লড়াইটা মূলত ত্রিমুখী। একুশে ‘তৃণমূলের তাপসের’ জয় করা বরানগর কেন্দ্রে শাসক দলের সৈনিক অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে, তাপসকে ‘কাকা’ বলে ডাকা সজল ঘোষকে পদ্ম প্রতীক দেওয়া হয়েছে। আর অভিজ্ঞার ঝুলিই সঞ্চয় বামেদের তন্ময় ভট্টাচার্যের। ১ জুন রাজ্যে সপ্তম দফায় অনুষ্ঠিত হবে লোকসভা নির্বাচন। আর এই দিনেই ভোট বরানগরেও।
প্রবীণ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দাবি, ষাটের দশকে বরানগরের চিত্ত ছিল অশান্ত। আর এই অস্থিরতায় অন্যতম ঘা ছিল উত্তর কলকাতার ফরওয়ার্ড ব্লকের জনপ্রিয় নেতা হেমন্ত বসুর দিনে দুপুরে হত্যা। এই নিয়ে কাদাছোঁড়াছুড়ি বিস্তর হয়েছিল।
অতীতের সেই চিত্ত বা চিত্র কোনওটাই আর নেই। বামেদের জন্য লড়াইটা শূন্য থেকে ১-এ পৌঁছনোর। কিন্তু, অন্য দুই দলের জন্য ‘প্রেস্টিজ ফাইট’। পুরসভার কাউন্সিলর হিসেবে কেরিয়ার শুরু করা তাপস অনেকটা পথ হেঁটেছিলেন ঠিকই। কিন্তু, একুশের নির্বাচনে তাঁর নামের পাশে ছিল জোড়াফুল প্রতীক। স্বাভাবিকভাবেই একুশের মতো ২০২৪-এর উপনির্বাচনেও সেখানে সবুজ আবির ওড়াতে চায় রাজ্যের শাসক দল।
লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী তালিকায় ৪২ নামের মধ্যে ঠাঁই হয়নি সায়ন্তিকার। এরপর ‘অভিমান’ খুল্লামখুল্লা বলেছিলেন অভিনেত্রী। তাঁর অভিমানপর্ব যখন বঙ্গ রাজনীতির ‘হট টপিক’ হয়ে উঠেছিল, সেই সময় তিনি প্রার্থী হলেন বরানগরের।
অন্যদিকে, বিজেপির বাজি তাপস রায়কে ‘কাকু’ ডাকা কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর সজল। সায়ন্তিকার প্লাস পয়েন্টে গ্ল্য়ামার, মিতভাষী, মিশুকে, সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশে যাওয়ার ক্ষমতা যোগ হলে সজলের স্লগওভার চলে চোখা আক্রমণ, ডাকাবুকো পদক্ষেপ, পুজোর আয়োজনে ষোলআনা ডুুবিয়ে রাখা। কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জায়গা ছেড়ে দিতে নারাজ।
এখন দেখার জোড়া ফুলের প্রতীক নিয়ে কি বাজিমাত করতে পারবেন সায়ন্তিকা? নাকি তাপসের ‘আশীর্বাদ’ শিরোধার্য করে ‘চালিয়ে খেলবেন’ সজল? ভোট কাটাকাটির অঙ্কে তন্ময় অবদান অনেকখানি, দাবি রাজনৈতিক মহলের।