জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: মহাযুদ্ধের প্রথম পর্বের হার্ডল টপকাতে পারেনি মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট (Mohun Bagan Super Giant)! ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে ওড়িশা এফসি-র কাছে ১-২ হেরে ফিরেছিল গতবারের চ্য়াম্পিয়নরা (Odisha FC vs Mohun Bagan)। আইএসএল সেমিফাইনালের প্রথম লেগের অ্যাওয়ে ম্যাচ জিতে, ফাইনালের পথে এক পা বাড়িয়ে রাখাই লক্ষ্য় ছিল অ্যান্তোনিও লোপেজ হাবাসের শিষ্য়দের। সেখানে ওড়িশার ঘরের মাঠে হেরে গিয়েছিল সবুজ-মেরুন। জেসন কামিন্স, দিমিত্রি পেত্রাতোস, জনি কাউকোদের কাছে ফাইনালের যাওয়ার একটাই সুযোগ, কী সেই সুযোগ? রবিবার অর্থাৎ আজ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ন্যূনতম দুই গোলের ব্য়বধানে জিততেই হবে। ‘ডু-অর-ডাই’, আর কোনও রাস্তা নেই! আর সেই ম্য়াচেই মরণ কামড় দিল মেরিনার্স। এদিন ২-০ ব্য়বধানে জেতার সঙ্গেই দুই লেগ মিলিয়ে ৩-২ জয়ে গতবারের চ্য়াম্পিয়নরা ফাইনালে। মেরিনার্স দেখিয়ে দিল কেন তারা ভারতসেরা।
প্রথমার্ধের শুরু থেকেই দুই দল আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে শুরু করে। দুই দলই বুঝিয়ে দিয়েছিল যে, ফাইনালে যাওয়ার এটাই শেষ সুযোগ। ‘করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে’ মন্ত্রেই দুই টিম ঝড় তুলতে শুরু করে। ম্যাচের ২২ মিনিটে কামিন্সের দুরন্ত গোলে যুবভারতীকে সেলিব্রেশনে মাতিয়ে দেন। পেত্রাতোসের শট রুখে দিয়েছিলেন ওড়িশার গোলরক্ষক অমরিন্দর সিং। অমরিন্দর বলটি বক্সের মাঝামাঝি ঠেলে দিয়েছিলেন। সুযোগ সন্ধানী কামিন্স গোলের গন্ধ পেয়েই ছুটে গিয়ে ওয়ান-টু-ওয়ানে অমরিন্দরকে পরাস্ত করেন। দুই লেগ মিলিয়ে খেলার ফল হয় ২-২। খেলা যত বিরতির দিকে এগোচ্ছিল, তত ওড়িশার রক্ষণ ভেঙে ঢুকে পড়ছিল মোহনবাগান। কিন্তু গোল আর হয়নি। অন্য়দিকে ৪৫ মিনিটের খেলা শেষ হওয়ার পর রেফারি ছয় মিনিট ইঞ্জুরি টাইম দিয়েছিলেন। বিরতির ঠিক আগে হেক্টর ইয়ুস্তে যদি অসাধারণ গোললাইন সেভ না করতে পারতেন, তাহলে ইসাক রালতে গোল করে বেরিয়ে যেতেন।
দ্বিতীয়ার্ধেও দুই দল গোলের মরিয়া চেষ্টা করেছিল। লিস্টন-মনবীর থেকে অনিরুদ্ধ, কিয়ানরা গোলের রাস্তায় চলে গিয়েও হারিয়ে গিয়েছিলেন। দেখতে গেলে ওড়িশা কিন্তু সেভাবে সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। খেলা যত শেষের দিকে এগিয়ে আসছিল, ততই রক্তচাপ বাড়তে শুরু করছিল বাগান সমর্থকদের। রেফারি জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, নির্ধারিত সময়ের পর খেলা চলবে আরও সাত মিনিট। যার মানে কামিন্স-কাউকোদের কাছে ৪২০ সেকেন্ডের লাইফ লাইন ছিল। ম্য়াচের ৭২ মিনিটে অনিরুদ্ধ থাপাকে বসিয়ে আব্দুল সাহাল সামাদকে মাঠে নামিয়ে ছিলেন হাবাস। আর সেই সামাদই মোহনবাগানকে নিয়ে গেলেন ফাইনালে। মনবীর বাঁ দিক থেকে বল নিয়ে উঠে এসে সাহালকে বল বাড়িয়ে ছিলেন। আর সাহাল অমরিন্দরকে হারিয়ে গোল করতে কোনও ভুলই করলেন না। চলতি মরসুমে মোহনবাগান ডুরান্ড কাপ জেতার পর জিতেছে আইএসএল লিগ শিল্ড। এবার আইএসএল জিততে পারলেই চলে আসবে ত্রিমুকুট। যার জন্য় অপেক্ষা আর মাত্র কয়েক’টা দিনের আগামী ৪ মে আইএসএল ফাইনাল। মুম্বই সিটি এফসি এবং গোয়ার মধ্য়ে যে জিতবে, তারাই খেলবে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে। মোহনবাগার জেতার সঙ্গে সঙ্গেই ক্রীড়া মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন,’ অভিনন্দন,অভিনন্দন, অভিনন্দন। আইএসএল ফাইনালে যাওয়ার জন্য মোহনবাগান ক্লাবের খেলোয়াড়, কোচ,কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সমর্থকদের জানাই হার্দিক অভিনন্দন। ফাইনালের জন্য রইল আগাম শুভেচ্ছা। এ জয় শুধু মোহনবাগানের নয়,এ জয় সারা বাংলার জয়।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)