দিনভর হাসি, আনন্দ, হুল্লোড়ে কেটেছিল পিকনিক। আর সেই পিকনিক শেষ হলো দশম শ্রেণির ছাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যুতে। চলন্ত জেনারেটরের ডায়নামোয় চুল আটকে মৃত্যু হলো রবি-রূপালির মেয়ে রুমা দাসের (১৫)। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামে।
কেতুগ্রামের আশুতোষ মেমোরিয়াল ইনস্টিটিউশনের ছাত্রী ছিল রুমা। বাবা কলকাতায় এক ব্যবসায়ীর অধীনে কাজ করেন। শীতের মরশুমে গ্রাম থেকে আয়োজন করা হয়েছিল পিকনিকের। সেই পিকনিকে অংশ নেয় গ্রামেরই ৫০ ছাত্র-ছাত্রী। গ্রাম থেকে কিছু দূরে ঈশানী নদীর তট বাছা হয়েছিল পিকনিকের জন্য। সেখানে অংশ নেওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ছিল রুমা। পিকনিক জমাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বিশাল সব মাইক। আর সেই মাইক বাজানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল জেনারেটর।
দিনভর নদীর পাড়ে বেজেছে মাইক, সঙ্গে চলেছে খাওয়া-দাওয়া, নাচ-গান। এতদূর পর্যন্ত ঠিক ছিল সব। কিন্তু, দুর্ঘটনা ঘটল সন্ধ্যার দিকে বাড়ি ফেরার সময়ে। জানা গিয়েছে, ফিরতি পথেও চালানো হচ্ছিল মাইক। অনেকে নাচানাচিও করছিল।
যে ভ্যানে জেনারেটর রাখা ছিল, হঠাৎই রুমা লাফিয়ে সেই মোটরভ্যানে উঠে বসতে যায়। তখনই তার খোলা চুল আটকে যায় জেনারেটরে ঘুরতে থাকা ডায়নামোয়। অতিরিক্ত গতির কারণে রুমার চুল জড়িয়ে যায়। নিমেষে রুমার মাথার উপরের অংশের খুলি খুলে বেরিয়ে আসে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই ছাত্রীর।
মেয়ের এই পরিণতি দেখে শোকে ভেঙে পড়েন বাবা। অসুস্থ হয়ে পড়েছেন মা। রবি শুধু বলেন, ‘আমাদের সবই শেষ হয়ে গেল। ছেলেটা আগেই চলে গিয়েছে, এখন মেয়েটাও গেল। আমরা কী নিয়ে থাকব?’