এই সময়: উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য বনাম রাজ্যপাল মামলায় আচার্য-রাজ্যপালের হয়ে ২০টি রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় যে আইনি খরচ করেছে, তা খতিয়ে দেখতে চার সদস্যের দু’টি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করল উচ্চশিক্ষা দপ্তরের ইউনিভার্সিটি ব্রাঞ্চ। ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটিজ় (কন্ট্রোল অফ এক্সপেনডিচার) আইন’ ১৯৭৬ অনুযায়ী এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে সোমবারের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ রয়েছে।

আচার্য-রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস একক ভাবে অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করতে পারেন কি না, তা নিয়ে প্রথমে কলকাতা হাইকোর্ট এবং বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য-রাজভবনের মধ্যে আইনি লড়াই চলছে। সোমবারও সুপ্রিম কোর্টে সেই মামলার শুনানি হয়েছে। এই লড়াইয়ে রাজভবনের আইনি খরচ সামাল দিতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে সমন্বয় সাধনের ভূমিকায় রেখে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যে ১০ লাখ টাকা অর্থ সাহায্য করেছে আচার্য-রাজ্যপালকে।

সংশ্লিষ্ট ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের উদ্দেশে এক নির্দেশিকায় উচ্চশিক্ষা দপ্তরের সিনিয়র স্পেশাল সেক্রেটারি এদিন জানিয়েছেন, দু’টি তদন্ত কমিটি খতিয়ে দেখবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আইনি লড়াই-সহ নানা খাতে যে অর্থ খরচ করছে, তা যথাযথ কি না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আইনি লড়াইয়ের টাকার উৎস কী, তাও দেখবে ওই কমিটি। উচ্চশিক্ষা দপ্তর নিযুক্ত চার সদস্যের দু’টি কমিটিকে একমাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।

এদিনের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, কলকাতা, বর্ধমান, সংস্কৃত, কল্যাণী, সিধু কানহো বিরসা, কাজী নজরুল, বাঁকুড়া, বাবা সাহেব আম্বেদকর এডুকেশন, বিশ্ব বাংলা এবং পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়—এদের আইনি খরচ খতিয়ে দেখার জন্য যে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে, তার সদস্যরা হলেন—পার্থ ঘোষ, দেবাঞ্জন বিশ্বাস, শিলাদিত্য চক্রবর্তী এবং অর্থ দপ্তরের অডিট শাখার সদস্য। অন্যদিকে, যাদবপুর, উত্তরবঙ্গ, রবীন্দ্র ভারতী, ম্যাকাউট, কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা, রায়গঞ্জ, ডায়মন্ডহারবার মহিলা, গৌড়বঙ্গ, আলিপুরদুয়ার এবং দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে তদন্ত কমিটির সদস্যদের মধ্যে আছেন—কৃষ্ণকুন্তল বসু, অরিন্দম মুখোপাধ্যায়, চন্দন ঘোষ এবং অর্থ দপ্তরের অডিট শাখার সদস্য।

মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করছেন! আবার ব্রাত্যের নিশানায় বোস
শিক্ষামহলের একাংশের যুক্তি, রাজ্যপাল নিযুক্ত অথরাইজ়ড উপাচার্যরা যেভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স কমিটিকে অন্ধকারে রেখেই আচার্যকে মামলা লড়তে অর্থ সাহায্য করেছেন, তা একেবারেই নিয়মবিরুদ্ধ। যদিও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অথরাইজ়ড উপাচার্যের দাবি ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মী ও অফিসারদের বেতনের টাকাই শুধুমাত্র রাজ্য সরকার দেয়। তা ছাড়াও ইউজিসি-র ফান্ড, বড় বড় প্রজেক্টের ওভারহেডের টাকা, এনডাওমেন্ট ফান্ড এবং পড়ুয়াদের টিউশন ফির টাকা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ফান্ড আছে।

কিন্তু রাজ্যের দাবি, ১৯৭৬ সালের ওই আইন অনুযায়ী, পড়ুয়াদের ফি বাবদ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জমা টাকা থেকে কোন কোন খাতে কত টাকা খরচ করা যায়, তার সংস্থান আছে। পড়ুয়া ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী শিক্ষক ও কর্মী পিছু কোন বিষয়ে কত টাকা খরচ করা যায়, তাও বলা আছে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version