এই সময়: লগ্নি সংস্থা অ্যালকেমিস্টের কাছ থেকে হেলিকপ্টার ভাড়া করা নিয়ে কুৎসা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করল তৃণমূল। অ্যালকেমিস্ট মামলায় তৃণমূল কংগ্রেসের ১০ কোটি ২৯ লক্ষ টাকার ডিমান্ড ড্রাফ্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে সোমবার প্রেস রিলিজ় ইস্যু করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। সেই টাকা ২০১৪-এর লোকসভা ভোটে হেলিকপ্টার ভাড়া বাবদ তৃণমূলের হয়ে মিটিয়েছিল বলে দাবি এই কেন্দ্রীয় এজেন্সির।তারপরেই জোড়াফুল নেতৃত্ব সাংবাদিক বৈঠক করে প্রশ্ন তোলেন, অ্যালকেমিস্ট সংস্থার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবে একদা কাজ করা মিঠুন চক্রবর্তীকে কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না? সেই সময়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা মুকুল রায়কে কেন জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে না?

অ্যালকেমিস্টের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করছে ইডি। এই সূত্রেই সোমবার ইডি বিবৃতি দিয়ে জানায়, ২০১৪-এর লোকসভা ভোটের সময়ে তৃণমূল ভোট প্রচারের কাজে যে হেলিকপ্টার নিয়েছিল, তার ভাড়া বাবদ ১০ কোটি ২৯ লক্ষ টাকা অ্যালকেমিস্ট এয়ারওয়েজ মিটিয়েছিল।

ইডি-র এই বিবৃতিকে হাতিয়ার করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, ইডি তদন্তে এখনও পর্যন্ত হিমশৈলের চূড়া দেখা গিয়েছে। তদন্তের জাল গোটালে বিপুল টাকার দুর্নীতি ধরা পড়বে। ইডি-র প্রেস বিবৃতিকে হাতিয়ার করে বিজেপি মাঠে নেমে পড়ায় কড়া জবাব দিয়েছে তৃণমূল।

জোড়াফুলের তরফে কুণাল ঘোষ এ দিন বলেন, ‘২০১৪ সালে পার্টিকে হেলিকপ্টার ভাড়া দিতে চেয়েছিল অ্যালকেমিস্ট। সেই সময়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মুকুল রায়। সেই সময়ে (হেলিকপ্টার) ভাড়া নেওয়া হয়, কিন্তু তার পেমেন্ট করা হয়নি। পার্টির সে ভাবে জানা ছিল না কখন, কাকে, কত টাকা পেমেন্ট করতে হবে।’

তাঁর সংযোজন, ‘এই বিষয়টি ইডি নেওয়ার পর ইডিই পার্টিকে জানায়, এই পেমেন্ট বাকি আছে। তখন পার্টি ইডিকে বলে, তোমরা জানাও কী ভাবে, কাকে, এই পেমেন্ট করতে হবে। আমরা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পেমেন্ট করে দেবো। এটা জানার পর পার্টি কয়েক দিন হলো ইডির জয়েন্ট ডিরেক্টরকে ডিমান্ড ড্রাফ্টের মাধ্যমে এটা পেমেন্ট করে দিয়েছে। একটি বকেয়া বিল পার্টি পেমেন্ট করেছে। এনিয়ে তাই কুৎসার কোনও অবকাশ নেই।’

ইডির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তৃণমূলের রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ কেডি সিং এই অ্যালকেমিস্ট সংস্থার কর্ণধার। ইডির অভিযোগ, বিপুল মুনাফা হবে, চড়া সুদ পাওয়া যাবে অথবা ভিলা, জমি, ফ্ল্যাট পাওয়া যাবে এই আশ্বাস দিয়ে অ্যালকেমিস্ট গ্রুপের একাধিক সংস্থা বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১৮০০ কোটি টাকা তুলেছিল বলে ইডির দাবি।

Rujira Banerjee: রুজিরা-মামলায় ধাক্কা, আর্জি প্রত্যাহার ইডির

তদন্তকারীদের আরও দাবি, সাধারণ মানুষকে প্রতারণা করে অ্যালকেমিস্ট যে টাকা তুলেছিল, সেই টাকা দিয়েই তৃণমূলের হয়ে বিভিন্ন অ্যাভিয়েশন কোম্পানিকে হেলিকপ্টারের ভাড়া মিটিয়েছে কেডি সিংয়ের সংস্থা। এই হেলিকপ্টার মকুল রায়, মুনমুন সেন, নুসরৎ জাহানের মতো তৃণমূলের তারকা প্রচারকরা ব্যবহার করেছিলেন বলেও ইডির দাবি।

কুণালের বক্তব্য, ‘এই টাকার সঙ্গে কোনও অপরাধের সম্পর্ক রয়েছে বলেও ইডি জানায়নি। অ্যালকেমিস্ট নিয়ে এত তৎপরতা থাকলে মিঠুন চক্রবর্তী কত টাকা নিয়েছেন? তাঁকে কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না? সেই সময়ে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন মুকুল রায়। তাঁর বিরুদ্ধে কী কী ব্যবস্থা হচ্ছে? তিনি তো মাঝখানে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version