রাজনীতির ময়দান কতটা কঠিন এবং নির্মম হতে পারে সে বিষয়ে পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে বিধানসভা থেকেই। কিন্তু রাজনীতির সান্নিধ্য প্রার্থাীর মনকে এখনও বিষিয়ে তুলতে পারেনি বলেই মনে করছেন বর্ধমান-পূর্ব কেন্দ্রের বাসিন্দারা। কারণ? নির্বাচনী প্রচারে বেরিয়ে এখনও পর্যন্ত একবারও বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকারকে কেউ উত্তেজিত হতে দেখেননি। অশালীন কোনও শব্দ প্রয়োগ করতেও শোনা যায়নি।কাটোয়ার বিখ্যাত সাধক ভবা পাগলার আশ্রমে দীর্ঘদিন ধরে থেকেছেন তিনি। তাই, কথাও বলেন কবিতার মতো ছন্দ মিলিয়ে মিলিয়ে। তাঁর প্রচারেও সেই কবিগানের সুর। ভোট জেতার অঙ্ক কবিতার মতো সুরেলা নয়, কিন্তু যে কেন্দ্রে প্রার্থী যদি প্রচারে বেরিয়ে কোনও কটু কথা না বলে কবিতা শোনান, জনমানসে তার একটা রেশ থেকে যায় বৈকি! সেটাই করছেন অসীম সরকার।

ভবা পাগলার আশ্রমে থাকার জন্যই গোটা এলাকাটা কার্যত চষে বেড়ানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। প্রচারে বেরিয়ে এলাকা চেনার সেই সুযোগই কাজে লাগাচ্ছেন অক্ষরে অক্ষরে। কোথায় কার দোকান ছিল, কোন জায়গায় পুরোনো কোন মানুষকে সবাই পছন্দ করতেন — সে সবই মুখস্থ বলে যাচ্ছেন তিনি। আর তাতেই মুগ্ধ হচ্ছেন মানুষজন।

প্রথাগত পড়াশোনা খুব বেশি নেই। নিজেই নিজেকে ‘ক্লাস ফোর পাস’ বলে দাবি করেন। তবে ছন্দ মেলাতে তার সঙ্গে আরও একটা লাইন জুড়ে দিয়ে বলেন, ‘আমি ক্লাস ফোর পাস, তোমরা তো চোর পাস’। আর এতেই হেসে গড়িয়ে পড়ছেন ভোটাররা। অসীমের প্রচারসঙ্গীদের দাবি, এক জায়গার প্রচার শেষ করে অন্যত্র যাওয়ার সময়ে অনেকেই জানতে চাইছেন প্রার্থী আবার প্রচারে আসবেন কি না।

Sharmila Sarkar : চেনা ময়দানে গোলের চেষ্টায় ‘সাধারণ মেয়ে’

ভোটের অনেকটা আগে থেকেই শিক্ষা দুর্নীতি ও সন্দেশখালির ঘটনা যেন থালায় সাজিয়ে তুলে দেওয়া হয়েছিল বিজেপির এই প্রার্থীর হাতে। তবে শেষ পর্যন্ত তার কতটা ফায়দা তিনি তুলতে পারবেন সেটা কিন্তু কবিগান নয়, ঠিক করে দেবে তাঁর দলের সংগঠনই। সেখানেই কি কিছুটা পিছিয়ে অসীম?

গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তো আছেই সঙ্গে রয়েছে সব ক’টা জায়গার সংগঠনের অভাবও। এই কারণেই মানুষের ‘স্বতঃস্ফূর্ত’ ভোটের ওপরেই অনেকটা নির্ভর করতে হচ্ছে বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের ‘ব্যতিক্রমী’ এই বিজেপি প্রার্থীকে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version