এই সময়: বিজেমূল, সেটিং জাতীয় তত্ত্ব থেকে বেরিয়ে না এলে এ রাজ্যে সিপিএম ও বামফ্রন্টের ‘শূন্যতা’ ঘুচবে না বলেই মনে করছেন সিপিআই এমএল লিবারেশনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। সংখ্যার দিক থেকে না হলেও ক্রিকেটের ভাষায় স্ট্রাইক রেটে তাঁর পার্টি অনেক এগিয়ে। সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে বিহার থেকে তিনটি আসনে প্রার্থী দিয়ে দুটি আসনেই জয় ছিনিয়ে এনেছে লিবারেশন।এর আগে বিহার বিধানসভায় তাঁরা জিতেছিলেন ১২ জন এমএলএ-ও। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থীদের শূন্যতা না ঘোচায় উদ্বেগ প্রকাশ করলেন দীপঙ্কর। তাঁর সাফ কথা, ‘যতক্ষণ না বিজেপি সম্পর্কে সিপিএম নিজের অবস্থান বদলাচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত এ রাজ্যে নির্বাচনী সাফল্য তাদের হাতছাড়াই থাকবে! বিজেমুল জাতীয় তত্ত্ব সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয় হতে পারে, কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তা উল্টো প্রতিক্রিয়াই তৈরি করে।’

ঝটিকা সফরে কলকাতায় এসেছিলেন দীপঙ্কর। দেশজুড়ে নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে নানা আলোচনা করেছেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গের বিজেপির পরাজয়ে তিনি যেমন সন্তুষ্ট, তেমনই আবার পুরোপুরি আশঙ্কা-মুক্তও হতে পারছেন না। কেন? দীপঙ্করের কথায়, ‘দীর্ঘদিন ধরে কোনও রাজ্যে যদি বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে থেকে যায় তাহলে সেই ওয়েটিং লিস্ট এক না একদিন কমফার্ম হবেই। কালের নিয়মে তারা ক্ষমতায় আসবে। যেমন হয়েছে ওডিশা, ত্রিপুরায়। তাই বিজেপিকে প্রধান বিরোধী থেকেও সরাতে হবে।’

আর এই সরানোর প্রসঙ্গেই বাম আন্দোলনের প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে বলে তিনি মনে করেন। বিহারে তাঁর দল পারলেও বাংলায় ৩৪ বছর রাজত্ব করার পরও কেন সিপিএম ও বামপন্থীরা ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না? দীপঙ্করের কথায়, ‘সিপিএমের সবচেয়ে বড় ভুল হচ্ছে বিজেপিকে আর পাঁচটা রাজনৈতিক দলের মতো করে দেখা। বিজেপি আর তৃণমূলকে এক আসনে রেখে প্রচার, বিজেমূল তত্ত্ব, সেটিং- এ সব সোশ্যাল মিডিয়ায় শুনতে ভালো লাগে। কিন্তু বাস্তবে এর প্রতিক্রিয়া উল্টো হয়।’

তাঁর মতে, ‘সিপিএম যখনই বার্তা দিতে পারবে যে তারাও বিজেপিকে হারাতে সক্ষম, তখনই মানুষ তাদেরও জেতাবে।’ খানিকটা সমালোচনার সুরেই দীপঙ্কর বলেন, ‘গ্রাম, কৃষক, গরীব— সিপিএম এই তিন ভিত্তিতেই জনসমর্থন আদায় করেছিল। কিন্তু এখন কিছুতেই এই তিন শ্রেণির মানুষের কাছে তারা পৌঁছতে পারছে না।’ তিনি মনে করেন, অষ্টম বামফ্রন্ট সরকার গঠন হবে সুলভ বক্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতে হবে, তবেই কাঙ্খিত সাফল্য পাওয়া যাবে।

Sukant Majumder: দুই সভাপতিই মন্ত্রিত্বে, পদ্মবনে নয়া ‘মালি’ কে?

দীপঙ্করের এই মতামত নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছে সিপিএমও। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘ওঁর আশঙ্কা, আতঙ্ক, ভয়, পরামর্শ এবং ভবিষ্যৎবানী সবই শুনলাম। তার মধ্যে অনেক কিছুই অমূলক নয়। প্রতিটি নির্বাচনের পর আমরা ফলাফল নিয়ে পর্যালোচনা করি। এবারও করছি।’

সেলিমের সংযোজন, ‘আমি রাজ্য সম্পাদক হিসেবে সিপিআইএমএল লিবারেশনের রাজ্য সম্পাদকের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলব।’ এই আলোচনাকে অবশ্য স্বাগতই জানিয়েছেন দীপঙ্কর।





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version