জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: লাইফ লাইন বন্ধ! ফলে, যা হওয়ার তাই ঘটেছে। থেমে গিয়েছে জীবনই। উত্তরবঙ্গ জুড়ে পরিবহণ-পরিস্থিতি খুবই সংকটাপন্ন। দিনসাতেক হতে চলল সেখানে বন্ধ শিলিগুড়ি থেকে সিকিমগামী জাতীয় সড়ক ১০।
আরও পড়ুন: North Bengal: ফের ধস দার্জিলিংয়ের পথে! পাহাড়ে বাঙালির বর্ষাযাপন কি অনিশ্চিত?
মূলত সেবকের করোনেশন ব্রিজ কাছে থেকে কালিম্পং জেলার লিকুভির পর্যন্ত জাতীয় সড়কে বহু জায়গায় ধস। ফলে তিস্তার কবলে জাতীয় সড়ক ১০-এর বহু অংশ। একদিকে যেমন প্রশাসনের তরফ থেকে ধসকবলিত এলাকার পাশ দিয়ে পাহাড় কেটে নতুন রাস্তা বানানোর চেষ্টা চলছে, অন্য দিকে তেমনই তিস্তার কবলে ধসে যাওয়া বেহাল রাস্তাকে পুনরায় ব্যবহারযোগ্যতার স্তরে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা জেলা প্রশাসনের। তবে সবেতেই বাধ সাধছে পাহাড়ের অতি বৃষ্টি। পাশাপাশি কয়েকদিন ধরেই পাহাড়ি তিস্তার অবস্থাও একই রকম হয়ে আছে।
ওদিকে গতকাল লিস নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় মাল ব্লকের বাগরাকোট গ্রাম পঞ্চায়েতের চান্দা কম্পানি এলাকা। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় নদীর গতিপথ পরিবর্তন করে ভাঙা বাঁধ মেরামত করে প্রশাসন। সারারাত ধরে চলে বাঁধ মেরামতির কাজ। এরপর এখন আর লীস নদীর জল ঢুকতে পারছে না চান্দা কম্পানি এলাকায়। বালি-পাথর দিয়ে প্রায় ৩০ মিটার বাঁধ মেরামত করা হয়। জল নেমে গিয়েছে জলমগ্ন বাড়িগুলি থেকে। স্থানীয়দের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। তবে গতকাল সকাল থেকেই দেখা গিয়েছিল অন্য জায়গায় বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই জায়গাটিও ভেঙে গেলে ফের বানভাসি হবে চান্দা কম্পানি এলাকা। এলাকার মানুষের অভিযোগ, বেলা বাড়লেও প্রশাসনের কাউকে এলাকায় দেখা যাচ্ছে না। যেখানে বাঁধ ভাঙছে অবিলম্বে সেখানে কাজ করা জরুরি।
উত্তর-পূর্ব ভারত জুড়ে অতি ভারী বৃষ্টি হয়েছে গত দশ-পনেরো দিন ধরে। এ সংক্রান্ত সতর্কতা ছিলই। পাহাড় ও সমতলে অবিরাম বর্ষণে ফুঁসছে তিস্তা, জলঢাকা-সহ অন্যান্য নদী। ব্যারাজ থেকে ছাড়া হয়েছে জল। একটানা বৃষ্টিতে জলপাইগুড়ি পুরসভার মহামায়া পাড়া, পান্ডাপাড়া, নেতাজি পাড়া পরেশ মিত্র কলোনি-সহ বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন।
একদিকে যেমন পাহাড় থেকে নেমে এসেছে বিশাল জলরাশি, সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সমতলের বৃষ্টিজল। দুইয়ে মিলে কার্যত রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে তিস্তা, জলঢাকা, তোর্সা-সহ জেলার বুক চিরে বয়ে যাওয়া লিস, ঘিস, নেওরার মতো খরস্রোতা নদীগুলি। প্রবল বৃষ্টিতে জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। জলপাইগুড়ি গজলডোবা তিস্তা ব্যারাজে রবিবার সকালে (২৬৯৮.৬৩) কিউমেক জল ছাড়া হয়েছিল। তিস্তা নদীর পাড়ে অবস্থিত মেখলিগঞ্জ শহর থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত নদীর দু’পাশে জারি লাল সতর্কতা। জলঢাকা এনএইচ ৩১ নদীতে হলুদ সংকেত। তিস্তার দোমহনিতেও হলুদ সতর্কতা। সব মিলিয়ে বর্ষার প্রথম স্পেলেই ভারী বর্ষার দাপটে উত্তরবঙ্গে ব্যাহত স্বাভাবিক জনজীবন।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)