এই সময়: আশপাশের একটি অঙ্গেরও ক্ষতি না করে, বিশ্বের বৃহত্তম প্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সার টিউমারের সফল অস্ত্রোপচার হল কলকাতায়। আইরিশ হাসপাতালের গ্যাস্ট্রো-সার্জেন শুদ্ধসত্ত্ব সেনের হাতে সেরে উঠেছেন ঢাকার বাসিন্দা ইফরাত নাহার নামিয়া। টিউমারের বিরলতম অপারেশনের দু’মাস পরে কলকাতায় চেক-আপে এলে, তাঁর শারীরিক অবস্থার সন্তোষজনক উন্নতি দেখে খুশি হাসপাতালের চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীরা।

শুক্রবার একটি সাংবাদিক বৈঠকে এই সাফল্যগাথা তুলে ধরা হয় বাঘাযতীনের ওই বেসরকারি হাসপাতালের তরফে। ছোটখাটো চেহারার বাংলাদেশি তরুণী যেন নুয়ে পড়েছিলেন দৈত্যাকার টিউমারের ভারে। হাসপাতালে আসার পর জানা যায়, সেটি আদতে ক্যান্সারপ্রবণ টিউমার যা বেড়ে উঠেছে প্যানক্রিয়াস বা অগ্ন্যাশয়ের উপরে। যার সাইজ সাধারণত হয় ২-৬ সেন্টিমিটার।

সাইজ ১০ সেন্টিমিটার পেরোনোর অর্থ, প্যানক্রিয়াস-সহ তা ছড়িয়ে পড়েছে অন্যান্য একাধিক অঙ্গে। কিন্তু ২৩ বছরের এই তরুণীর ক্ষেত্রে তা হয়নি। অন্য অঙ্গে সেই ক্যান্সার ছড়িয়ে না পড়েই বেড়ে উঠেছে প্যানক্রিয়াসকে ঘিরে। এবং তার সাইজ দাঁড়িয়েছে ৪০X২০ সেন্টিমিটার। ওজন প্রায় ৪ কিলোগ্রাম।

শুদ্ধসত্ত্ব জানান, বিশালাকার ওই টিউমারটি দ্রুত বাদ দেওয়া জরুরি ছিল। কিন্তু দেশ-বিদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরেও লাভ হয়নি। সব জায়গার চিকিৎসকরাই জানিয়েছিলেন, বাঁ দিকের কিডনি, পাকস্থলির অংশ, অ্যাড্রিনাল গ্ল্যান্ড, অন্ত্র ও লিভারের অংশ এবং প্লীহা বাদ না-দিয়ে ওই টিউমারটি অস্ত্রোপচার করার কোনও উপায় নেই।

কেননা, টিউমারটি বড় হওয়ার জন্য একেবারে সংলগ্ন হয়ে রয়েছে এতগুলি অঙ্গের সঙ্গে। ওই গ্যাস্ট্রো-সার্জেনের দাবি, ‘আমরা কিন্তু অপারেশনটা করি একটি অঙ্গকেও বাদ না-দিয়ে। টিউমারটি বের করার পর সারা দুনিয়ার জার্নাল ঘেঁটে যা বুঝলাম, এত বড় প্যানক্রিয়াটিক টিউমার এর আগে কোনও দিন অপারেশন করা হয়নি সফল ভাবে।’

Hooghly News : ১০০ বছরের প্রবীণ হৃদয়ে বসল পেসমেকার, অস্ত্রোপচারের পর কেমন আছেন হুগলির বাসুদেব?
তবে টিউমার বাদ দিতে গিয়ে অগ্ন্যাশয়ের ৮০ শতাংশ বাদ দেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না বলে জানাচ্ছেন ওই চিকিৎসক। তাতে অবশ্য বাদ যায় ষোলো আনা টিউমারটিই। রোগিণী এত দ্রুত সেরে উঠছিলেন যে আইসিইউ-তে না রেখে, অপারেশনের আট দিনের মাথায় তাঁকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয় দুর্গা পুজোর সপ্তমীর দিনেই।

অস্ত্রোপচার পরবর্তী চেক-আপে এখন দেখা যাচ্ছে, ইফরাতের শারীরিক অবস্থার প্রভূত উন্নতি হয়েছে। তাঁর ক্যান্সারেরও আর একটুও অবনতি হয়নি।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version