ভালোবাসার দিব্যি গেলে সমাজের বাঁকা চোখ সরিয়ে তাঁরা একে অপরের সঙ্গে পথ চলার অঙ্গীকার করেছিলেন। আইন মান্যতা দেয়নি। কিন্তু, নিজেরাই ২০২২ সালে ২২ জুলাই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মন্দিরা পাত্র বন্দ্য়োপাধ্যায় এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্য়ায়। এরপর হাতে হাত রেখে দুই বছর পার হয়ে গিয়েছে। দিব্যি সংসার করছেন তাঁরা।বুধবার অনেকেই জামাইষষ্ঠীতে কবজি ডুবিয়ে খেয়েছেন। ব্যতিক্রম নন মন্দিরা এবং বৈশাখীও। তাঁদের জন্য জামাইষষ্ঠীর আয়োজন করেছিলেন কৃষ্ণনগরের সমাজকর্মী বাবলি মুখোপাধ্যায়। কৃষ্ণনগরের এক অভিজাত হোটেলে ধুমধাম করে তাঁদের ‘জামাই আদর’ করা হয়। জামাইষষ্ঠীতে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয় বিশেষ উপহারও।

এদিন তাঁদের পাতে পড়েছিল পোলাও, চিংড়ি, মাংস, মিষ্টি, চাটনি, পাপড়-আরও হরেক রকম পদ। এদিন মন্দিরা বলেন, ‘আমরা একে অপরকে ভালোবেসে একসঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সেই সময় অনেক কথা শুনতে হয়েছিল। কিন্তু, আমরা সিদ্ধান্তে অটল ছিলাম। এরপর সবকিছু ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। আর কেউ কোনও কথা বললেও সেভাবে আমাদের উপর প্রভাব পড়ে না। আমরা একে অপরের সঙ্গে বেশ খুশি।’

অন্যদিকে, একই দাবি বৈশাখীরও। তিনিও জানান, একসঙ্গে দুই বছরের সংসার তাঁদের। বেশ ভালোই কাটাচ্ছেন তাঁরা। আর সমপ্রেমী এই যুগলের জন্য যিনি ধুমধাম করে ভোজের আয়োজন করেছিলেন, কী বলছেন সেই বাবলি?

তিনি বলেন, ‘ভালোবাসা কোনও গণ্ডি মানে না। একজন মেয়ে অপর মেয়েকে ভালোবাসতেই পারে। একটা গোটা আকাশ ওদের কেন দেওয়া হবে না! আর এই সমতার বার্তা দেওয়ার জন্যই আমি এই আয়োজন করি। অন্যান্য বাড়িতে যে ভাবে জামাই ষষ্ঠীর জন্য আয়োজন করা হয়, আমরাও সেভাবেই আয়োজন করি। বরণ করে নেওয়া থেকে শুরু করে খাবার থালার সজ্জা, উপহার কিছুই বাদ পড়েনি। আর সবথেকে বেশি যেটা ছিল, তা হল ভালোবাসা।’

এদিকে সমপ্রেমী যুগলের জন্য আয়োজিত এই জামাইষষ্ঠী নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে কৃষ্ণনগরে। নানা মানুষের নানান মতামত। তবে এই পদক্ষেপ যে নিঃসন্দেহে অভিনব, তা একবাক্যে মানছেন অনেকেই।

প্রেমে রামধনু রং লাগা নিয়ে দীর্ঘ দিনের আন্দোলন। সমপ্রেমী আর আইনত অপরাধ নয়। কিন্তু, এখনও দেশের সমপ্রেমী যুগলদের বিয়ে করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। যদিও এই যুগলরা জানাচ্ছেন, পাশে ভালোবাসার মানুষটা থাকলেই যথেষ্ট।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version