এই সময়, মালদা: অসুস্থ এক শিশুকে গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে মালদা মেডিক্যাল কলেজে রেফার করায় মারধর করা হলো চিকিৎসককে। মঙ্গলবার বিকালে পুরাতন মালদার মৌলপুর গ্রামীণ হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটে। রোগীর বাড়ির লোকজন অশ্লীল গালাগালি, হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ওই চিকিৎসককে মারধর করেছেন বলে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।অন্য দিকে, বুধবার ভোরে মানিকচক হাসপাতালে রোগীমৃত্যু ঘিরে সরাসরি চিকিৎসকের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলে পরিজনেরা বিক্ষোভ দেখায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হন পুলিশকর্মীরা।

হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরাতন মালদা ব্লকের রাঙামাটি বাসিন্দা চার বছরের শিশুকে মঙ্গলবার সকালে মৌলপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ভর্তি করেন। জ্বরে আক্রান্ত শিশুটির শারীরিক পরীক্ষার পরে বিকালে তাকে মালদা মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হয়। বাড়ির লোকজন সেটা জানতে পেরে উত্তেজিত হয়ে পড়েন।

সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিয়োতে (সত্যতা যাচাই করেনি ‘এই সময়’) দেখা গিয়েছে এক মহিলা ও কয়েকজন পুরুষ হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে এক চিকিৎসককে ঘিরে গালাগাল করতে করতে চড়-থাপ্পড় মারছে। খবর পেয়ে মালদা থানা থেকে পুলিশকর্মীরা পৌঁছলে তাঁরাও বিক্ষোভের মুখে পড়েন। শেষ পর্যন্ত শিশুটির পরিবারকে হাসপাতাল থেকে বের করে দিয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

শিশুটির অভিভাবক কেয়া মণ্ডল বলেন, ‘বাচ্চাটাকে ভালো করে না দেখেই রেফার করা হয়েছে। চিকিৎসককে গালাগাল বা গায়ে হাত দেওয়ার কোনও ঘটনা ঘটেনি। বরং পুলিশ ডাক্তারদের পক্ষ নিয়ে আমাদের ঘাড় ধাক্কা দিয়ে হাসপাতাল থেকে বের করে দিয়েছে।’

অন্য দিকে, বুধবার সকালে মানিকচক গ্রামীণ হাসপাতালে এক রোগীকে ভর্তি করার কিছুক্ষণের মধ্যে মৃত ঘোষণা করায় হাসপাতাল চত্বরে প্রবল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। জানা গিয়েছে, মানিকচকের বড়বাগান এলাকার বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম (৩৫)কে হাসপাতালে ভর্তি করার কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করলে পরিবারের লোকেরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে গ্রাম থেকে আরও লোকজন ছুটে আসে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠাতে গেলে উত্তেজিত জনতা পুলিশের উপরে চড়াও হয় বলে অভিযোগ।

ঘণ্টা খানেকের চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। মৃত ব্যক্তির দাদা বরকত আলি বলেন, ‘জ্বর ও পেটে ব্যথায় আক্রান্ত ভাইকে ভর্তি করেছিলাম। কিন্তু ডাক্তারবাবু চিকিৎসার নামে ওর নাক টিপে ধরে মেরে ফেলেছে। এটা খুন ছাড়া আর কিছুই নয়। ওই ডাক্তারের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানাব।’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ্ত ভাদুড়ি দু’টি ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘একটা বাচ্চার স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে বড় জায়গায় রেফার করা কি অন্যায়? মানিকচক গ্রামীণ হাসপাতালে রোগীকে প্রায় মৃত অবস্থাতেই নিয়ে আসা হয়েছিল। চিকিৎসকরা নানা ভাবে চেষ্টা করেও বাঁচাতে পারেননি।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version