পাথর কেটে বাঁশি বানিয়েছিলেন শিল্পী। আর সেই বাঁশিতেই সুর তুলছেন অভীক কর্মকার। এই বাঁশিতে তাঁর তোলা সুরে ‘মাতাল’ সাধারণ মানুষ। বাঁকুড়ার শুশুনিয়ার শিল্পী অভীক একটি পাথর কেটে তৈরি করেছিলেন বাঁশি। তার গায়ে খোদাই করা অপূর্ব কারুকার্য। বাঁশের তৈরি বাঁশির মতোই পাথরের এই বাঁশিতেও সুরেলা সফর করা যায়।শুশুনিয়া গ্রামে পাথর দিয়ে বিভিন্ন কারুকার্য জগতবিখ্যাত। গ্রামের বহু মানুষ বিভিন্ন ধরনের শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। তাঁরা নানা ধরনের পাথরের মূর্তি তৈরি করেন। অনেকেই রুজি রুটি নির্ভর করে এই পেশার উপরেই। পাথর শিল্পী অভীর কর্মকারও দীর্ঘদিন ধরে এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। সুরের প্রতি ছোটবেলা থেকেই তাঁর অমোঘ টান।

আর পাথরের শক্ত আস্তরণের মধ্যদিয়ে সুরেলা অধ্যায় লেখার জন্য বিস্তর কাঠখড় পোহাতে হয়েছিল তরুণ এই শিল্পীকে। প্রায় ২১৯ দিন দিয়েছিলেন তিনি এই বাঁশিটি তৈরি করতে। পাথর খোদাই করতে গিয়ে একাধিকবার ‘হোঁচট খেয়েছেন’, থমকেছেন। কিন্তু, বাঁশি তৈরির কাজ তিনি থামাননি। পরিশ্রমের ফসলও পেয়েছেন তিনি। বাঁশিটি মন জয় করেছেন অনেকেরই।

অপূর্ব দর্শন এই বাঁশির জন্য ক্ষুদ্র, ছোট এবং মাঝারি উদ্যোগ অধিকার পশ্চিমবঙ্গ কারুশিল্প প্রতিযোগিতা ২০২৩-২০২৪-তে প্রথম স্থান পেয়েছেন শিল্পী অভীক কর্মকার। এই বাঁশি তৈরির জন্য রাজ্যস্তরে পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। পাথরের তৈরি বাঁশি মানেই তার ওজন অপেক্ষাকৃত বেশি হবে বলেই মনে করা স্বাভাবিক। কিন্তু, এই বাঁশিটির ওজন বেশ হালকা। তার গায়ে খোদাই করা রয়েছে শ্রী কৃষ্ণের জীবনের বেশ কিছু অংশ।

কিন্তু, পাথর থেকে কোন ভাবনায় বাঁশি তৈরি? এই প্রসঙ্গে শিল্পী অভীক কর্মকার বলেন, ‘বাঁশি মানেই কৃষ্ণ। আমি কংসের বধ থেকে শুরু করে শ্রী কৃষ্ণের বিভিন্ন অবতার বাঁশিটিতে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি। পাথরের মধ্যেও যে সুর তোলা সম্ভব, আমি মনে করি সেই ভাবনা আসতে পারে একজন শিল্পীর মনেই।’

প্রথমে নিছকই এই ভাবনা, ঝোঁক এবং সুরের প্রতি আবেগকে সম্বল করে তিনি বাঁশি তৈরি শুরু করেছিলেন। একাধিকবার তাকে বিভিন্ন জায়গায় ঠেকতে হয়েছে। তবে কাজ করা বন্ধ করেননি তিনি। বরং বারবার নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করেছেন তিনি। শেষমেশ পাথরের এই বাঁশি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। সরকারের তরফে পাওয়া বিভিন্ন স্বীকৃতিতে স্বাভাবিকভাবেই খুশি এই শিল্পী।





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version