নিখাদ মনের মানুষ চেয়েছিলেন বিধায়ক। তাই রাজনৈতিক পরিচয় গোপন রেখে পাত্র খুঁজছিলেন। কেউ গায়ের রং যাচাই করেছিলেন, কেউ আবার উচ্চতা। কিন্তু, মনের খোঁজ নেওয়া প্রাথমিক স্কুলের অঙ্কের শিক্ষককেই মনে ধরে পূর্ব বর্ধমানের রায়নার বিধায়ক শম্পা ধাড়ার।

তখনও হরিপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক গজানন রায় জানতেন না হবু স্ত্রী MLA। কিন্তু, ততক্ষণে শম্পার সঙ্গে মন দেওয়া নেওয়া হয়ে গিয়েছে। মাত্র তিন দিন আগেই বিয়ে সেরেছেন তাঁরা। দায়বদ্ধতার জন্য শম্পা চলে এসেছেন বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে যোগ দেওয়ার জন্য। অন্যদিকে, স্কুলে যোগ দিয়েছেন গজানন। স্ত্রী MLA, জানার পর কী প্রতিক্রিয়া ছিল?

শুক্রবার গজাননকে পাওয়া গেল স্কুলে। বিয়ের পরেই স্কুলে যোগ দিয়েছেন অঙ্কের এই শিক্ষক। দেখাশোনা কী ভাবে হল? দাম্পত্য জীবনই বা কেমন কাটছে? মুখ খুললেন এই সময় ডিজিটাল-এ।

শম্পা বিধায়ক-তিনি প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক, পেশার এই বৈপরিত্য কখনও তাঁদের সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি বলে দাবি করেন গজানন। তাঁর কথায়, ‘আমাদের মধ্যে বোঝাপড়া রয়েছে। MLA-রাও তো প্রেম-বিয়ে করে। ও আমাকে চোখে হারায়। তবে প্রথমে দেখাশোনার সময় জানতাম না ও বিধায়ক।’

শম্পা ও গজাননের বিয়ে

শম্পা জানান, তাঁর বিধায়ক পরিচয় জেনে কেউ জীবনসঙ্গী হোক তা তিনি চাননি। আসলে খড় কেটে, ধান রুয়ে তাঁর বড় হয়ে ওঠা। এমন কাউকে তিনি জীবনে চেয়েছিলেন যাঁর মাটির সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। আর সেই সময়ই আসে গজাননের সম্বন্ধ। যোগসূত্র গজাননের দাদা।

গজানন বলেন, ‘আমাদের দেখাশোনার সময় শুধু উচ্চতাই মেপে দেখা হয়েছিল। কারণ শম্পা অত্যন্ত লম্বা (লাজুক হেসে)। তারপর সব ঠিক হল। আমি শিক্ষক ও বিধায়ক এসব ভাবলে তো আর দাম্পত্য হয় না! আমরা একে অপরকে ভালোবাসি। দুজন দু’জনকে বুঝি। কখনও সখনও কিছু খারাপ লাগলে আর পাঁচটা দম্পতির মতো একে অপরকে বুঝিয়ে বলি। এক দেড় বছর ধরে একে অপরকে চিনি। এভাবেই সারা জীবন থাকতে চাই।’

গজানন রায়

তাঁদের বিয়ে হওয়ার কথা পঞ্চায়েত ভোটের আগেই। কিন্তু, নির্বাচনের জন্য তা পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এই যুগল। স্ত্রীর প্রশংসা করে গজাননের বক্তব্য, ‘আমাদের কাজ শিক্ষা দেওয়া। নতুন প্রজন্মকে যোগ্য করে তোলা। আর শম্পাদের দায়িত্ব সেই নতুন প্রজন্মদের ভবিষ্যতের চিন্তাভাবনা করা। দুই জনেই দুজনের পাশে থাকব।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version