এই সময়: দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে লাগানো হোর্ডিংয়ের কারণে শহরে দৃশ্যদূষণ, বায়ুদূষণ ঠেকাতে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সেগুলি খুলতে শুরু করেছে কলকাতা পুরসভার বিজ্ঞাপন বিভাগের কর্মীরা। উদ্যোক্তারাও সামিল হয়েছেন একাজে। একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ওই হোর্ডিংগুলোকে পুনরায় ব্যবহারের উপযোগী করে তোলার কাজও শুরু হবে শীঘ্রই।

দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ পুজোর আগেই কলকাতা পুরসভার সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল। ওই বৈঠক থেকেই পুরসভাকে অনুরোধ করা হয়েছিল, দশমীর পর থেকেই হোর্ডিং খোলার কাজ শুরু করার। যে এজেন্সিরা হোর্ডিং লাগিয়েছে, তাদের পাশাপাশি পুরসভার কর্মীদের একাজে নামানোর কথা বলেছিল পর্ষদ।

দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের এক কর্তা রবিবার বলেন, ‘পুরসভাকে আমরা অনুরোধ করেছিলাম, পুজো মেটার সঙ্গে-সঙ্গে হোর্ডিংগুলি খুলে পুনরায় ব্যবহারের ব্যবস্থা করতে। কেননা, এগুলি পরিবেশের জন্য বিপজ্জনক।’ নির্দিষ্ট সময়ের পরেও এই হোর্ডিংগুলি না খোলার কারণে গাড়ি চালকরা সিগন্যাল দেখতে না পাওয়ার অভিযোগে সরব হন ফি বছর। হোর্ডিং খুলে পড়ার কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও থেকে যায়।

লালবাজারেও পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে তৎপর হওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে বৃহস্পতিবার। যে তৎপরতার সঙ্গে কাজ চলছে তাতে আগামী সপ্তাহের মধ্যেই ৯০ শতাংশ হোর্ডিং, ব্যানার খুলে ফেলা সম্ভব হবে বলে দাবি পুর কর্তাদের। পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তর বক্তব্য, ‘শুধু হোর্ডিং দ্রুত খুলে পুনরায় ব্যবহারের উপযোগী করে তুললেই হবে না। হোর্ডিং লাগানোর সময় গাছের কোনও ক্ষতি করছে কিনা সেদিকে নজর রাখাটাও জরুরি।’

একইসঙ্গে সুভাষের আর্জি, ‘শহরের সমস্ত জায়গা থেকে পুজোর হোর্ডিং না সরালে পরিবেশের ক্ষতি ঠেকানো যাবে না।’ হোর্ডিং সময়ে না খুললে কতটা ক্ষতি হতে পারে? পরিবেশ বিজ্ঞানী স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী বলেন, ‘পুজোয় যে হোর্ডিংগুলি রয়েছে সেগুলি কিছুদিনের মধ্যেই খুলে পড়ে এবং তা পশুপাখিরা খাবার মনে করে খেতেও শুরু করে। কিন্তু, এই হোর্ডিংয়ের মধ্যে স্টাইরিন এবং পলিভিনাইল ক্লোরাইড থাকে। যা ফুসফুসের ক্ষতি করে। ক্যান্সার, কিডনিরও সমস্যা দেখা দেয়।’

Diwali 2023 : মুচলেকা দিয়েই সবুজ বাজি বেচতে হবে বঙ্গে
তাছাড়া, এগুলি অনেক সময়েই পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পোড়ানোর সময়ে বায়ুমণ্ডলে নানা ধরনের বিপজ্জনক গ্যাস মেশে। যা প্রবল পরিমাণে দূষণ ছড়ায় বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। কলকাতা পুরসভার এর কর্তার বক্তব্য, ‘দূষণ ঠেকাতেই এবার পুজোর হোর্ডিং দ্রুততার সঙ্গে খুলে তা পুনরায় ব্যবহারের উপযোগী করে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মাসখানেকের মধ্যেই পুরো প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে যাবে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version