অবশেষে ‘শিকল’মুক্ত হাবড়ার এক ভবঘুরে। বেশ কিছুদিন ধরেই হাবড়া দু’নম্বর রেলগেট এলাকায় ঘোরাফেরা করতে দেখা যাচ্ছিল ওই ভবঘুরেকে। ওই ব্যক্তির গলা, হাত, পা সহ দেহের বিভিন্ন জায়গায় জড়ানো ছিল লোহা তার। আর সেই কারণেই স্থানীয়দের কেউ কেউ তাঁকে ‘আয়রন ম্যান’ নামেও ডাকতে শুরু করেন। রাস্তাই ছিল তাঁর ঠিকানা। এলাকার মানুষজন দু’বেলা দু’মুঠো খেতে দিলে তবেই জুটতো খাবার। দীর্ঘ সময় ধরে দেহের বিভিন্ন স্থানে তার জড়িয়ে থাকায় রীতিমতো ক্ষতর সৃষ্টি হয়। তবে তাতেও নির্বিকার ছিলেন সেই ভবঘুরে। সারাদিন এলাকার এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত ঘুরে বেড়ানোই ছিল তাঁর কাজ। আর রাস্তায় কোনও লোহার তার দেখলেই তা তুলে নিয়ে জড়িয়ে ফেলতেন গলায়, হাতে বা পায়ে।ওই ব্যক্তির ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হতেই, এগিয়ে আসেন এলাকার কিছু সহৃদয় ব্যক্তি ও হাবড়ার পুলিশ প্রশাসন। তাঁদের উদ্যোগেই অবশেষে ‘শিকল’মুক্ত করে সুস্থ জীবনে ফেরানোর চেষ্টা শুরু হল ওই ব্যক্তিকে। এলাকার একটি পশুপ্রেমী সংগঠনের দুই সদস্য দীর্ঘ প্রায় সাত ঘণ্টার প্রচেষ্টায় ওই ভবঘুরেকে নবজীবন পল্লী এলাকা থেকে উদ্ধার করেন। তারপর তাঁর শরীর থেকে একটা করে তার খোলা হয়। যাতে তাঁর কোনওরকম আঘাত না লাগে, তাই অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে খোলা হয় তারগুলি। এরপর স্নান করিয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করানো হয় তাঁকে। পরানো হয় পরিষ্কার পোশাক। আপাতত তাঁকে রাখা হয়েছে হাবড়ার বাণিপুর হোমে।

অরিন্দম শীল নামে এক ব্যক্তি জানান, ওই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, তাঁর বাড়ি উত্তরপ্রদেশে। তিনি পুরোপুরিভাবে মানসিক ভারসাম্যহীন না হলেও হয়ত কোনও ট্রমার মধ্যে রয়েছেন বলেই দাবি অরিন্দমের। এই বিষয়ে অরিন্দম বলেন, ‘ওই ব্য়ক্তিকে উদ্ধার করা হয়েছে হাবড়া ২ নম্বর গেট থেকে। দীর্ঘ করেক সপ্তাহ ধরেই ওই ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছিল। অবশেষে প্রায় ৭ ঘণ্টার চেষ্টায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের সময় প্রায় ৮ থেকে ৯ কিলো তার ছিল ওই ব্যক্তির গায়ে।’

রাহুল মল্লিক চৌধুরী নামে অপর এক ব্যক্তি বলেন, ‘উদ্ধার তো আমরা করেছি। কিন্ত হাবড়া পলিশের প্রচুর সহযোগিতাও আমরা পেয়েছি। আইসি-র প্রচেষ্টায় রাত্রি ১টার সময় ওই ব্যক্তিকে হোমে পাঠান হয়।’ পশুপ্রেমী সংগঠনের সদস্যদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version