এই সময়: ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত দুই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা নিয়ে সরকার কনসেন্ট বা অনুমোদন দিতে গড়িমসি করায় কঠোর অবস্থান নিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। হাইকোর্টের গ্রীষ্মের অবকাশকালীন বেঞ্চ বুধবার রাজ্য সরকারের জন্য তিন দিনের সময়সীমা বেধে দিয়েছে ওই দুই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা শুরু করার জন্য কনসেন্ট দেওয়ার ব্যাপারে।সেই সঙ্গে আদালতের নির্দেশ— কনসেন্ট পাওয়ার পর পুলিশকে ওই দুই অফিসারের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা শুরু করতে হবে। বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায় এই নির্দেশ দিতে গিয়ে ১২ বছর বা এক যুগ ধরে কনস্টেন্ট না-দিয়ে বিষয়টি ফেলে রাখার জন্য রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেন।

স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুবীরেশ ভট্টাচার্য, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়-সহ কয়েক জন সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার জন্য সিবিআই এবং ইডি-কে কনসেন্ট না-দেওয়ায় রাজ্য সরকারকে সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের দুই ডিভিশন বেঞ্চে টানা সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। তবে ওই দুই ডিভিশন বেঞ্চ কোনও নির্দেশ দেয়নি, সমালোচনা করে কনসেন্ট দিতে তারা চাপ বাড়িয়েছে রাজ্যের উপর।

বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ ও বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ নিয়োগ দুর্নীতির দু’টি পৃথক মামলায় মুখ্যসচিব ও রাজ্য সরকারের উপর চাপ তৈরি করলেও নিজেরা কনসেন্ট দেওয়ার রাস্তায় এখনও পর্যন্ত হাঁটেনি। আবার রাজ্য সরকার এখনও পর্যন্ত সেই কনসেন্ট-ও দেয়নি। ভোট শেষ হলে রাজ্য এই ব্যাপারে তার অবস্থান জানাবে বলে আদালতকে অবশ্য অশ্বাস দিয়েছে।

তবে লকআপে মারধরের অভিযোগে রুজু হওয়া একটি মামলায় সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায় আগামী তিন দিনের মধ্যে (৩১ মে) ওই কনসেন্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যকে। তার পর, হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, দুই অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার— বর্তমানে মুর্শিদাবাদের ডোমকলে কর্মরত এক ইনস্পেক্টর ও বর্ধমানে কর্মরত এক ইনস্পেক্টরের বিরুদ্ধে রাজ্যকে ফৌজদারি মামলা শুরু করতে হবে।

Calcutta High Court : মামলা শোনার বিষয়ে বড় রদবদল কলকাতা হাইকোর্টে

ঘটনা ২০১২ সালের। আদালত সূত্রের খবর, দু’টি গোষ্ঠীর গোলমালে এক অভিযুক্তকে হুগলির চুঁচুড়া থানার লকআপে মারধরের অভিযোগে ওই দুই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের দাবি জানিয়ে মামলা হয় হাইকোর্টে। যদিও তারও আগে নিম্ন আদালতে মামলা হয়। হুগলির তৎকালীন পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী নিজের বক্তব্যে রাজ্য সরকারের কাছে ওই দুই অফিসারকে ক্লিন চিট দেন।

ফলে, রাজ্য আর তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের জন্য কনসেন্ট দেয়নি। কিন্তু এ বার হাইকোর্ট ওই মামলাতেই কনসেন্ট দিতে রাজ্যকে নির্দিষ্ট সময় বেধে দিয়েছে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version