নাম ঠিকানা সবই আছে। রয়েছে ফোন নম্বরও। সেই মতো এটিমএম কার্ডও এসেছে ঠিকানায়। আর সেই এটিএম কার্ড হাতে নিয়েই ফাঁপড়ে পড়েছেন গ্রাহকরা। তাঁদের মাথায় এখন আকাশ ভেঙে পড়েছে। পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের কালনা গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনায় গোটা গ্রামে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

কী ঘটনা?

এটিএম কার্ড পাওয়া গ্রামবাসীদের অধিকাংশদের দাবি, নাম ঠিকানা তাঁদের হলেও ব্যাঙ্কে তাঁরা অ্যাকাউন্ট খোলেননি। গ্রাম থেকে প্রায় ৩০ কিমি দূরে বর্ধমান শহরে যে বেসরকারি ব্যাঙ্কের শাখা রয়েছে, তা চোখেও দেখেননি গ্রাহকদের অনেকে। অথচ সেই ব্যাঙ্ক থেকে তাঁদের পাঠানো হয়েছে এটিএম কার্ড। গ্রামবাসীদের দাবি, এটিএম কার্ডে নাম ও ঠিকানা ঠিক থাকলেও সেখানে ছাপানো ফোন নম্বর তাঁদের নয়। অধিকাংশ মোবাইল নম্বরের কোনও অস্তিত্ব নেই। এটিএম কার্ড প্রাপকদের দাবি, তাঁদের নাম ও সই নকল করে তাঁদের অজান্তে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। গ্রামবাসীদের আরও অভিযোগ, এটিএম কার্ড পাওয়ার পর স্থানীয় প্রশাসন ও ব্যাঙ্কে গেলেও কোনও সুরাহা হয়নি। গ্রামবাসীরা মনে করছেন, তাঁদের বিপদ ক্রমেই বাড়ছে।

লুকিয়ে কোন রহস্য?

ঘটনার সূত্রপাত মাস পাঁচ ছয় আগে। হঠাৎই একজন ক্যুরিয়ার বয় এক ব্যাগ এটিএম কার্ড নিয়ে কালনা গ্রামে হাজির হন। কার্ড ভর্তি খামের উপর গ্রাহকের নাম ঠিকানা মিললেও ফোন নম্বর মিলছিল না। কুরিয়ার সংস্থার প্রতিনিধি খামের উপরে থাকা ফোন নম্বরে ফোন করে দেখেন, অধিকাংশরই কোনও অস্তিত্ব নেই। ব্যাগ ভর্তি এটিএম কার্ড খুলতেই গ্রামের বাসিন্দারা তো অবাক হয়ে যান। গ্রামবাসীদের দাবি, বর্ধমান শহরে কার্জন গেটের পাশে থাকা ওই ব্যাঙ্কের শাখায় তাঁরা কখনও যাননি। তাঁদের দাবি ব্যাঙ্কে গেলে জানানো হয়েছে, সেই ব্যাঙ্কে তাঁদের নামে অ্যাকাউন্ট রয়েছে বলেই কার্ঠ পাঠানো হয়েছে। এমনকী এক গ্রামবাসীর নামে থাকা অ্যাকাউন্ট থেকে মোটা টাকা এক বছরে লেনদেন হয়েছে বলে জানতে পারেন গ্রামবাসীরা। এমনকী ব্যাঙ্কের পাশবুকেও দেখা গিয়েছে গ্রামবাসীদের ছবি। তবে সেই ছবি অদ্ভূত। ছবিতে কেউ বাড়িতে রান্না করছেন, কেউ আবার ১০০ দিনের কাজ করছেন।

Jamtara Gang : জামতাড়া গ্যাং-এর নয়া ফন্দি! টাকা হাতিয়ে সোনায় ইনভেস্ট
শুরু রাজনৈতিক চাপানউতর

আর এই ঘটনার জন্য তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে বিরোধীরা। বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, ‘দক্ষিণ দামোদর এলাকায় যেমন প্রচুর পরিমাণে ধান উৎপাদন হয়। অনেক রাইসমিলও রয়েছে। মিল মালিক ও তৃণমূল নেতারা যোগসাজশ করে অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। তদন্ত হলে রহস্য বের হবে।’

অভিযোগ অস্বীকার তৃণমূলের। খণ্ডঘোষ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ অপার্থিব ইসলাম বলেন, ‘এই ধরনের কোনও ঘটনার কথা আমার জানা নেই। যদি কিছু হয়ে থাকে তাহলে তদন্তের মাধ্যমে তা প্রকাশ্যে আসবে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version