভাষনগরের মতো এলাকায় অধিকাংশ ফ্ল্যাটের নির্মাতা মশা জন্মানোর পরিবেশ তৈরি করেছেন বলে অভিযোগ। ফলে সুভাষনগর, শ্যামনগর, মতিঝিল, সাতগাছি, মধুগড়, পূর্ব সিঁথি, জপুর এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি।

Dengue Fever : দক্ষিণ ছাড়িয়ে উত্তরেও সংক্রমণ বাড়ছে ডেঙ্গির
পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে খবর, চলতি বছরের শুরু থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই পুর-এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্ত ৪৬৭ জন। এর মধ্যে ৬৫ শতাংশই এই সাতটি এলাকার। দক্ষিণ দমদম পুরসভায় চলতি বছর ডেঙ্গিতে যে পাঁচ জন মারা গিয়েছেন, তাঁরা সকলেই এই এলাকার বাসিন্দা। এই এলাকাগুলির উপর দিয়ে গিয়েছে বাগজোলা খাল। নির্মীয়মাণ আবাসনের ৮০ শতাংশই তৈরি হচ্ছে এই চত্বরে। এই তল্লাটে রয়েছে ছ’টি বস্তিও। সেখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে জল জমিয়ে রাখার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি।

Dengue in Kolkata : ফের দমদম! ডেঙ্গির বলি এবার স্কুল ছাত্রী, আতঙ্কে স্থানীয়রা
পুরকর্তারা বাসিন্দা এবং প্রোমোটারদের সচেতনতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেও পাল্টা বক্তব্য, মশা মারার তেল সে ভাবে দেওয়া হচ্ছে না। বাড়ি-বাড়ি জমা জলের খোঁজে লোকজনও আসেন না। পূর্ব সিঁথির বাসিন্দা মানসী চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘যে প্রোমোটারেরা জল জমিয়ে রাখছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলেই এই পরিস্থিতি। রাস্তাঘাটে আবর্জনা দেখেই বোঝা যায় পুরসভার কাজের নুমনা।’ শ্যামনগর মোড়, মধুগড়, পূর্ব সিঁথির একাধিক রাস্তায় দুপুর আড়াইটের সময়েও জঞ্জাল পড়ে থাকা দেখা গিয়েছে। অনেকে বলছেন, দমদম রোড থেকে শুরু করে গলির ভিতরের রাস্তাও মেরামত না হওয়ার কারণে গর্ত তৈরি হয়েছে, যা মশার বংশবৃদ্ধিতে সাহায্য করছে।

Dengue Fever : সাত দিনের শিশুকে রেখে ডেঙ্গির বলি মা, মৃত ছাত্রীও
পুরসভার অবশ্য দাবি, প্রতিদিনই সকালে জঞ্জাল সংগ্রহের জন্য গাড়ি পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানে বাসিন্দারা জঞ্জাল না ফেলে রাস্তায় ফেলেন। প্রতিদিন ১০টা বাড়িতে অভিযানে গেলে চারটে বাড়িতেই ফ্রিজের ট্রে, ছাদে থাকা টবে জমা জলে মশার লার্ভা মিলছে। পুরসভার চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিল (স্বাস্থ্য) সঞ্জয় দাসের বক্তব্য, ‘বাগজোলা খালের দু’পাশকে অনেকেই ডাস্টবিন ভেবে নানা জিনিস ফেলেছেন। দমদম মেট্রো এবং রেল স্টেশনের কাছাকাছি হওয়ায় এই তল্লাটে নির্মাণের সংখ্যা বেশি। সেখানেও মশা জন্মাচ্ছে।’ ইতিমধ্যেই ৫০ জনকে নোটিস পাঠিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। বাড়তি নজরদারিও চলছে। তবে মানুষ সচেতন না সংক্রমণ কমানো সম্ভব নয় বলে দাবি সঞ্জয়ের।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version