সেই চিঠি পৌঁছেছে দিল্লিতে, সেন্ট্রাল জু অথরিটির অফিসে। চিঠি প্রাপ্তির কথা স্বীকারও করলেও লোকবলের অভাবে এখনও রাজ্য বনদপ্তরের ওই আবেদনে সারা দেওয়া সম্ভব হয়নি বলে স্বীকার করে নিয়েছেন কেন্দ্রীয় ওই বন্যপ্রাণী সংস্থার এক শীর্ষ কর্তা। কোচবিহার বনদপ্তরের এডিএফও বিজনকুমার নাথ বলেন, ‘কবে চিতাবাঘ আসবে সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে এখনই বলা সম্ভব নয়। তবে আমরা নতুন অতিথিদের জন্য রসিকবিলের এনক্লোজারে নাইট শেল্টার তৈরির কাজ শেষ করেছি।’
১৭০০ হেক্টরের বেশি জমি নিয়ে রসিকবিল প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্রটি গড়ে ওঠে বাম আমলে। আটিয়ামোচর, রসিকবিল ও নাগুরহাট এই তিনটি বিট ঘিরে তৈরি হয় এই প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্র। নানা প্রজাতির পাখির টানে পর্যটকরা রসিকবিলে বেড়াতে আসেন৷ পর্যটনকেন্দ্রের বিভিন্ন এনক্লোজারে রয়েছে হরিণ, অজগর, ঘড়িয়াল। তবে এখানকার মূল আকর্ষণ চিতাবাঘ।
এনক্লোজারে এখন দু’টি মাদি চিতাবাঘ রিমঝিম ও গরিমা রয়েছে। তবে পর্যটকরা তাদের খুব বেশি দেখতে পান না। এনক্লোজারের হাঁটু জঙ্গলে মুখ গুঁজে নিজেদের লুকিয়ে রাখে তারা। তাদের সেই বুনো অভ্যাস কাটাতে দুই পুরুষ সঙ্গীকে আনার কথা ভাবা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বনকর্তারা। ১৯৯৫ সালে কোচবিহারের তুফানগঞ্জে গড়ে ওঠা রসিকবিল প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্রকে ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয় বন দফতর।
আরও বেশি পর্যটক টানতে ২০০৮ সালে গড়ে ওঠে চিতাবাঘের এনক্লোজার। সেই এনক্লোজারেই রয়েছে গরিমা ও রিমঝিম। চিতাবাঘ দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা বনকর্মীরা জানিয়েছেন, দুই মাদি চিতাবাঘের জন্য এখন প্রতি দিন পাঁচ কেজি মাংস দেওয়া হয়। নতুন সঙ্গীরা এলে বাড়বে খাবারের পরিমাণ। তুফানগঞ্জের ওই রসিকবিল অসম লাগোয়া।
কামাক্ষ্যাগুড়ি রেলস্টেশন থেকে সাত কিলোমিটার দূরে। আলিপুরদুয়ার জেলা থেকে দূরত্ব ৭৪ কিলোমিটার। ফলে রসিকবিলে চিতাবাঘের সংখ্যা বাড়লে পর্যটকরা আরও বেশি ভিড় করবেন বলে মনে করছে বনদপ্তর। উত্তরবঙ্গের বন্যপ্রাণ শাখার মুখ্য বনপাল ‘রসিকবিল ও ঝাড়গ্রাম মিনি জুয়ের জন্যে দু’টি করে পুরুষ চিতাবাঘ প্রয়োজন।
দক্ষিণ খয়েরবাড়ি চিতাবাঘ পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে তাদের পাঠানো হবে। সব পরিকল্পনাই নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেন্ট্রাল জু অথরিটির অনুমোদন হাতে না আসা পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না যে কবে দুই জায়গায় পুরুষ চিতাবাঘদের পৌঁছনো সম্ভব হবে।