কালীপুজোর পর থেকে শহরে আরও বাড়তে শুরু করেছে দূষণ। দেশের অন্যান্য অনেক মেট্রো সিটিকে পিছনে ফেলে দেশের প্রথম পাঁচে নাম উঠে এসেছে কলকাতার। পাশাপাশি হাওড়া সহ অনেক জেলাতেই দূষণ ক্রমেই বেড়েই চলেছে। চলতি সপ্তাহের সোমবার বায়ুদূষণ মাত্রার নিরিখে চতুর্থ স্থানে উঠে আসে কলকাতা। শীতকালে এই দূষণ আরও বাড়তে পারে বলে অনেকের আশঙ্কা। দিল্লির মতো কলকাতার পরিস্থিতিও হবে না তো? ভয় বাড়ছে।

এমন দূষিত বায়ুতে শ্বাস নিলে যে ফুসফুসের হাল খারাপ হবে তা বলাই বাহুল্য! একসময় শ্বাসকষ্টের সমস্যাতেও পড়তে হতে পারে। এই ভয়ানক সমস্যা থেকে বাঁচতে ইতিমধ্যেই চিকিৎসকদের দ্বারস্থ হচ্ছেন অনেকে। কিন্তু এর সমাধান কি নেই? অনেকেরই প্রশ্ন।

গাছ কাটাই যে দূষণের অন্যতম বড় কারণ তা এক বাক্যে মানছেন সকলেই। বন দফতরের কর্তা থেকে উদ্ভিদ বিজ্ঞানের বহু অধ্যাপকরা বলছেন, ‘গাছ লাগানোর মানসিকতা এখন থেকে গড়ে তুলতে হবে। তবে হয়ত, আগামী দিনে নতুন প্রজন্মের জন্য খানিকটা ভালো মানের বাতাস আমরা রেখে যেতে পারব।’

দূষণ কমাতে নিম গাছের জুড়ি মেলা ভার

রাজ্যের প্রাক্তন প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) প্রদীপ ব্যাস

কোন কোন গাছ লাগানোর পরামর্শ বন দফতরের কর্তাদের? নিম, বকুল, মেহগনি, বট, আম, কাঁঠাল, অর্জুনের মতো গাছ লাগানো ভালো বলেই মত বন কর্তাদের। কেন? এই গাছগুলি বেশি মাত্রায় বিষাক্ত পদার্থ শোষণ করতে পারে। উচ্চ বায়ু দূষণ সহনশীলতা সূচক (Air Pollution Tolerance Tndex) এই গাছগুলি ধূলিকণা ঠেকাতেও সাহায্য করে। বাতাসে অক্সিজেন ছাড়া অন্যান্য গ্যাস ও ধূলিকণার পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে বায়ু দূষিত হয়। প্রতিনিয়ত জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও নির্বিচারে গাছ কাটার কারণে সবটুকু CO2 গাছ শোষণ করতে পারছে না। ফলে বাতাসে CO2 এর মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়াও শিল্প-কারখানা, ইট ভাটার চিমনি এবং মোটরযান হতে নির্গত- ধোঁয়া, বর্জ্য, বিভিন্ন গ্যাসের মাধ্যমেও বায়ু দূষিত হচ্ছে।

বনকর্তাদের পরামর্শ, বড় পাতা থাকা যেকোনও গাছই দূষণ কমাতে খুব ভালো কাজ করে। গাছের আয়ুও ৮০ বা ১০০ বছর। তবে আবাসন বা শহরের ক্ষেত্রে সে ধরনের গাছ লাগানো খানিকটা ঝুঁকিপূর্ণ। সেক্ষেত্রে দেবদারুর মতো গাছ লাগানোই ভালো। রাজ্যের প্রাক্তন প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) প্রদীপ ব্যাস বলেন, ‘দূষণ কমাতে গাছ লাগানো ছাড়া বিকল্প সত্যিই খুব কম আছে। শুধু গাছ লাগানো না, গাছ বাঁচিয়ে তুলতেও বদ্ধ পরিকর হতে হবে। সরকারের প্রয়োজনে নিয়ম-নীতি গড়ে তুলুক, গাছ লাগিয়ে সংশ্লিষ্ট ক্লাব বা আবাসনের কমিটি সেই গাছের দেখভাল করুক। গাছ দত্তক নেওয়ার মতো পলিসিও তৈরি করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘দূষণ কমাতে নিম গাছের মতো ভালো কিছু নেই।’

বন দফতর থেকে বনমহোৎসবের সময় বিনামূল্যে বিভিন্ন গাছের চারা দেওয়া হয়। এছাড়াও শহরে বা জেলায় থাকা দফতরের নার্সারি থেকে যেকোনও সময় সুলভে গাছ কেনা যাবে। নিজের স্বার্থে একবার কিন্তু ঢুঁ মারতেই পারেন আপনার শহরে থাকা যেকোনও নার্সারিতে!



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version