জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: নয়াদিল্লি স্টেশনে ভয়ংকর পদপিষ্টের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী অন্তত ১৮ জনের মৃত্যু ঘটেছে। এর মধ্যে ৫ শিশু ও ১১ জন মহিলাও আছেন। আহত অনেকেই। এঁদের মধ্যে ১২ জনের আঘাত বেশি। শনিবার রাতে কয়েকশো পুণ্যার্থী নয়াদিল্লি স্টেশনের ১২, ১৩ ও ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ভিড় জমিয়েছিলেন। ঘটনাটি ঘটে গিয়েছিল মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে। আহতদের দ্রুত এলএনজেপি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই ওই ১৮ জনের মৃত্যু ঘটে। স্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে ১৮ জনের প্রাণহানির ঘটনায় পরিকল্পনা এবং ব্যবস্থাপনার অভাব রয়েছে। বলে দাবি করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার তিনি নিজের এক্স হ্যান্ডেলে শোকপ্রকাশ করেন।

এদিন মমতা লেখেন, ‘দিল্লিতে পদপিষ্ট হয়ে ১৮ জনের মৃত্যুর ঘটনা হৃদয়বিদারক। এই দুঃখজনক ঘটনা প্রমাণ করে সঠিক পরিকল্পনা এবং ব্যবস্থাপনা কতটা প্রয়োজনীয়। মহাকুম্ভের পুণ্যার্থীদের আরও বেশি সহযোগিতা এবং ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন। তাঁদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা অত্যন্ত দরকার। নিহতদের পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা রইল। যাঁরা জখম তাঁদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।’

প্রসঙ্গত,মহাকুম্ভে যাওয়ার পথেই নয়াদিল্লি স্টেশনে এই ভয়ংকর বিপত্তি। ট্রেন বাতিলের খবরেই হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। তখনই পদপিষ্ট হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। তাতেই আহত হন বহু মানুষ। বিভিন্ন ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, প্লাটফর্ম জুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে রয়েছেন অনেকে। এঁদের মধ্যে অনেকেই মহিলা এবং শিশু। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত ৯টা ৫৫ মিনিট নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। মহাকুম্ভে যাওয়ার স্পেশাল ট্রেন ধরার জন্য ওই সময়ে ১২, ১৩ ও ১৪ নম্বর (মতান্তরে ১৪ ও ১৫ নম্বর) প্লাটফর্মে বহু মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। আচমকই রটে যায়, ওই ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। তার পরেই শুরু হয়ে যায় ওই মারণ হুড়োহুড়ি। 

আরও পড়ুন: দু’লাখ টাকা, সোনার গয়না লুট! মধ্যরাতে খাস কলকাতায় দুই ভাইকে এলোপাথারি ছুরির কোপ…

অনেকেই পড়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। ঘটনার খবর পেয়েই ছুটে আসে দমকল ও উদ্ধারকারী দল। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উত্তর রেলের সিপিআরও জানিয়েছেন, বিপুল সংখ্য়ক মানুষকে সরাতে স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, হঠাৎই হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে গেল। উপর থেকে মানুষজন ছুটে এলেন। অনেকেই তাঁদের পায়ের নীচে চাপা পড়েন। তখনই অনেকেই মারা গিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছিল। রেলের ঘোষণার জন্যই এসব হয়েছে বলে ধারণা একাংশের। কেন এই দুর্ঘটনা? মনে করা হচ্ছে, প্লাটফর্মের যে ধারণ-ক্ষমতা, তার প্রায় ৫ গুণ বেশি মানুষ পৌঁছে গিয়েছিলেন সেখানে। অধিকাংশ মানুষই রেলের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন। 

কতটা হুড়োহুড়ি হয়েছে তা ফুট ওভারব্রিজগুলি দেখলেই বোঝা যায়। সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় জুতো, পোশাক-সহ অন্যান্য সামগ্রী। প্লাটফর্মে অনেককেই দেখা যায় তাঁদের আহত আত্মীদের সামাল দিচ্ছেন। উদ্ধারকারী দল এসে দ্রুত তাঁদের সরিয়ে নিয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী এই ঘটনায় অত্যন্ত আহত হয়েছেন। তিনি এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করেছেন। তিনি মৃতদের স্বজনদের প্রতি গভীর মর্মবেদনা প্রকাশ করেছেন। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন। এদিকে, মৃতদের পরিবারকে মাথাপিছু ১০ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য, গুরুতর জখমদের ২.৫ লক্ষ এবং অপেক্ষাকৃত কম আহতদের এক লক্ষ টাকা অর্থসাহায্য ঘোষণা রেল মন্ত্রকের।

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version